বিনোদন

মৃণাল সেনের স্ত্রীকে ঋত্বিক ঘটক পত্মীর লেখা চিঠি প্রকাশ্যে

ভারতীয় বাংলা সিনেমার দুই কিংবদন্তি পরিচালক ঋত্বিক ঘটক ও মৃণাল সেন। চলচ্চিত্রের স্বর্ণযুগের প্রতিটি ভাঁজে জড়িয়ে আছে তাদের স্মৃতি। ব্যক্তিগত জীবনে ভালো সম্পর্ক ছিল এই দুই নির্মাতার। শুধু তাই নয় দুই পরিবারের অন্য সদস্যদের মাঝেও সখ্যতা ছিল। আর তারই প্রমাণ দিলেন মৃণাল সেনের পুত্র কুণাল সেন।

কয়েক দিন আগে কুণাল সেন তার ফেসবুকে একটি পুরোনো চিঠি শেয়ার করেছেন। এটি ঋত্বিক ঘটকের স্ত্রী সুরমা ঘটকের লেখা। মৃণাল সেনের স্ত্রী গীতা সেনকে চিঠিটি লিখেছিলেন সুরমা ঘটক। ক্যাপশনে মৃণাল পুত্র কুণাল সেন লিখেছেন— ‘আমার মার একটা পুরোনো ব্যাগ ঘাঁটতে গিয়ে একটা ছেঁড়া চিঠি হাতে এলো। চিঠিটা ঋত্বিক ঘটকের স্ত্রী সুরমা ঘটকের লেখা, আমার মাকে। মা যত্ন করে নিজের ব্যাগে রেখে দিয়েছিলেন। ঠিক কবে লেখা আমার জানা নেই। ভাবলাম হয়তো অন্যদের দেখতে ভালো লাগবে।’

কাগজ হলুদ হওয়াতে স্পষ্ট চিঠির বয়স। উপরে বড় বড় করে লেখা ঋত্বিক ঘটকের স্ত্রী সুরমা ঘটকের নাম। পাশে লেখা তাদের চেতলার বাড়ির ঠিকানা ও ফোন নাম্বার। মৃণাল সেনের জন্মদিন উপলক্ষে চিঠিটি পাঠিয়েছিলেন সুরমা ঘটক। শুরুতেই লেখা, ‘গীতা, আজ মৃণাল সেনের জন্মদিন। আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন মৃণালবাবুকে জানাচ্ছি। মৃণাল বাবুরা একটা যুগের প্রতীক। একটা স্বপ্ন নিয়ে কাঁধে একটা ঝোলা নিয়ে রওনা হয়েছিলেন জীবনের পথে। এরপর সবাই স্ব স্ব ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত। ইতিহাসের পাতায় মৃণাল সেনের নাম উজ্জ্বল হয়ে আছে ও থাকবে। সত্যজিৎ রায়ের পর ঋত্বিক ও মৃণাল এই দুটি শব্দ সবসময় একসঙ্গেই উচ্চারিত হয়।’

স্মৃতিচারণ করে সুরমা ঘটক আরো লিখেছেন, ‘মৃণালবাবু আমার প্রতি খুবই সহানুভূতিশীল। মনে পড়ে, আমাকে শশ্মান থেকে হাত ধরে উনি বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। ছিলে তুমি, অনুপকুমার, পরে বেলা, নৃপেন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রভৃতি। সেদিন আমাকে উদ্ধার করে দিয়েছিলে।’

একটি ঘটনা শেয়ার করে সুরমা ঘটক লিখেছেন, ‘আমি চাকরি পেয়ে যোগদানের আগের দিন ছিল ধর্মঘট। মৃণাল সেন ফোন করে স্কুলে জানিয়ে দেন আমি পরদিন সকালে ট্রেনে গিয়ে ১২টার মধ্যে যোগদান করব। একটা যুগ শেষ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু কাজের মধ্যেই মানুষ বেঁচে আছে, আন্তরিক ভালোবাসা তোমাকে।’ চিঠির শেষে সুরমার বদলে ‘ইতি লক্ষ্মী’ বলে উল্লেখ করেছেন সুরমা ঘটক।