উদ্যোক্তা/ই-কমার্স

‘ছাত্রজীবনেই উদ্যোক্তা হতে হবে’

বেকারত্ব এই সমাজের তরুণদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাধারণত বেকার বলতে, যে কাজ করতে ইচ্ছুক কিন্তু সামার্থ্য অনুসারে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারছে না। 

দেশে বর্তমানে বেকারের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে, সঙ্গে শিক্ষিত বেকারও। স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস করে বেকারত্বের মুখোমুখি হচ্ছে এ দেশের তরুণরা। শিক্ষিত মানুষের হার দিনে দিনে বাড়ছে, তার সঙ্গে বাড়ছে শিক্ষিত বেকারও। সরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসে গবেষণা ২০১৯-এ দেখা যায়, শিক্ষিত বেকারদের মধ্যের সম্পূর্ণ বেকার হলো ৩৩.৩২ শতাংশ।

আর এই বেকারত্বের প্রধান কারণ হলো কর্মসংস্থানের অভাব এবং অপরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থা। প্রত্যেক বছর পাস করে অনেক শিক্ষার্থী বের হচ্ছে। কিন্তু দেশে কর্মসংস্থানের অভাব। বিভিন্ন চাকরিতে কয়েকটি আসনের বিপরীতে আবেদন করছে লাখো শিক্ষার্থী। 

এ দেশের শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীকে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে পারছে না। নির্দিষ্ট কাজের জন্য তাদেরকে ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিয়ে ঐ কাজের জন্য তৈরি করতে পারছে না।

শিক্ষিত বেকারত্ব দূরীকরণে সরকারকে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা এবং পরিকল্পিত শিক্ষাব্যবস্থা গঠন করতে হবে। আর শিক্ষিত বেকারদেরই তৈরি করতে হবে আত্মকর্মসংস্থানের জায়গা। চাকরির দিকে না ঝুঁকে, নিজেদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।

বেকারত্ব দূরীকরণে ছাত্রজীবন থেকে ব্যবসার পরিকল্পনা করাটা পরবর্তী জীবনে ভালো প্রভাব ফেলবে। ছাত্রজীবনে বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে নিজেকে জড়িত রাখতে হবে। সুষ্ঠু কর্মসংস্থানের অনেক বড় একটা ভূমিকা রাখে ব্যবসা। আমাদের একজন পরিশ্রমী ব্যবসায়ী হওয়ার মানসিকতা থাকতে হবে।

নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দিয়ে আমরা হতে পারি একজন ফ্রিল্যান্সার। ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে বর্তমান সময়ে সবারই ধারণা আছে। তাছাড়া ফ্রিল্যান্সিং শিখার জন্য দেশের সরকার ফ্রিতে অনেক ট্রেনিং দিচ্ছে। অনেক বড় বড় সংগঠনই ফ্রিতে অনেক কোর্সের ব্যবস্থা করছে। বাংলাদেশের প্রায় ৬ লক্ষ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং করছে। আয় করছে বছরে প্রায় ৮৫০ কোটি টাকার মতো।

করোনার এই দুঃসময়ে স্নাতক বা স্নাতকোত্তর পাস করা অনেকেই খামার করে অর্থ উপার্জন করছে। বেকারত্ব দূরীকরণে খামার গঠন করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে অনেকে। তার সঙ্গে দূর হচ্ছে শিক্ষিত বেকারত্ব। 

দেশে কর্মসংস্থানের অভাব এবং বেকারত্ব দূর করতে শিক্ষার্থীকে বিদেশে চাকরি করার মতো দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন ধরনের কোর্স কমপ্লিট করে বিদেশে চাকরি করার সুযোগ গ্রহণ করতে হবে।

তরুণ ও শিক্ষার্থীদের হতে হবে আত্মনির্ভরশীল। বেকারত্ব দূরীকরণের জন্য আমাদের তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায়ও প্রশিক্ষিত হতে হবে। দেশকে এই বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিজের কিছু করার চেষ্টা করতে হবে। নিতে হবে ঝুঁকি, হতে হবে উদ্যোক্তা।

লেখক: শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

ঢাবি/মাহি