বিনোদন

শাকিব-বুবলীর সম্পর্কের পোস্টমর্টেম

দেশের শীর্ষ নায়ক শাকিব খান। তার বিপরীতে অভিনয় করে অনেকেই দ্রুত তারকা বনে গিয়েছেন। ২০১৬ সালে এ নায়কের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হন সংবাদপাঠিকা শবনম বুবলী। এরপর দেশ সেরা এই চিত্রনায়কের সঙ্গে একাধারে প্রায় ১ ডজন সিনেমায় অভিনয় করে রাতারাতি নায়িকা হয়ে ওঠেন বুবলী। দুজনের প্রেম থেকে পরিণয়, অতঃপর সন্তানের জনক-জননী হন। কিন্তু তাদের সর্ম্পক নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ২০২০ সালেই। সে সময় গুঞ্জন ওঠে তাদের সর্ম্পক ভালো নেই। ভেঙেছে তাদের জুটিও। ২০২২ সালে এসেও এমন গুঞ্জন ভাসছে চিত্রপুরীতে। 

সর্ম্পক সূক্ষ্ম ও জটিলতায় পূরিপূর্ণ। এটি একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। তারপরও সেলিব্রেটিদের ব্যক্তিগত বিষয় প্রকাশ হয়ে পড়ে। কারণ ভক্তদের কৌতূহল। তাদের সব বিষয় নিয়ে ভক্তদের আগ্রহের শেষ নেই। যে কারণেই তাদের প্রেম-বিয়েসহ ব্যক্তিগত বিষয়গুলোও থাকে আতশ কাচের নিচে।  

শাকিব খান-অপু বিশ্বাস দম্পতির ঘরে আব্রাম খান জয় আসার আগ মুহূর্তে মাতৃত্বকালীন অবকাশে চলে যান নায়িকা অপু বিশ্বাস। শাকিব খান ঠিক এই সময় বুবলীকে নিয়ে নতুন সিনেমায় জুটি বাঁধেন। এরপরই মূলত তাদের সর্ম্পকের সূত্রপাত। ২০২০ সালে এসে শোনা যাচ্ছিলো তাদের সর্ম্পকে চির ধরেছে। কিন্তু এর মধ্যে যমুনার জল গড়িয়েছে অনেক দূর। শাকিব-অপুর বিচ্ছেদ, শাকিব-বুবলীর বিয়েসহ সন্তান জন্মসহ অনেকে ঘটনা। 

২০১৯ সালে শাকিব খান বুবলীকে বাদ দিয়ে অন্য নায়িকার সঙ্গে জুটি বেঁধে সিনেমায় অভিনয় করেছেন। অন্যদিকে একই বছরের শেষের দিকে বুবলীও শাকিব খানের বলয় ভেঙে প্রথমবার নিরবের বিপরীতে ‘ক্যাসিনো’ সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হন। সেসময়ই চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট অনেকেই বলছিলেন ‘ডালমে কুচ কালা হায়’। মূলত সর্ম্পক নিয়ে গুঞ্জনের সূত্রপাত সেই সময়ই থেকে। বুবলীও তখন  সংবাদমাধ্যমে বলেছিলেন তিনি এখন থেকে শাকিবের বলয় থেকে বেরিয়ে কাজ করবেন। সেই কথা অনুযায়ী সাইমন সাদিক, রোশান, আদর আজাদের বিপরীতে কাজ করেছেন বুবলী।

স্মৃতি হাতড়ে দেখা যায়- শাকিব খানের এক সময়ের ঘনিষ্ঠজন শাপলা মিডিয়ার চেয়ারম্যান সেলিম খান। শাকিব-বুবলীকে নিয়ে একটানা কয়েকটি সিনেমা প্রযোজনা করেছেন এই প্রযোজক। শাকিব খানকে পুরো চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রি যখন বয়কট করে তখন তার পাশে ছিলেন সেলিম খান ও প্রযোজক ইকবাল। ঘটনার পরিক্রমায় তারা দুজনই এখন তার বন্ধু নেই। বিভিন্ন সময় সেলিম খান শাকিবকে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করেছেন। আবার শাকিব খানও কম কটাক্ষ করেননি সেলিম খানকে নিয়ে। এদিকে প্রযোজক ইকবালের সঙ্গেও সর্ম্পকের বৈরিতা তৈরি হয়। ঠিক সেই সময় শাপলা মিডিয়ার ব্যানারে সেলিম খানের প্রযোজনায় ‘চোখ’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন নিরব-বুবলী।

