উদ্যোক্তা/ই-কমার্স

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেরা ছাত্রী যখন সফল উদ্যোক্তা 

মাধ্যমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি, সবখানেই তার মেধার স্বাক্ষর। বিবিএ ও এমবিএতে ভালো সিজিপিএ ছিল তার। বলছি কিশোয়ার সুলতানা চৌধুরীর কথা। তিনি পড়ালেখা শেষ করে চাকরির পেছনে ছুটেননি। নিজের ব্যবসায়িক জ্ঞান কাজে লাগিয়ে নিজেকে তৈরি করেছেন একজন উদ্যোক্তা হিসেবে। 

চট্টগ্রামের অনলাইন ও অফলাইন প্রোডাক্ট ব্র্যান্ড ‘লারোজা বাই কিশোয়ার’-এর উদ্যোক্তা তিনি নিজেই। ২০১৭ সাল থেকেই কিশোয়ার নিজের স্বতন্ত্র একটি পরিচয় তৈরি করেছেন ব্যবসার মাধ্যমে।

কিশোয়ার সুলতানা রাইজিংবিডিকে বলেন, পারিবারিকভাবে আমার কোনো প্রয়োজনীয়তা বা বাধ্যবাধকতা ছিল না যে আমাকে চাকরি বা ব্যবসা করতেই হবে। কিন্তু নিজে কিছু করার মধ্যে নিজের একটি আত্মপরিচয় তৈরি হয়, তা অন্য কোনোভাবে অর্জন করা সম্ভব নয়। এই ভাবনা থেকেই ২০১৭ সালে কিশোয়ার শুরু করেন ‘লারোজা বাই কিশোয়ার’ অনলাইন পেজ। মূলত দেশি-বিদেশি নারীদের পোশাক নিয়েই কিশোয়ারের বিজনেস। তার নিজস্ব প্রোডাক্টের মধ্যে প্রধানত ঐতিহ্যবাহী মসলিনের কালেকশন। দেশীয় মসলিনে নিজস্ব ডিজাইনে জারদৌসি, স্টোনসহ নানা বৈশিষ্ট নিয়ে কাজ করেন কিশোয়ার। রয়েছে নিজস্ব কারখানা, যেখানে কর্মরত ১৫ থেকে ২০ জন দক্ষ কারিগর।

কিশোয়ার জানান, মসলিন ছাড়াও তার ব্যবসায়িক পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান ও ইন্ডিয়ান ক্যাটালগ ড্রেস, ইম্পোর্টেড জুয়েলারিসহ নারীদের জন্য নানা ধরনের পোশাক। ‘লারোজা বাই কিশোয়ার’-এর অনলাইন পেজের মাধ্যমে বিক্রি ছাড়াও নিজের বাসায় রয়েছে নান্দনিক ডিসপ্লে সেন্টার। এখান থেকে আগ্রহী ক্রেতারা তাদের পছন্দানুযায়ী পোশাক কিনে নিয়ে যেতে পারেন এবং নিজের পছন্দমতো ডিজাইনে শাড়ি বা থ্রি-পিস অর্ডারও করতে পারেন।

কিশোয়ার বলেন, আমি মূলত আধুনিক রুচিবোধ ও আভিাজত্যকে প্রাধান্য দিয়ে সব বয়সী নারীদের পোশাক ডিজাইন কিংবা দেশের বাইরে থেকে সংগ্রহ করি। আমার কালেকশনে সৌন্দর্য, গুণ ও মানের সন্নিবেশ থাকায় এই পোশাকের ক্রেতা চট্টগ্রাম ছাড়িয়ে সমগ্র দেশে। নারীরা আমার পোশাকে আস্থা রাখেন চোখ বন্ধ করে। ফলে ‘লারোজা বাই কিশোয়ার’-এর যাত্রার শুরু থেকেই সবার কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়ে নিজেকে একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরি করতে সক্ষম হয়েছি।

কিশোয়ারের স্বামী সাদ শাহরিয়ার একজন ইভেন্ট প্ল্যানার। চট্টগ্রামের বহুল পরিচিত ‘লামোর ইভেন্ট’-এর অন্যতম উদ্যোক্তা। এছাড়া তিনি এপিক প্রপার্টিজের ব্র্যান্ড ইনচার্জ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

কিশোয়ার জানান, তার উদ্যোক্তা হয়ে উঠার নেপথ্যে স্বামীর সার্বক্ষণিক উৎসাহ সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। ব্যবসায় উৎসাহ দেওয়ার পাশাপাশি যখন যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই ভালোবাসার হাত প্রসারিত করেছেন। ফলে একজন নারী হিসেবে ব্যবসায় সফল হতে তার সামনের সব প্রতিবন্ধকতা তিনি অনায়াসে ডিঙিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানান কিশোয়ার। ভবিষ্যতে ‘লারোজা বাই কিশোয়ার’কে নিয়ে আরো বহুদূর পথ এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কিশোয়ার সুলতানা চৌধুরী।