বগুড়ার সংস্কৃতিমনস্ক মানুষের কাছে ‘মধুবন’ ছিল শুধু একটি সিনেমা হল নয়, এক টুকরো নস্টালজিয়া। চার বছর আগে ঐতিহ্যবাহী এই সিনেমা হলটি আধুনিক সাজে রূপ নিয়েছিল ‘মধুবন সিনেপ্লেক্স’ হিসেবে। টিকিট কাউন্টার থেকে পপকর্ন কর্নারে, সবকিছুতেই ছিল আধুনিকতার ছোঁয়া।
তবে সেই উজ্জ্বল আলো এখন নিভে গেছে। চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে বন্ধ হয়ে গেছে মধুবন সিনেপ্লেক্স। আর বন্ধ দরজার ভেতর এখন সিনেমার বদলে বাজে বিয়ের গানের সুর। কারণ মধুবন এখন কমিউনিটি সেন্টার।
সিনেপ্লেক্সটির মালিক রোকনুজ্জামান ইউনূসের ছেলে এস এম ইউনূস বলেন, “সিনেমা চালাতে পারছি না। এখানে তো স্টার সিনেপ্লেক্সের মতো সুযোগ–সুবিধা নেই। প্রতি মাসে বিপুল খরচ, কিন্তু দর্শক কম। বন্ধের আগের তিন মাসে প্রায় ৯ লাখ টাকা খরচ হয়েছে, যা তুলতে পারিনি।”
প্রেক্ষাগৃহটি এখনো পুরোপুরি কমিউনিটি সেন্টার বানানোর ইচ্ছে নেই। এ তথ্য জানিয়ে এস এম ইউনূস বলেন, “হলের আউটডোর অংশ মাঝে মাঝে বিয়ের অনুষ্ঠানের জন্য দিচ্ছি। এটাকে পুরোপুরি কমিউনিটি সেন্টার বানানোর ইচ্ছে নেই। আগামী নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করব। নতুন সরকার এলে যদি সহযোগিতা করে, তাহলে ‘মধুবন’ আবার সিনেমা হল হিসেবেই ফিরবে।”
৩৩৬ আসনের এই সিনেপ্লেক্সে ‘পরাণ’, ‘হাওয়া’, ‘প্রিয়তমা’, ‘তুফান’, ‘বরবাদ’-এর মতো জনপ্রিয় সিনেমাগুলো বিপুল দর্শক টেনেছিল। বিশেষ করে ‘বরবাদ’ সিনেমা মুক্তির সময় পরিবার নিয়ে রাতভর শো দেখতে দূরদূরান্ত থেকে দর্শক আসতেন—একাধিক দিন ‘মিড নাইট শো’ চলেছিল মধুবনে।
এখন সেই প্রেক্ষাগৃহে সিনেমার আলো নিভে গিয়ে জ্বলছে সাজঘরের ঝলমলে লাইট। দর্শকের উচ্ছ্বাসের জায়গা দখল করেছে বিয়ের ব্যস্ততা।