সিনেমাটির অধিকাংশ শুটিং করা হয় সেলিম খানের বাড়িতে। তখনও শাকিব-সেলিমের বাকযুদ্ধ চলছিলো। এদিকে প্রযোজক ইকবালের ‘রিভেঞ্জ’, ‘বিট্রে’ সিনেমায় রোশানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন বুবলী। স্বাভাবিকভাবে শাকিব খান কখনই চাইবেন না তার সঙ্গে যাদের সর্ম্পকের বৈরিতা তাদের সিনেমায় নিজের স্ত্রী অভিনয় করুক। কিন্তু বুবলী সেসময় একটার পর একটা তাদের সিনেমায় কাজ করেছেন। সেসময় তাদের সর্ম্পক কেমন ছিলো তা শাকিব-বুবলীই বলতে পারবেন। তবে তাদের একসঙ্গে খুব একটা দেখা যায়নি। এর আগে সিনেমার বাইরে তারা টেলিভিশন অনুষ্ঠানগুলোতে যেতেন। কিন্তু দীর্ঘদিন হলো তাদের একসঙ্গে টেলিভিশনের অনুষ্ঠানেও দেখা যাচ্ছে না। 

গত বছর ১৯ ফেব্রুয়ারি ‘লিডার-আমিই বাংলাদেশ’ সিনেমার মাধ্যমে শাকিব খানের সঙ্গে ১১তম সিনেমায় জুটি বদ্ধ হন বুবলী। সেদিন অনুষ্ঠানে তাদের দূরত্ব চোখে পড়ে সংবাদকর্মীদের। সর্বশেষ এই সিনেমার রোমান্টিক গানের শুটিং করা হয় কড়া নিরাপত্তায়। রোমান্টিক গানের শুটিং করলেও রোমান্সের মুডে ছিলেন না শাকিব-বুবলী। দু’জনে হাত ধরাধরি করতেও রাজি হননি। নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ শেষ করেছেন। দৃশ্যধারণ শেষ হতে না হতেই দুজনেই আলাদা দুই জায়গায় গিয়ে বসেন। পরিচালকের ডাক পড়লে আবার তারা ক্যামেরার সামনে এসে দাঁড়াতেন। 

এদিকে একসেঙ্গ শাকিব খান-বুবলী ও তাদের সন্তান শেহজাদ খান বীরের ছবি দেখা যায়নি। শাকিব খানের সঙ্গে আলাদা ছবি দেখা গিয়েছে। এছাড়া ‘লিডার-আমিই বাংলাদেশ’ সিনেমার শুটিংয়ের বাইরে শাকিব-বুবলীর সম্প্রতি কোন ছবি দেখা যায়নি। এর মধ্যেই তাদের সর্ম্পক নিয়ে নানান প্রশ্নের জন্ম দেয়। এমন সময় শাকিব খানের ভাষ্য, ‘মানুষ কী দেখে বোঝে না, আমাদের দুজনের মধ্যে এখন কোনো সম্পর্ক নেই! তাদের তো এমনিতেই বোঝা উচিত এই দূরত্বের কথা। ৯ মাস আগে সে (বুবলি) আমেরিকা থেকে আসার পর তার সঙ্গে কোনো প্রকার যোগাযোগ নেই আমার। এর মানেটা কী জনে জনে সবাইকে গিয়ে বুঝিয়ে আসতে হবে?’ 

অন্যদিকে বুবলি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, তিনি বিয়ে করেছেন সংসার করার জন্য।