এবার ঈদের অন্যতম সিনেমা ‘শত্রু’। বাপ্পি-মিতু অভিনীত সিনেমাটি ২৪টি হল পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। যদিও সিনেমাটি আশাপ্রদ ফল বয়ে আনেনি। এ জন্য নায়ক বাপ্পিকে দুষলেন নায়িকা জাহারা মিতু। এদিকে বাপ্পি-মিতুর প্রেমের সর্ম্পক নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে রাইজিংবিডির এই প্রতিবেদক কথা বলেন জাহারা মিতুর সঙ্গে।
রাহাত সাইফুল : ‘শত্রু’ সিনেমার প্রচারণা কেমন চলছে? মিতু : আজ সন্ধ্যা ৬টার শোতে নিউ গুলশান (জিঞ্জিরা) হলে মিশা সওদাগর ভাইসহ পুরো টিম থাকবে সিনেমার প্রচারণায়।
রাহাত সাইফুল : ঈদে মুক্তি পাওয়া ৮টি সিনেমার মধ্যে হল সংখ্যায় ‘শত্রু’ দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। কিন্তু দর্শক রিভিউয়ের দিক থেকে সিনেমাটির অবস্থান কেমন? মিতু : দর্শক রিভিউয়ের দিক থেকেও দ্বিতীয় অবস্থানে আছে বলে মনে করি। শুধু সিনেপ্লেক্স দিয়ে পুরো বাংলাদেশের বিচার করা যাবে না। সিঙ্গেল স্ক্রিন দিয়েই বিচার করতে হবে। সিঙ্গেল স্ক্রিনে অনেক জায়গার রিপোর্ট কিন্তু ভালো।
রাহাত সাইফুল : দু’একটা হল থেকে ‘শত্রু’ সিনেমা নামিয়েও দিয়েছে শুনেছি? মিতু : স্বাভাবিক। এটা গণ-মানুষের সিনেমা। টাকা দিয়ে টিকেট কেটে সিনেমা দেখে শিস বাজাতে চায়। এটা তাদের সিনেমা। আমাদের মেইন ফোকাস সিনেপ্লেক্স নয়। মফস্বল দর্শকদের সিনেমা ‘শত্রু’।
রাহাত সাইফুল : শোনা যাচ্ছে সিনেমায় বাপ্পির সংলাপ নিয়ে হাস্যরস করছেন দর্শক? আপনার চোখে এমন কি কিছু পরেছে? মিতু : আমি গত ১০-১২ দিন সোশ্যাল মিডিয়ার বাইরে ছিলাম। তবে এটুকু বলতে পারি বাপ্পির এটা বেস্ট সিনেমা। এর আগে বাপ্পির যত সিনেমা দেখেছি এর মধ্যে এটা সেরা সিনেমা।
রাহাত সাইফুল : ‘শত্রু’ সিনেমার প্রচারণা নিয়ে বাপ্পির বিরুদ্ধে আপনার বেশ অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। সিনেমার পিছিয়ে থাকার কারণ কি বলে মনে করেন? মিতু : আমার না, সিনেমার পুরো টিমের কথা- বাপ্পির নেতিবাচক কথার কারণে ‘শত্রু’ সিনেমাটি পিছিয়ে আছে। ঈদের দিন থেকে পুরো টিম আমরা একসঙ্গে দৌড়াচ্ছি, প্রচার করছি। অন্যদিকে সে একাই প্রচারণা করা শুরু করেছে তখন আমরা একটু আড়ালেই ছিলাম। আমরা সিনেমার ডিস্ট্রিবিউশনের দিকে নজর দিয়েছি। যেহেতু তার কথাবার্তায় একটা নেগেটিভ প্রচারণা চলে আসছে- কি আর করা! ইভেন আজকেও আমরা পুরো টিম একসঙ্গে। শুধু বাপ্পি নেই। ট্রেইলার প্রকাশ করার পর একটা পজিটিভ ভিউ ছিলো। যখন থেকে বাপ্পি লাগামহীন নেতিবাচক কথাবার্তা বলা শুরু করেছে তখন থেকে হা হা হা রিয়্যাক্ট বেড়ে যাচ্ছে। আমার প্রোফাইলে কখনই এতো হা হা হা পরেনি। আপনি যখন অন্য কোনো স্টারকে ইঙ্গিত করে কথা বলবেন তখন তার ভক্তরা বিষয়টি ভালোভাবে নেবে না। সেখান থেকে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তারপরও আমরা চুপচাপ ছিলাম। সে সব জায়গয়ই বলেছে- সে একাই ছিলো। এটা আমাদের মানতে কষ্ট হয়েছে। তার জন্য তাকে একা থাকতে হয়েছে। পুরো টিম একসঙ্গে, সে একা কেন? এটা আমারও প্রশ্ন।
রাহাত সাইফুল : এই বিষয়গুলো নিয়ে বাপ্পি চৌধুরীর সঙ্গে আপনি কথা বলেছেন? মিতু : আমি সরাসরি কথা বলিনি। আমাদের টিম থেকে কথা বলা হয়েছে। সে সব জায়গায় ঢালাউভাবে প্রচার করছে- সে একা প্রচারণা চালাচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে আমি মুখ খুলতাম না। এখন খুলছি কারণ কালকে আমি যখন অন্য কোথাও কাজ করবো তখন তারা বলবে মিতুকে সিনেমার প্রচারণায় পাওয়া যাচ্ছে না। বাপ্পির থেকে এখন আমার হাতে সিনেমার সংখ্যা বেশি। সে বলছে আমি নাকি ব্যক্তিগত কারণে প্রচারে আসিনি। আমার কি ব্যক্তিগত কারণ আমি তো জানি না। সে জানলো কীভাবে?
