সময় কেবল এগিয়ে চলে, দেখতে দেখতে পার হয়ে গেছে একটি বছর। অথচ এখনো যেন কানে বাজে সেই কণ্ঠ, এখনো চোখে ভাসে সেই মঞ্চ-উচ্ছ্বাস। শাফিন আহমেদ—বাংলাদেশের ব্যান্ডসংগীতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র—যিনি আজ নেই, তবু আছেন প্রতিটি গানে, প্রতিটি সুরে। বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী।
প্রিয় মানুষটিকে ঘিরে আনুষ্ঠানিক আয়োজন নয়, বরং ঘরোয়া পরিসরে, নিজেদের মতো করেই তাকে স্মরণ করছে পরিবার, কাছের মানুষ এবং অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগী।
২০২৪ সালের ৯ জুলাই একটি কনসার্টে অংশ নিতে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান শাফিন। একটি কনসার্টে পারফর্মও করেন তিনি। ২০ জুলাই ভার্জিনিয়ায় আরেকটি কনসার্টে মঞ্চে ওঠার কথা ছিল তার। কিন্তু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। দ্রুত তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চার দিন রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে। এরপর আসে সেই মন খারাপের খবর—ফিরে আসেননি শাফিন আহমেদ। ২৯ জুলাই কফিনবন্দি হয়ে দেশে ফেরেন এই জনপ্রিয় শিল্পী। ৩০ জুলাই তার চিরনিদ্রার ঠিকানা হয় বনানী কবরস্থান।
শাফিন আহমেদ জন্মেছিলেন ১৯৬১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। পড়াশোনার সুবাদে যুক্তরাজ্যে থাকাকালীন তিনি পাশ্চাত্য সংগীতের প্রতি গভীর আকর্ষণ অনুভব করেন। দেশে ফিরে বড় ভাই হামিন আহমেদকে সঙ্গে নিয়ে গড়ে তোলেন ব্যান্ড ‘মাইলস’—যা পরবর্তী কয়েক দশকে বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাম হয়ে ওঠে।
শাফিন ছিলেন মাইলসের প্রধান ভোকাল ও বেজ গিটারিস্ট। একইসঙ্গে তিনি ছিলেন দলের জনপ্রিয় অনেক গানের গীতিকার ও সুরকার। তার কণ্ঠে শ্রোতা পেয়েছে ‘ফিরিয়ে দাও’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘চাঁদ তারা সূর্য’, ‘নীলা’, ‘প্রথম প্রেমের মতো’, ‘পিয়াসী মন’, ‘পাথুরে নদীর জলে’, ‘আজ জন্মদিন তোমার’–এর মতো অসংখ্য কালজয়ী গান।