উদ্যোক্তা/ই-কমার্স

উদ্যোক্তা তৈরির ‘কারিগর’

প্রযুক্তির যুগে নিজেকে বদলে ফেলার এক অন্যতম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ও সোশ্যাল মিডিয়া। অনেক তরুণরা এই প্ল্যাটফর্মগুলোকে কাজে লাগিয়ে হয়েছেন উদ্যোক্তা, করছেন লাখ লাখ টাকা আয়। এমন একজন তরুণ উদ্যোক্তা শাহীন আহমেদ (২৪)।

শাহীন আহমেদ গাজীপুর মহানগরীর টেকনগপাড়ার বাসিন্দা। সে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী। 

‘চাকরি করব না, দেব’ এই স্লোগানে ওই তরুণ ২০২০ সালে করোনাকালে অনলাইন মাধ্যমে হোলসেলের ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর মেয়েদের কসমেটিক, ঘড়ি, ব্যাগের হোলসেল ব্যবসা শুরু করে। সে ‘YOURC’ নামে একটি ফেসবুক পেজ খুলে ব্যবসার পাশাপাশি নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি চেষ্টা করেন। কিছুদিনের মধ্যে সারাদেশের শতাধিক শিক্ষার্থী তার সাথে ব্যবসা শুরু করেন। বর্তমানে তার কাছ থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার প্রায় ৩ হাজারের অধিক গ্রাহক পণ্য নিয়ে ব্যবসা করছেন। এদের অনলাইনের মাধ্যমে উদ্যোক্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণ দেওয়া, উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তোলা, বিক্রির ব্যবস্থা করা এবং উদ্যোক্তাকে পরবর্তী ধাপে পৌঁছে দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

চট্টগ্রামের জান্নাতুল মিম্মা নামে এক উদ্যোক্তা বলেন, গত দুই বছর থেকে শাহীন আহমেদের YOURC পেজ থেকে পণ্য ক্রয় করি। সেসব পণ্য আমি বিক্রি করি। এতে আমার নিজস্ব অনেক গ্রাহক তৈরি হয়েছে। পণ্য অর্ডার করলে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে গাজীপুর থেকে চট্টগ্রামে পাঠিয়ে দেয়।

ঢাকার কাঁঠালবাগান এলাকার ডা. উম্মে কুলসুম আফসানা বলেন, আমার নিজের একটি পেজ আছে। সেটার মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করি। আমি দীর্ঘদিন ধরে YOURC গ্রুপ থেকে পণ্য কিনে ব্যবসা করছি। তাদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ও পেজে পণ্যের দাম ও ছবি দেয়। পরে আমরা সেটা দেখে অর্ডার করি। প্রথম অর্ধেক মূল্য পরিশোধ করি। পণ্য হাতে পাওয়ার পর পুরো টাকাটা পরিশোধ করি।

উদ্যোক্তা শাহীন আহমেদ বলেন, আমার স্বপ্ন উদ্যোক্তা তৈরি করা। এছাড়া নিজেকেও একজন সফল উদ্যোক্তা হিসাবে প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশে বর্তমান বেকারত্ব বেড়েই চলছে। আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টার মাধ্যমে যদি কিছু মানুষের আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়, সেটিই আমার কাছে চরম পাওয়া। অনেক শিক্ষার্থীর ব্যবসা করার ইচ্ছে আছে কিন্তু অর্থ নেই। আমি প্রাথমিকভাবে তাদের বিনা পুঁজিতে পণ্য সরবরাহ করেছি। পরে তারা ব্যবসা করে পণ্যের অর্থ ফেরত দিয়েছে। এখন তারা অনেকেই মাসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করেন।