বাংলা লোকসংগীতের অন্যতম প্রবাদপ্রতিম শিল্পী ফরিদা পারভীন না ফেরার দেশে চলে গেছেন। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে। বাউল সাধনার এই অসামান্য সাধককে স্মরণ করছেন সর্বস্তরের মানুষ। শোক প্রকাশ করেছেন ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খানও।
রবিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) ফেসবুকে এক পোস্টে শাকিব লিখেছেন, “লোকসংগীতের দেশবরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করছি। তিনি ছিলেন আমাদের লালনগীতি, নজরুলসংগীত ও দেশাত্মবোধক গানের এক উজ্জ্বল দীপ্তি, যার কণ্ঠে ছিল বাংলার মাটি, মানুষের আত্মা ও সংস্কৃতির স্পন্দন। তার অনন্য সাধনা ও সুরের ছোঁয়া আমাদের হৃদয়ে চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”
শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টা ১৫ মিনিটে ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ফরিদা পারভীন। আজ বেলা ১২টার দিকে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষ তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। সেখান থেকে তার মরদেহ নেওয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে; জোহর নামাজের পর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর কুষ্টিয়ায় মা–বাবার কবরের পাশে তাকে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হবে।
লালনের গানের বাণী ও সুরকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে ফরিদা পারভীনের অবদান সর্বজনস্বীকৃত। দেশের পাশাপাশি বিশ্বদরবারে তিনি লালন সাঁইয়ের বাণী ও সুরের প্রচারে কাজ করেন। জাপান, সুইডেন, ডেনমার্ক, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ বহু দেশে লালনসংগীত পরিবেশন করেছেন। লালনসংগীতে অবদানের জন্য ১৯৮৭ সালে একুশে পদক পান ফরিদা পারভীন।
১৯৯৩ সালে ‘অন্ধ প্রেম’ সিনেমার ‘নিন্দার কাঁটা’ গানটির জন্য শ্রেষ্ঠ সংগীতশিল্পী (নারী) হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। ২০০৮ সালে তিনি জাপানের ফুকুওয়াকা পুরস্কার লাভ করেন।
লালনশিল্পী হিসেবে সুপরিচিত হলেও, তার কণ্ঠে বেশ কিছু আধুনিক ও দেশের গান জনপ্রিয় হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—‘তোমরা ভুলে গেছো মল্লিকাদির নাম’, ‘এই পদ্মা এই মেঘনা’ প্রভৃতি।