বিনোদন

নগ্নতা, অমিতাভ-রণবীরের কড়া সমালোচনায় বিতর্কিত আধ্যাত্মিক গুরু

ভারতের বিতর্কিত আধ্যাত্মিক গুরু অনিরুদ্ধাচার্য। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে অনেকে ‘পুকি বাবা’ বলেও ডাকেন। কয়েক মাস আগে নারীদের নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন। এ নিয়ে অভিনেত্রী দিশা পাটানির বোন কড়া সমালোচনা করেছিলেন। এবার বলিউড সিনেমা, অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন ও রণবীর সিংকে নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে আলোচনার জন্ম দিলেন এই আধ্যাত্মিক গুরু। 

অনিরুদ্ধাচার্য বলেন, “সিনেমায় মেয়ে-বউদের এমন পোশাকে দেখানো হচ্ছে, যা সমাজের জন্য ভালো নয়। ফলে নারীদের উপরও খারাপ প্রভাব পড়ছে। এখন মেয়েরাও এই ধরণের পোশাক পরতে চান।” 

পুরষদের কথা উল্লেখ করে অনিরুদ্ধাচার্য বলেন, “এটা কেবল নারীদের ব্যাপার নয়, পুরুষদেরও এভাবে নগ্ন থাকা অন্যায়। আমাদের সংস্কৃতিতে, কেবল নারীরা নয়, পুরুষরা ওড়না পরে মর্যাদা রক্ষা করতে পারেন।” 

২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে একটি ম্যাগাজিনের ফটোশুটে নগ্ন হন বলিউড অভিনেতা রণবীর সিং। সেই উদাহরণ দিয়ে অনিরুদ্ধাচার্য বলেন, “একটি সভ্য সমাজে, যার এত টাকা-পয়সা, নাম-যশ, সেই ব্যক্তির নগ্ন ছবি তোলা হয়, সভ্য সমাজে কি এটা ঠিক? সমাজের মানুষদের কি প্রতিবাদ করা উচিত ছিল না যে, তিনি কেন নগ্ন হয়েছেন?” 

অসন্তোষ প্রকাশ করে অনিরুদ্ধাচার্য বলেন, “আমি সমাজের সামনে এই নগ্নতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছি। আমি যখন এই নগ্নতার বিরোধিতা করি, তখন বাকিরা এগিয়ে আসে।”

বলিউড অভিনেতা অমিতাভ বচ্চনের সমালোচনা করে অনিরুদ্ধাচার্য বলেন, “অমিতাভ বচ্চন একটি গান গেয়েছিলেন, যার অর্থ, যদি বেঁচে থাকা জরুরি হয় তবে মদ্যপান খুবই জরুরি। তাহলে বচ্চন সাহেব নিশ্চয় ছোটবেলা থেকেই তার সন্তানদের, পরিবারের পরবর্তী প্রজন্মকে চামচ দিয়ে মদ্যপান করাচ্ছেন।”

সিনেমা সমাজের প্রতিচ্ছবি। অনিরুদ্ধাচার্য কি এই মন্তব্যের সঙ্গে একমত? জবাবে তিনি বলেন, “আমরা কেন এটাকে এভাবে দেখব? এটাকে এভাবে দেখব যে, একজন সুপারস্টার হয়ে মদ্যপান করলে, যারা সিনেমা দেখতে যাবেন, তাদের সন্তানও গিয়ে জানতে পারবে যে বচ্চন সাহেব মদ্যপান করেন। তারা বলবে যে, এত বড় সুপারস্টার, যাকে গোটা বিশ্ব অনুসরণ করে, সে মদ্যপান করতে পারলে আমরা কেন করব না?”

প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে অনিরুদ্ধাচার্য বলেন, “এটা সমাজকে ভুল পথে নিয়ে যাবে। আজ যদি সমাজ উনার সিনেমা দেখে মদ্যপান শুরু করে, তাহলে বচ্চন সাহেব দায়ী কি না?” 

‘রামানন্দ সাগরের ‘রামায়ণ’, ‘শ্রীকৃষ্ণ’ শোয়ের উদাহরণ টেনে অনিরুদ্ধাচার্য বলেন, “এগুলোও শো ছিল, খুব ভালো ছিল। ‘দ্য কেরালা ফাইলস’ এসেছিল, ইতিহাস সম্পর্কিত সিনেমা। এগুলো দেখতে খুব ভালো লাগে; যা ভালো তা দেখান। কেন শুধু নগ্নতা পরিবেশন করা হবে?” 

অশ্লীল সিনেমা নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে অনিরুদ্ধাচার্য বলেন, “একটা গান আছে ‘ব্লু হ্যায় পানি পানি’, সেখানে নারীদের অর্ধনগ্ন করে দাঁড় করানো হয়েছে। ছেলে-মেয়েরা এটা দেখলে কী শিখবে? অশ্লীলতা পরিবেশনকারী এমন সিনেমা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা উচিত। আমরা যাদেরকে এখন পর্যন্ত সীমার মধ্যে থাকতে শিখিয়েছি, তারা যদি এভাবে অর্ধনগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়ায়, তাহলে এটা ঠিক নয়। আমরা রণবীরের কথাও বলছি, কেন সেও নগ্ন হয়ে ঘুরে বেড়াবে, কেন পুরুষরাও এভাবে ঘুরে বেড়াবে। আমরা একটি সভ্য সমাজে বাস করি।”