বিনোদন

বড়দিনে ঘরে বসে দেখতে পারেন দক্ষিণী পাঁচ সিনেমা

দক্ষিণী সিনেমা সাধারণত বড় মাপের চরিত্র ও তীব্র অ্যাকশন দৃশ্যের জন্য পরিচিত। তবে কিছু কিছু সিনেমা রয়েছে, যেগুলো সরলতা ও উষ্ণ অনুভূতির জন্য হৃদয়ে রয়ে যায়। খ্রিষ্টধর্মের অনুসারীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ক্রিসমাস বা বড়দিন। বিশেষ এই দিনে ঘরে বসে এমন পাঁচটি সিনেমা দেখে নিতে পারেন।

নর্থ ২৪ কাঠাম অভিনয়ে: ফাহাদ ফসিল, নেদুমুডি ভেনু, স্বাতী রেড্ডি, চেম্বান বিনোদ জোসে, সাদিক প্রমুখ। পরিচালনা: অনিল রাধাকৃষ্ণান মেনন ধরন: অ্যাডভেঞ্চার ড্রামা কোথায় দেখবেন: জিওহটস্টার

দক্ষিণী সিনেমার দাপুটে অভিনেতা ফাহাদ ফসিল। সাধারণত, তার সিনেমা বলতে ‘কুম্বালাঙ্গি নাইটস’ বা ‘আভেশম’ এর কথাই বেশি আলোচিত। কিন্তু তার অভিনীত হৃদয়ছোঁয়া কিছু সিনেমা আড়ালেই রয়ে যায়। তার মধ্যে অন্যতম অ্যাডভেঞ্চার ড্রামা ঘরানার ‘নর্থ ২৪ কাঠাম’। মালায়ালাম ভাষার এ সিনেমা ২০১৩ সালে মুক্তি পায়। সিনেমাটির গল্প হরিকৃষ্ণান নামে একজন আইটি প্রফেশনালকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে। হরিকৃষ্ণান কোচিতে বসবাস করেন, তিনি অবসেসিভ-কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি) রোগে ভোগেন। তার অতিরিক্ত শৃঙ্খলাপরায়ণ স্বভাবের জন্য সহকর্মীদের সঙ্গে প্রায়ই জটিলতা দেখা দেয়। অফিসের নির্দেশে তিরুবনান্তপুরমে একটি ওয়েবিনার উপস্থাপন করতে যেতে হয়। কিন্তু হরতালের কারণে পথে আটকে পড়েন, সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় গোপালন ও নারায়ণীর সঙ্গে। অচেনা এই দুই ব্যক্তির সঙ্গে গড়ে ওঠা বন্ধুত্ব ও ঘটনাবহুল যাত্রা সিনেমাটিকে হৃদয়ছোঁয়া আত্ম-অন্বেষণের গল্পে পরিণত করে।

রিদম অভিনয়ে: অর্জুন সরজা, মীনা, জ্যোতিকা, রমেশ অরবিন্দ, লক্ষ্মী, মোহন রমন, নাগেশ প্রমুখ। পরিচালনা: বসন্ত ধরন: মিউজিক্যাল রোমান্টিক ড্রামা কোথায় দেখবেন: অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও

নব্বই দশক ও ২০০০ সালের শুরুর দিকে অর্জুন সরজা মূলত অ্যাকশন হিরো হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তবে নিঃসঙ্গ প্রেমিকদের হৃদয়ে আজও বিশেষভাবে জায়গা করে আছে তার ‘রিদম’ সিনেমাটি। তামিল ভাষার এ সিনেমা ২০০০ সালে মুক্তি পায়। গল্পটি কার্তিকেয়ান ও চিত্রাকে ঘিরে এগিয়েছে। বিধবা চিত্রা এবং নিঃসঙ্গ কার্তিকেয়ান গভীর শূন্যতা নিয়ে বেঁচে আছেন। হঠাৎ মুম্বাইতে দেখা হওয়ার পর তারা ধীরে ধীরে একে অপরের দুঃখ ভাগ করে নেন। নতুন করে ভালোবাসার পথে এগোতে গিয়ে তারা আবিষ্কার করেন, অতীতের এক মর্মান্তিক ঘটনার মাধ্যমে তাদের জীবন অদ্ভুতভাবে জড়িয়ে আছে। পরিবার, সমাজ আর নতুন জীবনের আশার মাঝেই এগিয়ে চলে এ জুটির গল্প।

পেল্লি চুপুলু  অভিনয়ে: বিজয় দেবরকোন্ডা, রিতু ভার্মা, প্রিয়দর্শী পুলিকোন্ডা, অভয় বেতিগান্তি, নন্দু, অনীশ কুরুভিলা প্রমুখ। পরিচালনা: থারুন ভাস্কর ধরন: রোমান্টিক কমেডি কোথায় দেখবেন: সান এনএক্সটি

