বিনোদন

‘ডোন্ট লাভ মি বিচ’ লিখে পরীমনি কী বার্তা দিলেন

মেঘমেদুর সকাল। তারপরও চারপাশটা উজ্জ্বল। সেই আলোয় কারাফটকের দুয়ার ঠেলে বেরিয়ে এলেন তিনি। উঠে বসলেন তার জন্য অপেক্ষমাণ গাড়িতে। কিন্তু গাড়ি তাকে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারলো না খুব বেশি দূর। কেননা শুধু ওই গাড়ি নয়, তার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন আরো অনেকেই। এই তালিকায় সাংবাদিক, ভক্ত, শুভাকাঙ্ক্ষী তো বটেই; এ ক’দিনে নাম না-জানা, অচেনা আরো অযুত-নিযুত মানুষের কাছে তার নাম পৌঁছে গেছে। এমনকি যারা ঢাকার সিনেমা গত ২০ বছরেও দেখেননি তারাও এখন জানেন পরীমনির নাম। ফলে সবারই প্রায় সমবেত প্রশ্ন ছিল- কবে জামিন পাবেন পরীমনি?

সেই প্রশ্নের অবসান ঘটেছে গতকাল (৩১ আগস্ট)। আজ সকালে কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের সময়ের সবচেয়ে আলোচিতে এই চিত্রনায়িকা। স্বাভাবিকভাবেই মুক্তির পর পরীমনির গাড়ি ঘিরে ধরেছিল কারাফটকের বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিক। উঁহু, পরীমনি কাউকেই হতাশ করেননি। সত্যি বলতে, প্রায় এক মাস বন্দিজীবনের পর মুক্ত আকাশের নিচে হাস্যোজ্জ্বল সেই চিরচেনা পরীমনিকেই দেখা গেছে। এ সময় উপস্থিত সবার উদ্দেশ্যে হাত নেড়ে আনন্দ বিনিময়ও করেছেন তিনি। আর ঠিক তখনই পরীমনির ডান হাতের তালুতে মেহেদি রঙে লেখা একটি বাক্য নজর কেড়েছে সবার। সেখানে লেখা: ‘Dont love me bitch’

পরীমনি এমন বার্তা কেন দিলেন তার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। তবে এই ছবি দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে অন্তর্জালে। এ নিয়েই এখন চলছে আলোচনা!

মার্কিন জ্যাজ শিল্পী রাসের গানের ২০০৮ সালে প্রকাশিত ‘লাভ স্টোরিজ’ অ্যালবামের ইন্সট্রুমেন্টাল গান ‘বিচ, ইউ ডোন্ট লাভ মি’। এ ছাড়া মার্কিন র‌্যাপার বিগক্লিটের ‘ইউ ডোন্ট লাভ মি’ গানের প্রথম বাক্যেই রয়েছে ‘ইউ ডোন্ট লাভ মি বিচ’ কথাটি। অর্থাৎ পরীমনির আগেও এই বাক্য একাধিকবার গানে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু সেই প্রেক্ষাপট ভিন্ন।

নেটিজেনরা বিভিন্নভাবে এই বাক্যের ব্যবচ্ছেদ করছেন। কেউ এর মধ্যে দেখছেন পরীমনির দৃঢ়চেতা মনোভাব। কেউ দেখছেন সাহস। অনেকে এই ছবি দেখার পর দুই তালুতে শব্দ তুলে বলেই ফেলেছেন: ‘দ্যাখ বেটা সুপার স্টার কাকে বলে?’ তবে এই বাক্যটি ‘ডোন্ট হার্ট মি বিচ’ও হতে পারে। কেননা পরীমনি বাক্যে হার্টের চিহ্ন এঁকেছেন। সেখানে Love লেখা নেই।   

তবে পরীমনি এই বাক্যে যে মনোভাবই প্রকাশ করুক না কেন, Bitch নেতিবাচক অর্থে ব্যবহৃত শব্দ। বাজে মেয়ে মানুষ অর্থেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়। আবার সম্পর্ক অন্তরঙ্গ, মধুর হলে এই শব্দটি আদুরে অন্য অর্থেও ব্যবহৃত হতে পারে। তবে মোটা দাগে, ইংরেজি এই শব্দটি সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দের উদাহরণ। বাংলা একাডেমি প্রকাশিত অভিধানে এর অর্থ: স্ত্রীজাতীয় কুকুর; দুশ্চরিত্রা বা যৌনাবেদনময়ী রমণী।

এখন প্রশ্ন হলো পরীমনি কেন নিজেকে এভাবে ভালোবাসতে নিষেধ করছেন? নাকি তিনি সমাজের সেইসব মানুষদের ইঙ্গিত করছেন যারা তাকে ‘দুশ্চরিত্রা’ বানানোর চেষ্টা করেছে। বিপুল মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে পরীমনি এই গালি তাদেরকেই ফিরিয়ে দিলেন না তো?

প্রশ্নটা আপাতত তোলা রইল। আশাকরি, পরীমনি নিজেই খুলে দেবেন এই রহস্যের দ্বার তার সবটুকু প্রজ্ঞা দিয়ে।