উদ্যোক্তা/ই-কমার্স

কর্পোরেট চাকরিজীবী থেকে ই-কমার্স উদ্যোক্তা

তাবাসসুম তাবু। জন্ম, বেড়ে উঠা চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালীতে। কর্মজীবনের শুরুটা একটি করপোরেট হাউজের কাস্টমার সার্ভিস এক্সিকিউটিভ হিসেবে। ব্যবস্থাপনায় মাস্টার্স করা তাবাসসুম পরিবারের বড় সন্তান হওয়ায় কিছুটা দায়িত্ব নিয়েই বড় হয়েছেন।

যখন সংসারের নতুন অতিথির আগমন ঘটলো মানে তাবু’র কন্যা সন্তানের জন্ম হলো; তখনই তার মাথায় চিন্তার ভাজ! কারণ মেয়েকে দেখাশোনা করার মতো কেউ ছিল না। করপোরেট প্রতিষ্ঠানের নানান ঝক্কি-ঝামেলা সয়ে সন্তানকে সময় দিতে পারবে তো; এই ভেবে হতাশায় ডুবেছিলেন তিনি।

চাকরি ছাড়া কিছু করতে পারবেন, সেই সাহসও যখন ছিল না তার; ঠিক তখন ২০২০ সালের ২৭ জুন উদ্যোক্তা নির্ভর ফেসবুক গ্রুপ উইতে (উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম) যুক্ত হন তিনি। দেশের কর্মক্ষেত্রে ডে-কেয়ার পর্যাপ্ত না থাকা এবং পারিবারিকভাবে মা ছাড়া বাচ্চাকে অন্য কেউ কেমন যত্ন নেবে- এ ধরনের নানা সমস্যার কারণে ৯ মাসের মেয়েকে নিয়ে তাবাসুম উদ্যোক্তা জীবন শুরু করেন। 

ফেসবুক পেজ ‘সুতোর টান’র মাধ্যমে দেশীয় শাল, পাঞ্জাবি, কুর্তি, থ্রি-পিচ, শাড়ি, কাস্টমাইজড হ্যান্ড পেইন্ট কম্বো সেট, বেবি ড্রেস এবং মসলিন পোশাক আইটেম নিয়ে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। এছাড়াও তার পেজের অন্যতম ও সিগনেচার পণ্য ক্রাফিটিং (কাঠের মেডিসিন বক্স, রেহাল ও কোরআন কভার, জুয়েলারি বক্স, বাচ্চাদের কাঠের মানচিত্র পাজেল) আইটেমও রয়েছে। এতসব পণ্যের মধ্যে ‘কাঠের মানচিত্র পাজেল’র বিক্রিই মূলত অনেক বেশি ।

কেমন ছিল সেই সাহসী যাত্রা- জানতে চাইলে তাবাসসুম বলেন, ‘মাত্র ১০ হাজার টাকা দিয়ে উদ্যোক্তা জীবন শুরু করি। যা রোলিং করে এখন পর্যন্ত ১০ লাখ টাকার পণ্য অনলাইনেই বিক্রি করেছি। এই পথ মোটেও সহজ ছিল না। তবে এই টাকা সেল মানে পুরোটাই লাভ নয়। চাকরিজীবনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানো চেষ্টা করছি। আরও কীভাবে ভালো করা যায় সেজন্য প্রতিনিয়ত শিখছি। সফলতার পথে কেবল হাঁটতে শুরু করেছি’।

বলেন, ‘‘আমার স্বপ্ন ছিলো ‘সুতোর টান’ থেকে কেউ খালি হাতে ফিরবে না। সব ধরনের ক্লথিং পণ্য ক্রয় করতে পারবে। পরবর্তীতে নিজস্বতা বজায় রাখার জন্য কাঠের পণ্য সংযোজন করেছি এবং সকলের ভালোবাসা পেয়েছি।’’

তিনি স্বপ্ন দেখেন ‘সুতোর টান’ আলাদা একটা ব্র্যান্ড হোক। আকাশ সমান স্বপ্ন আর সকল ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছাতে চান তাবাসুম।

লেখক: স্বত্বাধিকারী, এসএস এগ্রো প্রোডাক্ট এবং চট্টগ্রাম বিভাগীয় কন্ট্রিবিউটর।