বিনোদন

পিয়াসা, মৌ, পরীমনি, রাজের পর কে?    

গত ১ আগস্ট গুলশানের বারিধারায় মডেল ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার বাসায় অভিযান পরিচালনা করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। রাত ১২টার পরপর তাকে বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাসার ভেতর তল্লাশি চালিয়ে মাদকদ্রব্য জব্দ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। একই রাতে মডেল মরিয়ম আক্তার মৌয়ের রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের বাসায় অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ। তার বাসা থেকেও বিপুল পরিমাণ মদ উদ্ধার করা হয়। পরে রাত ১টার দিকে মৌকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

২ আগস্ট শুনানি শেষে ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌয়ের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। তাদের চলমান রিমান্ড থেকে বেরিয়ে আসছে নানা কেলেঙ্কারির তথ্য। সেই সূত্র ধরেই পুলিশ এই চক্রের জিসান ও মিশুকে গ্রেপ্তার করে। জানা গেছে, এই চক্রটি রাজধানীতে অভিজাত এলাকায় ডিজে পার্টির আসর বসায়। আসরে যোগ দেওয়া ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সুযোগ বুঝে ব্ল্যাকমেইল করে। এই প্রতারক ও মাদক চক্রের সন্ধানে উঠে আসে চিত্রনায়িকা পরীমনির নামও।

তারপরই ৪ আগস্ট বিকালে রাজধানীর বনানীতে অবস্থিত পরীমনির বাসায় টানা ৩ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার কর র্যাব। এ সময় র্যাব জানায়, সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই পরীমনির বাসায় অভিযান চালানো হয়। তার বাসায় অবৈধ মদ এবং বিপুল পরিমাণ মাদক পাওয়া যায়। মিনি বারের সন্ধানও মিলেছে তার বাসায়। এসব অবৈধ মাদক রাখার দায়ে পরীমনিকে প্রথমে আটক, পরে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পরীমনিকে গ্রেপ্তারের কয়েক ঘণ্টা পরেই রাজ মাল্টিমিডিয়ার স্বত্বাধিকারী ও চলচ্চিত্রাঙ্গনের পরিচিত মুখ নজরুল ইসলাম রাজকে মাদকসহ আটক করে র্যাব। রাত ১০টার পর গুলশানের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বাসা থেকে উদ্ধার হয় বিদেশি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মদ, সিসা ও সিসা খাওয়ার সরঞ্জামাদি। এ সময় রাজ তার এক সহযোগীকে নিয়ে বাসায় অবস্থান করছিলেন। নজরুল ইসলামও পরীমনির সঙ্গে ব্ল্যাকমেইলসহ নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন বলে র্যাবের কাছে প্রাথমিক তথ্য রয়েছে বলে জানা গেছে।

ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা, মরিয়ম আক্তার মৌ, পরীমনির পর নজরুল ইসলাম রাজ। ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌয়ের যোগসূত্র রয়েছে। আবার পরীমনি-নজরুল রাজের যোগসূত্র রয়েছে বলে সংবাদমাধ্যম থেকে জানা গেছে। পিয়াসা-মৌ গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ন কমিশনার হারুণ অর রশিদ বলেছেন, ‘এরা সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্য। তাদের টার্গেট হলো কোটিপতি ব্যবসায়ী বা ব্যবসায়ীদের সন্তানেরা। বিভিন্ন ক্লাব বা বারে গিয়ে তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে ব্ল্যাকমেইল করতো তারা। একই সঙ্গে তারা বাসায় নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্যের আসর বসাতো। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে সহযোগীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।’

স্বাভাবিকভাবেই ধারণা করা হচ্ছে, এই চক্রের এখানেই শেষ নয়। গভীরে রয়েছে আরো অনেকেই। ফলে আরো অভিযান পরিচালিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে প্রশ্ন হচ্ছে—পিয়াসা, মৌ, পরীমনি, রাজের পর কে?