বিনোদন

‘আমি আর দিব্য মানুষের মনে গেঁথে যাব তা প্রত্যাশা করিনি’

ঈদুল ফিতরে মুক্তি পেয়েছে ওয়েব সিরিজ ‘মহানগর টু’। আশফাক নিপুণ পরিচালিত সিরিজটি এখন বহুল চর্চিত। এতে মিতু চরিত্রে অভিনয় করে নজর কেড়েছেন অভিনেত্রী তানজিকা আমিন। রাইজিংবিডির সিনিয়র সহ-সম্পাদক আমিনুল ইসলাম শান্তর সঙ্গে তানজিকা আমিনের কথোপকথন তুলে ধরা হলো।

রাইজিংবিডি: আপনার এবারের ঈদটা একটু বেশি রঙিন… তানজিকা আমিন: শুধু আমার নয়, মোশাররফ ভাই, আশফাক নিপুণ, দিব্যসহ ‘মহানগর টু’ সিরিজের সবার ঈদই একটু বেশি রঙিন।

রাইজিংবিডি: ‘মহানগর টু’-এর সাফল্য কীভাবে উপভোগ করছেন? তানজিকা আমিন: প্রশংসা কার না ভালো, আবার প্রশংসা চাপের মতো! এখন আমি ভয়ও পাচ্ছি। কারণ পরের কাজগুলো যদি ভালো না হয়। তাহলে এই কাজের কথাও মানুষ ভুলে যাবে। সুতরাং আনন্দের চেয়ে প্রশংসার চাপ অনেক বেশি।

রাইজিংবিডি: মুক্তির আগে কি ভেবেছিলেন আপনার চরিত্র এতটা জনপ্রিয়তা পাবে? তানজিকা আমিন: কাজ করার সময় কিছু কাজ করতে করতে বোঝা যায়, এটি ভালো কিছু হতে পারে। কোনো কোনো সময় এ ভাবনা বাস্তবে ধরা দেয়, আবার কখনো হয় না। ‘মহানগর’ সিরিজের প্রথম সিজন সুনাম কুড়িয়েছে। ‘মহানগর টু’-এর গল্পের প্লট দেখার পর থেকে ডাবিং পর্যন্ত মোটামুটি মনে হয়েছে এটি সাড়া ফেলবে। মোশাররফ ভাই অবশ্যই একটা জায়গা নিয়ে নেবে। তা ছাড়া বাবু ভাইসহ অনেক লিজেন্ডরা রয়েছেন। ওনাদের সঙ্গে আমি আর দিব্য মানুষের মনে এতটা গেঁথে যাব তা প্রত্যাশা ছিল না। জানতাম, কাজটি ভালো হয়েছে। কিন্তু মানুষের মুখে মুখে এতটা চর্চা হবে তা ভাবিনি।

রাইজিংবিডি: এ সিরিজে কীভাবে যুক্ত হলেন? তানজিকা আমিন: হুট করেই এ সিরিজে যুক্ত হয়েছি। শুটিংয়ের ৭-১০ দিন আগে আশফাক নিপুণ ভাইয়ের অফিস থেকে ফোন পাই। তারপর লুক টেস্ট হয় এবং উত্তরে যাই। এরপর শুটিংয়ে চলে যাই। এটা নিয়ে আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি; সবই হুটহাট হয়েছে।

রাইজিংবিডি: তাহলে চরিত্রের জন্য সেভাবে প্রস্তুতির সময় পাননি… তানজিকা আমিন: না, একদমই পাইনি। আমার চরিত্রের জন্য একবারেই কোনো পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। এতে করে একদিক থেকে ভালো হয়েছে। আসলে ইমোশনের প্রস্তুতি নেওয়া যায় না; প্রস্তুতি নিতে হয় থিয়েটারে। অথবা নাচ-গানের জন্য। ‘মহানগর টু’-তে আমার ইমোশনাল একটি চরিত্র, ইমোশন দিয়েই উত্তরে গিয়েছি। এ ধরনের চরিত্রের ডেলিভারি অন স্পটে হয়; আলাদা প্রস্তুতির কিছু নাই।

রাইজিংবিডি: আপনার এই চরিত্র আপনার ক্যারিয়ারে কতটা বাঁকবদল আনতে পারে বলে মনে করেন? তানজিকা আমিন: আমার জায়গা থেকে বিষয়টি এখনো বুঝে উঠতে পারছি না। মানুষ সিরিজটি দেখে আমার চরিত্রের প্রশংসা করছেন। পরের কাজগুলো আমার বুঝেশুনে গুছিয়ে করতে হবে। আসলে এটা আমি বলতে পারব না, দর্শক বলতে পারবেন। দর্শকদের চাহিদা থাকলে তারা আমাকে পর্দায় দেখতে পাবেন। আমার মনে হয়, এটা দর্শক, টিভি চ্যানেল, পরিচালকরা বলতে পারবেন। আমার কাজ তো অভিনয়টা করে যাওয়া।

রাইজিংবিডি: ‘মহানগর টু’-তে আপনার চরিত্র আলাদাভাবে খ্যাতি এনে দিয়েছে। পরবর্তীতে কাজ করার ক্ষেত্রে কোন বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিতে চান— তানজিকা আমিন: আমাদের এখানে গৎবাঁধা নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করে আমরা অভ্যস্ত। আমি চরিত্রের গুরত্ব বিবেচনায় নিতে চাই। মহানগরে আমি আপা। আমার কোনো নায়ক নেই। আমার নায়ক আমার ভাই। যে চরিত্রেই অভিনয় করি না কেন তার গুরত্ব আগে বিশ্লেষণ করব। আমার মনে হয়, চরিত্রে বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি সব শিল্পীই অনুসরণ করে থাকেন।

রাইজিংবিডি: দিব্যর (মাসুম) সঙ্গে আপনার বেশ কিছু ইমোশনাল মুহূর্ত আছে। এসব দৃশ্যের শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানতে চাই— তানজিকা আমিন: দিব্য-সৌম্যর বেড়ে ওঠা আমরা দেখেছি। কারণ ওরা খুশি আপা-বৃন্দাবনদার ছেলে। সেটে যখন দিব্যকে পাই, তখন থেকেই আমি খুব খুশি ছিলাম। ওকে পেয়েই বলেছিলাম, ও দিব্য তুই আমার সঙ্গে কাজ করবি। আগে থেকেই দিব্য আমার আদরের। তার মধ্যে মহানগরে ও আমার ভাই। আমি আর দিব্য শীতের রাতে অনেক কষ্ট করে শুটিং করেছি। বিকাল ৫টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত আমাদের শুটিং শিডিউল ছিল। প্রচন্ড ঠান্ডার মধ্যে আমরা কাজ করেছি। আমরা যখন কোনো চরিত্রে অভিনয় করি, তখন পর্যবেক্ষণ করার চেষ্টা করি। যেমন— কাজের বুয়ার চরিত্র হলে আমি আমার বাসার বুয়াকে ভাবার চেষ্টা করি। কিন্তু মহানগরের চরিত্রটি রূপায়ন করা আমার জন্য ডিফিকাল্ট ছিল। কারণ আমার নিজের কোনো ভাই-বোন নেই, আমি একা। পরিচালকের দিক নির্দেশনা, সবকিছু মিলিয়ে কাজটি হয়ে গেছে।

রাইজিংবিডি: আপনার বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে জানতে চাই। তানজিকা আমিন: অনেক বছর ধরেই টিভিতে কাজ করছি। বর্তমানে কয়েকটি টিভি সিরিজের কাজ করছি।