রাহাত সাইফুল : বাপ্পি চৌধুরীর এমন মন্তব্যে আপনার ক্যারিয়ারে কি কোনো প্রভাব পরবে বলে মনে করছেন? মিতু : আসলে এটা আমার একার অভিযোগ নয়। ‘শত্রু’ সিনেমার পুরো টিমের।
রাহাত সাইফুল : বাপ্পির সঙ্গে আপনার কোনো যোগাযোগ হয়েছে? মিতু : না আমি তার সঙ্গে কথা বলতে চাই না। কারণ তার সাথে ‘শত্রু’ সিনেমার শুটিং থেকেই নেই। শুধু আমার না, পুরো টিমের সঙ্গে তখন থেকেই প্রচণ্ড ডিস্টার্ব করেছে। আমি কখনও আমার পরিচালকের বাইরে গিয়ে নায়ককে প্রাধান্য দেব না।
রাহাত সাইফুল : শোনা যাচ্ছে আপনাকে বাপ্পির সঙ্গে সিনেমায় নেয়ার জন্য বাপ্পি অনুরোধ করেছে- কথাটি কতটা সত্য? মিতু : এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। আর এটা আজ প্রথম শুনলাম। ‘যন্ত্রণা’ সিনেমার ফটোশুটের ছবিগুলো ভালো হয়েছিল। এরপর আমার আর বাপ্পির সিনেমার অফার আসে। আমি আর ও বেস্ট ফ্রেন্ডের মতো ছিলাম। আমরা টিম হিসেবে কাজ করেছি। স্বাভাবিকভাবে ডিরেক্টর-প্রযোজকের বাইরে অন্য কারো প্রাধান্য নেই।
রাহাত সাইফুল : আপনার কারণে নাকি বাপ্পি চৌধুরীর সঙ্গে কোনো এক নায়িকার প্রেমের সর্ম্পক ভেঙে গেছে? মিতু : আপনি যার কথা বলছেন আমি তাকে খুব ভালোভাবেই চিনি। কারণ তিনি এত বিরক্ত করেছেন যে এসব বিষয় আমার খুব লেইম লাগে। সেই ভদ্রমহিলা; যে বলে তাকে ছেড়ে আমার কাছে চলে আসছে- আরে ভাই আপনি যে ফলাও করে এই বিষয়টা বলছেন এটা তো আপনার জন্যই অপমানজনক।
রাহাত সাইফুল : আপনি কি বলতে চাচ্ছেন আপনি সিঙ্গেল? মিতু : ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি থেকে আমি সিঙ্গেল। এরপর কোনো পুরুষ মানুষ বলতে পারবে না তাকে আমি ‘আই লাভ ইউ’ বলেছি। আপনি আপনার বয়ফ্রেন্ডকে হারাবেন আর প্রোপাগণ্ডা ছড়িয়ে আপনি আমার ক্ষতি করবেন এটা হাস্যকর। আমি শুনে হাসি এবং মজাও লাগে। এগুলো বাচ্চাদের মতো কাজ কারবার। নূন্যতম ব্যক্তিত্ব থাকলে এটা কারো পক্ষেই বলা সম্ভব নয় যে- আমার বয়ফ্রেন্ড অন্য কারো কাছে চলে গেছে।
রাহাত সাইফুল : বাপ্পি এখন আপনার বেস্ট ফ্রেন্ড নেই? মিতু : এটা সাত-আট মাস আগে থেকেই নেই। কারণ আমি আসলে মানুষকে সম্মান দিতে জানি। একটা পর্যায় গিয়ে দেখি এই বন্ধুত্ব যদি আরো কন্টিনিউ করি তাহলে অনেক সমস্যা তৈরি হবে। সবচেয়ে অদ্ভুত বিষয় যখন আমি ব্যাক করি তখন দেখি এরা কাজের ক্ষেত্রে প্রফেশন আর ব্যক্তিগত সম্পর্ক এক করে ফেলে।
রাহাত সাইফুল : বাপ্পির সঙ্গে কি আপনার আর কোনো সিনেমা হচ্ছে না? মিতু : বাপ্পি কেন পৃথিবীর যে কোনো মানুষের সঙ্গে আমার কাজ করতে কোনো সমস্যা নেই। এখনও আমি বলি- বাপ্পি যদি ‘শত্রু’ সিনেমার পুরো টিমের সঙ্গে দাঁড়ায় তাহলে তাকে ওয়েলকাম।