রাগী ও গম্ভীর চরিত্রে অভিনয়ের আগে বিজয় দেবরকোন্ডা সত্যিকার অর্থে দর্শকদের মন জয় করেছিলেন ‘পেল্লি চুপুলু’ সিনেমা দিয়ে। সরল কিন্তু স্পর্শকাতর প্রেমের গল্প নিয়ে গড়ে উঠেছে সিনেমাটির কাহিনি। এ সিনেমার গল্প এগিয়েছে প্রশান্ত নামে একজন যুবককে কেন্দ্র করে। প্রশান্ত অলস কিন্তু খুবই মেধাবি একজন শেফ। একপর্যায়ে চিত্রা নামে এক আত্মবিশ্বাসী তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়; যার স্বপ্ন অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমানো। পেল্লি চুপুলু অনুষ্ঠানে তাদের প্রথম দেখা; দুর্ঘটনাবশত তারা একসঙ্গে একটি ঘরে আটকা পড়েন। সেখান থেকেই শুরু হয় বন্ধুত্ব, স্বপ্ন ভাগাভাগি আর পারিবারিক চাপে জর্জরিত জীবনের গল্প। পরে তারা একসঙ্গে একটি ফুড ট্রাক শুরু করেন, যা তাদের জীবনে আত্মনির্ভরতা, পরিণতি ও প্রেম নিয়ে আসে।

সচীন অভিনয়ে: থালাপাতি বিজয়, জেনেলিয়া ডি’সুজা, বিপাশা বসু, ভাদিভেলু, সন্থানম, রঘুবরণ, থালাইভাসাল বিজয় প্রমুখ। পরিচালনা: জন মহেন্দ্রন ধরন: রোমান্টিক কমেডি কোথায় দেখবেন: জিওস্টার

প্রায়ই আলোচনা হয়ে থাকে, থালাপাতি বিজয়ের শেষ পূর্ণাঙ্গ রোমান্টিক-কমেডি ঘরানার সিনেমা ‘সচীন’। ২০০৫ সালে মুক্তি পায় এটি। যদিও মুক্তির পর সিনেমাটি খুব একটা প্রশংসা পায়নি। তবে সময়ের সঙ্গে সেই চিত্রপট বদলে যায়, ফলে এখনো সহজ-সরল প্রেমের গল্প হিসেবে দর্শকদের ভালোবাসা কুড়ায় এটি। গল্পের কেন্দ্রে রয়েছেন সচীন, স্বভাবে প্রাণখোলা কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী, প্রথম দেখাতেই সে শালিনীর প্রেমে পড়ে। শালিনী বাস্তববাদী ও জনপ্রিয়, যার অনেক ভক্ত রয়েছে। প্রায়ই মতবিরোধ হলেও সচীন নিজের আলাদা স্টাইলে তাকে জয় করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। একসঙ্গে সময় কাটাতে কাটাতে তাদের মাঝে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শেষ পর্যন্ত শালিনী কি তার প্রেমের আহ্বানে সাড়া দেবেন—এটাই সিনেমাটির প্রধান প্রশ্ন।

১৯৮৩ অভিনয়ে: নিবিন পলি, অনুপ মেনন, নিকি গালরানি, জয় ম্যাথিউ, শ্রীন্দা আরহান, জ্যাকব গ্রেগরি, সাইজু কুরুপ প্রমুখ। পরিচালনা: আব্রিদ শাইন ধরন: স্পোর্টস ড্রামা কোথায় দেখবেন: সান এনএক্সটি

মালায়ালাম ভাষার ‘১৯৮৩’ সিনেমাকে শুধু স্পোর্টস ড্রামা ঘরানার বলে অনেকে এড়িয়ে যান। কিন্তু এটি তারচেয়েও অনেক বেশি কিছু, আধুনিক ও গভীর আবেগী একটি সিনেমা। রামেশন নামে গ্রামের একটি ছেলেকে কেন্দ্র করে গল্প এগিয়েছে। ১৯৮৩ সালে ভারত বিশ্বকাপ জয়ের পর ক্রিকেটের প্রতি রামেশনের ভালোবাসা জন্মায়। কিন্তু তার বাবা চান সে ইঞ্জিনিয়ার হোক। এই দ্বন্দ্বের কারণে রামেশন পড়াশোনায় যেমন ব্যর্থ হয়, তেমনি ভালোবাসা হারায়, সাধারণ একটি গণ্ডিতে জীবন থমকে যায়। সিনেমাটির গল্পে অসাধারণভাবে তার জীবনের ওঠানামা দেখানো হয়েছে। সর্বশেষ রামেশন তার ছেলের মাধ্যমে নিজের অপূর্ণ স্বপ্ন পূরণের পথ খুঁজে পায়।