উদ্যোক্তা/ই-কমার্স

জামদানি নিয়ে অনেকদূর যেতে চান উদ্যোক্তা রোকেয়া

রোকেয়া আক্তার, জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হলেও বাবার চাকরিসূত্রে  চট্টগ্রামেই বেড়ে ওঠা ও বসবাস তার। বর্তমানে রোকেয়া একজন ই-কমার্স উদ্যোক্তা। তার উদ্যোগের নাম 'কাকন'স এ্যাটিয়ার'। সম্প্রতি রাইজিংবিডিকে উদ্যোগের গল্প বলেছেন তিনি৷ সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন রাইজিংবিডির উদ্যোক্তা ও ই-কমার্স পাতার কন্ট্রিবিউটর লেখক ও এসএস এগ্রো প্রোডাক্টের স্বত্বাধিকারী শিরীন সুলতানা অরুনা।  

রাইজিংবিডি: ব্যবসার শুরুর গল্পটা বলুন। 

রোকেয়া আক্তার: যেকোনো কাজই শুরুটা করতে একটু সাহস লাগে। আমিও সাহস করে শুরু করেছিলাম। তবে শুরুর আগে দরকার দক্ষতা। যে কাজ নিয়ে শুরু করতে চান তার জন্য দরকার দক্ষতা। আমি যদি আমার ব্যবসা নিয়ে না জানি আমি আমার কাস্টমার কে কি বলব?তাই শুরু করার আগে দক্ষতা বাড়ানো খুব দরকার। আমি শুরুর দিকে প্রচুর সময় দিয়েছি জামদানি নিয়ে জানার। প্রচুর বই পড়েছি, পড়ি এখনো। ছুটে গিয়েছি তাঁতীদের কাছে। ঘুরে ঘুরে সোর্স ঠিক করেছি। ঘুরে ঘুরে কাজের মান দেখেছি। কারণ সব তাঁতী সব শাড়ি বানায় না। তাই কাজের কোয়ালিটি ভাল দেওয়ার জন্য অনেকবার ছুটে গিয়েছি জামদানির জন্মস্থানে।

এরপরে আত্মপ্রকাশ করেছি জামদানি নিয়ে। আমি শুধু জামদানি নিয়েই আছি। আর চাই জামদানি নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে।  জামদানির হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে দিন বদল করতে চাই।

রাইজিংবিডি: কি কি পণ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন?

রোকেয়া আক্তার:  আমি আমার উদ্যোগ শুরু করেছি জামদানি দিয়ে। এখনো জামদানি নিয়েই আছি। তবে ক্রেতার চাহিদার প্রেক্ষিতে কিছু পণ্য যুক্ত করেছি৷ যেমন: লেদার আইটেম, চাদর,মসলিন,সিল্ক ইত্যাদি। 

রাইজিংবিডি:   ঠিক কোন ধরনের চিন্তা ভাবনা থেকে এমন পণ্য নিয়ে ব্যবসা করার পরিকল্পনা ছিল?

রোকেয়া আক্তার:  জামদানির প্রতি ভালবাসা আমার সব সময়। সেই ছোট বেলায় আমার নানুর কাছে, খালাম্মার কাছে ও আম্মুর কাছে এই শাড়িগুলি দেখেছি। কতটা যত্নে রেখেছিলেন শাড়িগুলি। তারপর থেকেই মনে খুব ইচ্ছে ছিল আমি যদি কিছু করি কখনো জামদানি নিয়ে কাজ করব। জামদানির হারানো গৌরব ফিরানোর সর্বোচ্চ চেস্টা করব। আমাদের জামদানি এত সমৃদ্ধ আর এত সুন্দর যা আমাদের ভৌগোলিক পণ্য। আর এর সমাদর আছে পুরো পৃথিবীতে। আমি সেই লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিলাম।

রাইজিংবিডি:  ব্যবসার শুরু কি অনলাইন কেন্দ্রিক নাকি অন্য উপায় ছিল?

রোকেয়া আক্তার:  জ্বি আমার বিজনেস পুরাপুরি অনলাইন কেন্দ্রিক।

রাইজিংবিডি: কাজ করতে গিয়ে কি কখনো বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পরেছেন?

রোকেয়া আক্তার:  আলহামদুলিল্লাহ তেমন কোন ঝামেলায় পরিনি।

রাইজিংবিডি:  উদ্যোক্তা জীবন সফল হতে কার ভূমিকা বেশি ছিল?

রোকেয়া আক্তার:  আমার আম্মুর সাপোর্ট ছিল বেশি। আর আমার হাজবেন্ড এর। 

রাইজিংবিডি:  ব্যাবসা নিয়ে ভবিষ্যতে কতদুর যেতে চান এবং পরিকল্পনা কি?

রোকেয়া আক্তার: আমি চাই জামদানির জন্য কিছু করতে। জামদানি নিয়ে স্বপ্ন আমার অনেক। আমি চাই প্রতিটি উৎসব ও প্রতিটি ক্ষেত্রে জামদানি হবে প্রথম পছন্দ। জামদানি শুধু শাড়ি বিক্রি হবে তা নয়। এখানে আমার হাত ধরে যদি আর ও দুটি লোকের কর্মসংস্থান হয় আলহামদুলিল্লাহ এতেই আমার প্রাপ্তি। 

রাইজিংবিডি:  আপনার উদ্যোগের সফলতার কথা জানতে চাই।

রোকেয়া আক্তার: আমি সফল হয়েছি এ কথা বলতে চাই না। কারণ সফলতা শব্দের ব্যাপ্তি অনেক বড়। কিছু দুস্থ মহিলা আছেন, যারা সত্যি অসহায়। যেদিন এদের দুঃখের কিছুটা লাঘব করতে পারব সেদিন ই মনে হবে আমি পেরেছি সফল হতে আলহামদুলিল্লাহ। 

রাইজিংবিডি:  উদ্যোক্তা জীবনের শুরু কতদিন ধরে এবং আয় এবং বিক্রয় কেমন?

রোকেয়া আক্তার: আমার উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেছি এক বছরেরও বেশি হলো। দুই বছর হয়নি এখনো কিন্ত প্রায় কাছাকাছি। আমার এই পর্যন্ত জামদানি বিক্রি হয়েছে প্রায় ১৭ লাখ টাকারও বেশি। 

রাইজিংবিডি: ধন্যবাদ আপনাকে। 

রোকেয়া আক্তার:  রাইজিংবিডি ও আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ৷