বিনোদন

হাসান মতিউর রহমানের আল্টিমেটাম

সংগীতাঙ্গনে কপিরাইট নিয়ে বিভিন্ন সময় জটিলতায় পড়তে দেখা গেছে গীতিকার, সুরকার ও শিল্পীদের। হরহামেশাই অনুমতি ছাড়া একজনের গান অন্যজন গাইছেন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে। আর এসব গান ইউটিউবে প্রকাশ করা হচ্ছে। এ নিয়ে এবার সোচ্চার হলেন শ্রোতাপ্রিয় ও কালজয়ী গানের লেখক, সুরস্রষ্টা হাসান মতিউর রহমান।

মামলার হুঁশিয়ারি দিয়ে হাসান মতিউর রহমান তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। শুরুতে তিনি লিখেন, ‘আমাদের সরলমনা শিল্পীদের সুযোগ নিয়ে কিছু কিছু চ্যানেল তাদেরকে দিয়ে লাইভ অনুষ্ঠানের নামে জনপ্রিয় গানগুলো করিয়ে তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করে দিব্বি ব্যবসা করে খাচ্ছে। এর নেপথ্যে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের কতিপয় অসৎ ব্যক্তিরা। এটা যে অন্যায় এবং অবৈধ তারা তা জেনেশুনেই করছে। ড্যাম কেয়ার ভাব দেখাচ্ছে। এদের লজ্জা বোধও নেই।’

গানের মূল শিল্পীদের অনুমতি নেন না বলে অভিযোগ করেছেন হাসান মতিউর রহমান। আল্টিমেটাম দিয়ে তিনি লিখেন, ‘এরা শিল্পীদের থেকেও অনুমতি নেয় না। যা হোক, আমি উকিল নোটিশ না পাঠিয়ে প্রথমে সবাইকে অনুরোধ করছি আমার লেখা ও সুর করা গান যারা আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া এ পর্যন্ত ইউটিউবসহ বিভিন্ন প্ল‌্যাটফর্মে তুলেছেন দয়া করে আগামী ৮ আগস্টের মধ্যে ডিলিট করে ফেলবেন। পরে মামলা হলে ঝামেলায় পড়বেন। ক্ষতিপূরণসহ আদায় করা হবে। আমি চাই না এ ব্যাপারে মামলা মোকদ্দমা হোক। আপনি এবং আমি আদালতে দৌড়াদৌড়ি করি। এই বাটপারি বেশিদিন চলতে পারে না, চলতে দেওয়া হবে না। কেউ যদি ধৃষ্টতা দেখান, তাহলে  উপযুক্ত জবাব পাবেন। একবার যদি আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করি তাহলে হাজারবার পায়ে ধরলেও কিন্তু রেহাই পাওয়া যাবে না। আইন কিন্তু কঠিন।’

সংগীতশিল্পীদের অনুরোধ করে তিনি লিখেন, ‘গান গাওয়ার আগে জেনে নিন এই গান তারা অন্য কোথাও বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে কিনা, যদি করে আমার গান আমার অনুমতি না নিয়ে আর গাইবেন না। গাইলে আমি আপনার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো। আরেকটি কথা ভালো করে না জেনে একজনের গান আরেকজনের নামে চালিয়ে দেওয়াটিও গুরুতর অন্যায়। এ অধিকার আপনাদের নেই। নিশ্চিত না হলে গাইবেন না। ভুল বার্তা গেলে বিভ্রান্ত হতে হয়। গীতিকবিরা এখন আর অসহায় প্রাণী নয়। অনেক শক্তিশালী। মিডিয়া থেকে সকল অনাচার দূর করতেই হবে।’

এ বিষয়ে হাসান মতিউর রহমানের সঙ্গে কথা বলেন রাইজিংবিডির এই প্রতিবেদক। নন্দিত এই শিল্পী বলেন, ‘শিল্পীদের প্রতি আমাদের রাগ নেই। শিল্পীদের নামে মাত্র পারিশ্রমিক দিয়ে জনপ্রিয় গানগুলো গাওয়ানো হচ্ছে। আর এসব গান বিভিন্ন কোম্পানি তাদের ফেসবুক ও ইউটিউবে আপলোড করে থাকে। তারা সুরকার গীতিকারদের অনুমতিও নেয়ার প্রয়োজন মনে করে না। এরই মধ্যে কয়েকটি কোম্পানিকে বলেছি। আমরা খুব শিগগির একটা কমিটি গঠন করব। সমাধান না হলে আমরা আইনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হব।’

কালজয়ী গানের লেখক ও সুরস্রষ্টা হাসান মতিউর রহমানের উল্লেখযোগ‌্য গান হলো—‘যদি রাত পোহালে শোনা যেতো- বঙ্গবন্ধু মরে নাই’, ‘আমি বন্দি কারাগারে’, ‘আমার সোনা বন্ধুরে’, ‘আল্লায় করবে তোমার বিচার’, ‘কান্দিসনারে বিন্দিয়া’, ‘আমি কেমন করে পত্র লিখিরে বন্ধু’ প্রভৃতি।