বিনোদন

শিল্পীদের অনেকে ঠিক মতো দুবেলা খেতেও পারেন না : আহমেদ শরীফ

ঢাকাই সিনেমার শক্তিমান অভিনেতা আহমেদ শরীফ। একসময় যার অভিনয় ছাড়া বাণিজ্যিক সিনেমার গল্প যেন অসম্পূর্ণ থেকে যেত। প্রায় আট শতাধিক সিনেমায় খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তবে দীর্ঘদিন তিনি প্রবাস জীবন কাটাচ্ছেন। 

কেন দেশ ছাড়লেন? প্রশ্নের উত্তরে সোজাসাপ্টা উত্তর আহমেদ শরীফের— “দেশে থাকলে তাকে হাত পেতে খেতে হতো। কাজ নেই, সিনেমা কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে, বন্ধ হয়ে গেছে অসংখ্য সিনেমা হল। এরই ধাক্কা লেগেছে শিল্পীদের জীবনে।”

রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) এফডিসিতে প্রয়াত শিল্পীদের স্মরণে আয়োজিত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন তিনি। সেখানেই সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “চলচ্চিত্রে কজন মানুষ আছে যে নিশ্চিত করে বলতে পারে, তার দুবেলা খাওয়ার ব্যবস্থা আছে? নেই। দেশে আসার পর সবার সঙ্গে কথা হয়েছে, সবাই বলছে শরীফ ভাই আপনি ঠিক জায়গাতেই আঘাত করেছেন। সত্যি বলছি, যদি আমি বাংলাদেশে থাকতাম, আমাকে হাত পেতে লোকের কাছে বলতে হতো— ভাই আমার বাড়িতে খাবার নেই, বউ-বাচ্চাকে খাওয়াতে পারছি না, কিছু টাকা দেন।” 

আহমেদ শরীফের মতে, “চলচ্চিত্রের অনেকে এখন ঠিক মতো দুবেলা খাবারও জোগাড় করতে পারেন না। এই অভাব-অনটন অনেককেই বাধ্য করছে প্রবাস জীবন বেছে নিতে। শুধু চলচ্চিত্র নয়, টেলিভিশনেরও অনেক শিল্পী দেশ ছাড়ছেন। কারণ দেশে শিল্পীদের জন্য নেই নিশ্চিন্ত জীবন কিংবা বিনোদনের সুস্থ পরিবেশ।”

প্রবাস জীবন কাটালেও দেশের প্রতি টান রয়েছে আহমেদ শরীফের। ভবিষ্যতে দেশে ফিরতে চান তিনি। সরকারের কাছে তার প্রত্যাশা, “শিল্পীদের জন্য একটা নিশ্চিন্ত জীবন চাই। যেন তারা অন্তত একটা ভালো জীবনের নিশ্চয়তা পায়।” 

বাংলা চলচ্চিত্রের সোনালি দিনগুলোতে ভিলেন মানেই ছিলেন আহমেদ শরীফ। ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’, ‘আঞ্জুমান’, ‘বাংলার নায়ক’, ‘দেনমোহর’, ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, ‘ক্ষতিপূরণ’, ‘গোলমাল’, ‘তিন কন্যা’— এমন অসংখ্য সিনেমায় তার অভিনয় আজও দর্শকের স্মৃতিতে রয়ে গেছে।

একসময় যিনি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এবং চারবারের সভাপতি ছিলেন, সেই আহমেদ শরীফের আক্ষেপ— সিনেমার পতনশীল অবস্থায় শিল্পীদের জীবনে আর নেই সেই নিশ্চয়তা, নেই দুবেলা ভরপেট খাওয়ার গ্যারান্টিও।