পরিবেশ

পাখির জন্য ভালোবাসা

নিজস্ব প্রতিবেদক : আকাশে উড়ে বেড়ানো বাজপাখি বা সোনালি ঈগল পড়ে গেছে মাটিতে। আহত অবস্থায় এটি ডানা ঝাপটাচ্ছে, আর কাকের দল তাকে ঘিরে রেখেছে। এই ছিল পরিস্থিতি। সেখান থেকে বাজপাখিটিকে উদ্ধার করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডি ডটকমের কার্যালয়ে নিয়ে আসেন রাইজিংবিডিতে কর্মরত মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম।পাখিটিকে শুশ্রূষা দেওয়া হয়েছে।খাবার দেওয়া হয়েছে।ক্ষুধার্ত বাজ গোগ্রাসে গলাধঃকরণ করেছে মাংস ও মাছ। কথায় বলে, ‘একটি শিকারি বাজপাখি সব সময় রাজকীয় অতিথি’। সত্যিই বাজপাখি এখন অতিথি হয়েছে। তবে আহত অতিথি।একটি পা সে হারিয়ে ফেলেছে কোনো অঘটনে। এরই মধ্যে প্রাথমিক সেবা শুশ্রূষার পর যোগাযোগ করা হয়েছে আগারগাঁওয়ের বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষকের কার্যালয়ে। আশা করা হচ্ছে বিকেল নাগাদ পাখিটিকে নিরাপদ স্থানে পাঠানো যাবে। বাংলাপিডিয়া জাতীয় জ্ঞানকোষের তথ্যমতে, বাজপাখি (Falcon)  Ciconiiformes বর্গের Falconidae গোত্রের এক ধরনের দিবাচর শিকারি পাখি। চোখা পাখা, চৌকো লেজ, খাঁজকাটা ঠোঁট এদের বৈশিষ্ট্য। বাজপাখি বা ফ্যালকন বলতে Falco গণের প্রজাতিদেরই বোঝায়, যাদের সংখ্যা প্রায় ৩৮। বাংলাদেশের ৯ প্রজাতির মধ্যে ৫ প্রজাতি পরিযায়ী। ছোট পাখি ও ছোটখাটো অন্য জন্তু শিকারের জন্য অনেকে বাজপাখি পোষে। এ ধরনের শিকার প্রাচীন চীন, পারস্য ও মিশরের অধিবাসীরা জানত। পুরাকাল থেকেই মধ্যপ্রাচ্যে এই চর্চা চলেছে। এটি এশিয়া থেকে পূর্ব ইউরোপ হয়ে পশ্চিম ইউরোপে পৌঁছায়। সতেরো শতকের পর এই শিকারে ভাটা পড়ে। শিকারি বানানোর জন্য বাচ্চা অবস্থা থেকে এদের অনেক দিন কঠোর ও অবিরাম প্রশিক্ষণ দিতে হয়। ধৃত শিকার এরা স্পর্শও করে না এবং শিকারির হাতে স্থির হয়ে বসে থাকে। Falco pregrinus কাকের আকারের এক বাজপাখি। অনেক ওপরে উঠে চক্কর দিতে দিতে হঠাৎ ডানা ভাঁজ করে উড়ন্ত জলপিপি বা অন্য পাখিকে ছোঁ-মেরে ধরে। এদের গতি অত্যন্ত ক্ষিপ্র, শূন্যে ঘা মেরে শিকারকে কাবু করে এবং ছোঁ-মারার সময় গতিবেগ ঘণ্টায় ১৮০ কিলোমিটার (১১২ মাইল) পর্যন্ত পৌঁছায়, যা পাখিদের মধ্যে দ্রুততম। এ ধরনের শিকারে যত দিন রাজা-বাদশাহরা আকৃষ্ট ছিলেন তত দিন এটি ছিল সর্বাধিক জনপ্রিয়। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/হাসান/টিপু/এএন