বিনোদন

কালজয়ী সংগীত পরিচালক আলম খান মারা গেছেন

সংগীত পরিচালক ও কালজয়ী গানের গীতিকার, সুরকার আলম খান মারা গেছেন।

শুক্রবার (৮ জুলাই) সকাল ১১টা ৩২ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। দীর্ঘদিন ধরে ক্যানসারসহ নানা রোগে ভুগছিলেন এই সংগীত ব্যক্তিত্ব। আলম খানের ছেলে আরমান খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আরমান খান লিখেছেন: ‘আব্বা চলে গেলেন না ফেরার দেশে! ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন!’

আজ বাদ আসর এফডিসিতে আলম খানের জানাজা হবে। আগামীকাল শ্রীমঙ্গলে হবে দাফন। মৃত্যুকালে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন তিনি। তার আরেক পরিচয় তিনি পপসম্রাট আজম খানের বড় ভাই।

‘ওরে ও নীল দরিয়া’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘আমি একদিন তোমায় না দেখিলে’, ‘চাঁদের সাথে দেব না’, ‘কী জাদু করিলা’সহ অসংখ্যা শ্রোতাপ্রিয় গানের এই সুরকারের জন্ম ১৯৪৪ সালে সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতি গ্রামে। বাবা আফতাব উদ্দিন খান ছিলেন সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্টের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার ও মা জোবেদা খানম গৃহিণী। আলম খান ১৯৬৩ সালে সংগীত পরিচালক রবিন ঘোষের সহকারী হিসেবে ‘তালাশ’ চলচ্চিত্রে ক্যারিয়ার শুরু করেন। ১৯৭০ সালে দেশের প্রথম চলচ্চিত্রকার আব্দুল জব্বার খান পরিচালিত ‘কাচ কাটা হীরে’ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এককভাবে সংগীত পরিচালনা শুরু করেন তিনি। তার সুর করা প্রথম শ্রোতাপ্রিয় গান ‘স্লোগান’ সিনেমার ‘তবলার তেড়ে কেটে তাক’।

১৯৭৮ সালে মুক্তি পায় ‘সারেং বৌ’। এ সিনেমায় ব্যবহার করা হয় ‘ওরে ও নীল দরিয়া’ গানটি। আবদুল জব্বারের গাওয়া গানটি আলম খানের অনন্য সৃষ্টি। ১৯৮২ সালে ‘রজনীগন্ধা’ চলচ্চিত্রে সাবিনা ইয়াসমীনের গাওয়া ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রে ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’ ইত্যাদি গানের সুর আজও সংগীতপ্রিয় মানুষের মনোযোগ কাড়ে। ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রের জন্য আলম খান অর্জন করেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।

১৯৮৫ সালে আলম খানের সুর করা ‘তিন কন্যা’ চলচ্চিত্রের ‘তিন কন্যা এক ছবি’ গান দিয়ে প্লেব্যাক শুরু করেন কলকাতার নামকরা সংগীতশিল্পী কুমার শানু। ‘নাগ পূর্ণিমা’ চলচ্চিত্রে এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া রক ধাঁচের ‘তুমি যেখানে আমি সেখানে’, ‘ভেজা চোখ’ চলচ্চিত্রে একই শিল্পীর গাওয়া ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’ গানগুলো যতদিন থাকবে সমান প্রশংসায় উচ্চারিত হবে কালজয়ী এই সুরকারের নাম।