বিনোদন

চ্যালেঞ্জ নিতে চাই: বাঁধন

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে বলিউডে যাত্রা শুরু করেছেন গুণী অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। বিশাল ভরদ্বাজের হাত ধরে বলিউডে অভিষেক হচ্ছে তার- এ কথা পুরনো হলেও, নতুন তথ্য এই- গত ১১ অক্টোবর থেকে ‘খুফিয়া’ সিনেমার শুটিং শুরু করেছেন তিনি। এ কারণে বাঁধন এখন দিল্লিতে অবস্থান করছেন। বলিউড যাত্রার নানা বিষয় নিয়ে দিল্লি থেকে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেছেন বাঁধন। আলাপচারিতায় ছিলেন আমিনুল ইসলাম শান্ত।    

রাইজিংবিডি: ‘খুফিয়া’ সিনেমায় আপনার সহশিল্পী কে?  বাঁধন: টাবু, আলী ফজল, আশীস বিদ্যার্থী, ওয়ামিকা গাব্বি। আসলে এই সিনেমার গল্পে টাবুর সঙ্গেই আমার সব দৃশ্য। সুতরাং তার সঙ্গেই আমার সব কাজ। কারণ সিনেমার গল্পই এ রকম। 

রাইজিংবিডি: টাবুর সঙ্গে শুটিংয়ের নিশ্চয়ই নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে।  বাঁধন: টাবু অভিনয়শিল্পী হিসেবে দুর্দান্ত- এটা সবাই জানেন। খুব পেশাদার তিনি। একই সঙ্গে সহযোগিতাপরায়ণ অভিনেত্রী। তার ব্যক্তিত্ব আমাকে মুগ্ধ করেছে! আমি খুব খুশি যে, তার মতো একজন অভিনেত্রীর সঙ্গে পর্দা শেয়ার করছি। একইভাবে আমার পরিচালক বিশাল ভরদ্বাজও খুব পেশাদার মানুষ।    রাইজিংবিডি: আপনাকে এই সিনেমায় কোন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে হচ্ছে?  বাঁধন: গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে অমর ভূষণের বিখ্যাত উপন্যাস ‘এস্কেপ টু নো হোয়্যার’। এই উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত হচ্ছে সিনেমাটি। এতে বাংলাদেশি একজন মেয়ের চরিত্রে আমি অভিনয় করছি। 

রাইজিংবিডি: চরিত্রটির জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেছেন কীভাবে? সময় কতটা পেয়েছিলেন? বাঁধন: সিনেমাটিতে কাজের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে কথা হচ্ছিল। অডিশন দিয়েছি। প্রস্তুতি নিয়েছি। এ জন্য অন্য কাজ হাতে নেইনি। গত তিন বছর ধরে খুব কম কাজ করছি। একটি কাজের সঙ্গে যাতে আরেকটি কাজ মিলে না যায়, সে বিষয়টি খুব সচেতনভাবেই আমার মাথায় থাকে। গত তিন বছরে এই জায়গাটি আমি তৈরি করেছি।

রাইজিংবিডি: বাড়তি কোনো প্রস্তুতি নিতে হয়েছে কিনা? বাঁধন: এই চরিত্রের সঙ্গে অন্য চরিত্র মিলবে না। চরিত্রটি ঠিকঠাক মতো ফুটিয়ে তোলার জন্য পরিচালক যেভাবে বলেছেন সেভাবে প্রস্তুতি নেওয়ার চেষ্টা করেছি। শুটিংয়ের সময় পরিচালক আরো দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন, দেবেন। মূলত এই চরিত্রের জন্য নিজেকে গড়ে তুলতেই অন্য কাজগুলো করিনি।

রাইজিংবিডি: বিশাল ভরদ্বাজকে কেমন লাগছে?   বাঁধন: তার কাজ আগে থেকেই ভীষণ পছন্দ! বলিউডের সব ধরণের কাজই আমার পছন্দ। কিন্তু তার কাজ আলাদা- এটা সবাই জানে। ভালো কাজ করেন এমন মানুষের কাছে এলে মানুষটাকে খারাপ লাগে- আমার ক্ষেত্রে এমন হয়েছে। ধরুন, আপনার কারো অভিনয়, নির্মাণ ভালো লাগে। কিন্তু তার কাছে যাওয়ার পর তার প্রতি ভালো লাগা বা ওই মুগ্ধতা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু বিশাল ভরদ্বাজ অন্যরকম। মানুষ হিসেবে এত ভালো, এত সিম্পল যে, বলে বুঝাতে পারব না। তাকে আমার খুব ভালো লেগেছে। তার স্ত্রী, ছেলের ব্যবহারও অমায়িক। আমি সত্যি খুব লাকি যে তার মতো একজন পরিচালকের সঙ্গে কাজের সুযোগ পেয়েছি।

রাইজিংবিডি: ঢাকা থেকে কলকাতা, এবার বলিউডে কাজ করছেন। এই তিনটি ইন্ডাস্ট্রির কাজের পরিবেশ নিশ্চয়ই এক নয়। অভিজ্ঞতা কী বলে?  বাঁধন: আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের কাজের সঙ্গে পৃথিবীর অন্য কোনো কাজের তুলনা করতে পারব না। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ আমার জীবনের অদ্ভুত একটা জার্নি এবং  সুন্দর একটা প্রসেস। এই জার্নিটার জন্য আমার জীবনটাই বদলে গেছে। ফলে সাদের সঙ্গে কাউকে তুলনা করতে পারব না। তার কাজের প্রসেস একদম আলাদা। হইচইয়ের জন্য সৃজিত মুখার্জির সঙ্গে কাজ করেছি, কলকাতা-ঢাকার কাজের যে প্রসেস- দুটো প্রায় একই রকম। কিন্তু অবশ্যই সৃজিত মুখার্জির আলাদা নির্মাণ শৈলী রয়েছে। সুতরাং তার কাজের আলাদা একটা ধরন রয়েছে। সৃজিত আমাকে ভীষণরকম হেল্প করেছেন। আর বলিউডে পুরো টিম ষোলআনা পেশাদার। সবকিছু ওয়েল ম্যানেজড, ওয়েল অর্গানাইজড। এখানে কাজের পরিবেশটাই আলাদা। এ বিষয়টি আমার কাছে ভালো লেগেছে। 

রাইজিংবিডি: এ সিনেমায় অভিনয় করার পেছনে কোন বিষয়টি আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে?  বাঁধন: প্রথমত বিশাল ভরদ্বাজ; আগেই বলেছি- যার কাজ আমার ভীষণ পছন্দ! কারণ আমাদের কাজের ক্ষেত্রে খুব জরুরি হচ্ছেন একজন পরিচালক। যার সঙ্গে আমি কাজ করব, তাকে আমার বিশ্বাস করতে হবে। বিশাল ভরদ্বাজকে আগে থেকে ব্যক্তিগতভাবে চিনতাম না। তাকে চিনি মূলত তার কাজ দিয়ে। তারপর হচ্ছে আমার চরিত্র। যা আমার পছন্দ হয়েছে। এরপর আমার সহশিল্পী। আর সেই সহশিল্পী হলেন টাবু। 

আমি এখন আমার জীবনের এমন একটা স্টেজে রয়েছি, যেখানে নতুন কিছু করতে চাই, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে চাই, নতুন নতুন চরিত্রে অভিনয় করতে চাই, নতুন নতুন মানুষের সঙ্গে কাজ করতে চাই। সুতরাং এখান থেকেও মনে হয়েছে এ কাজটি আমার জীবনে নতুন অভিজ্ঞতা এনে দেবে। যে কারণে কাজটি করেছি। বড় একটি টিমের সঙ্গে কাজ করা অনেক আনন্দের এবং সৌভাগ্যের।  

রাইজিংবিডি: সিনেমাটি নিয়ে কতটা আশাবাদী? বাঁধন: সিনেমাটি নেটফ্লিক্সে মুক্তি পাবে। যাদের ভালো লাগবে তারা সিনেমাটি দেখবেন, যাদের ভালো লাগবে না তারা দেখবেন না। আমি মনে করি না, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ সবাই দেখবেন, সবার ভালো লাগবে। সবার একই রকম ভালো লাগবে এমনটা আমি প্রত্যাশা করি না। কারণ আমার সবাইকে একই রকম ভালো লাগে না। সুতরাং আরেকজনের উপর এটা আমি চাপিয়ে দিতে পারি না। আমার মনে হয়, এই প্র্যাকটিস যত দ্রুত শুরু হবে ততই ভালো হবে। কারণ আমরা খুবই কুৎসিত একটা চর্চার ভেতরে ঢুকে গেছি, যেটা ঠিক না।