ফাগুনের মলাট

‘নতুন বইয়ের খবর মাইকে ঘোষণার বিষয়টি দারুণ’

কমলিকা চক্রবর্তী। সংগীতশিল্পী। কলকাতার তারা টিভি, দূরদর্শন কেন্দ্র, বাংলাদেশের চ্যানেল আই, একুশে টেলিভিশনে নিয়মিত গান করে যাচ্ছেন। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-তে মঙ্গলবার আসেন বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে রাইজিংবিডি ডটকমের স্টলে। এ সময় গান ও বইমেলা নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাইফ বরকতুল্লাহ। রাইজিংবিডি : দেখতে দেখতে বইমেলা তিন সপ্তাহ পার হলো- কেমন দেখলেন? কমলিকা চক্রবর্তী : বইমেলা খুবই ভালো লাগছে। বইমেলাকে ঘিরে এত মানুষের এত উন্মাদনা, যা সত্যিকারভাবেই অন্যরকম লাগছে আমার কাছে। রাইজিংবিডি : কলকাতার বইমেলা আর অমর একুশে বইমেলার মাঝে কোনো পার্থক্য খুঁজে পান? কমলিকা চক্রবর্তী : কলকাতার বইমেলায় যেমন দেখেছি বই নিয়ে বিভিন্ন আলোচনা, এখানেও (ঢাকায়) সে রকম দেখতে পাচ্ছি।  তবে এখানে বই কেনার সংখ্যা অনেক বেশি দেখতে পাচ্ছি। রাইজিংবিডি : আপনি তো গান করেন, পাশাপাশি কী লেখালেখি করেন? কমলিকা চক্রবর্তী : লেখালেখি বলতে আমি কিছু গান লিখেছি। টুকটাক লিখি গান। রাইজিংবিডি : আপনার একটি অ্যালবাম বের হয়েছিল ‘রবিকথা’। এ সম্পর্কে কিছু বলবেন? কমলিকা চক্রবর্তী : ‘রবিকথা’ আমার জীবনের প্রথম অ্যালবাম। আমি কলকাতায় খুব নামকরা একজন সংগীত পরিচালক কল্যাণ সেন বরাট এবং আরেকজন বিখ্যাত মানুষ প্রতাপ রায় (মান্না দে যত গানের রেকর্ডিং করতেন, উনাকে নিয়ে সমস্ত কাজ করতেন। এমনকি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যয়, আরতী মুখোপাধ্যায়, এ ছাড়া স্বর্ণযুগের যে সিনেমার গানগুলো আছে সেগুলোতে কাজ করেছেন প্রতাপ রায়)। আমার সৌভাগ্য তাদের সঙ্গে কাজ করেছি। যার ফলে ‘রবিকথা’ অ্যালবামটা করতে পেরেছি। রাইজিংবিডি : আপনি কার কাছ থেকে গান শিখেছেন? কমলিকা চক্রবর্তী : আমার গানের গুরু হলেন পণ্ডিত দীননাথ মিশ্র, অজয় চক্রবর্তী, হৈমন্তী শুক্লা, কল্যাণ সেন বরাট, শংকর ঘোষাল। রাইজিংবিডি : আপনি রবীন্দ্রসংগীতের পাশাপাশি আর কী কী গান করেন? কমলিকা চক্রবর্তী : আমি সব ধরনের গান করি। প্রথমে আমি ক্ল্যাসিকেল সংগীতচর্চা করেছি। এরপর রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক সব ধরনের গান করছি। রাইজিংবিডি : গান শেখার অনুপ্রেরণা কার কাছ থেকে পেয়েছেন? কমলিকা চক্রবর্তী : প্রথম অনুপ্রেরণা তো আমার মা। বাবা প্রথমে গানবাজনা পছন্দ করতেন না। পড়াশোনার প্রতি মনোযোগী হতে বলতেন। তারপর বাবা দেখলেন আমার গান শেখা এবং অনেক পুরস্কার পাচ্ছি, তখন বাবা বেশি উৎসাহ দিতে লাগলেন। আর বিয়ের পরে তো হাজবেন্ড উৎসাহ দিচ্ছেন। বর্তমানে মলয় দাসের কাছে সব ধরনের গান নিয়ে চর্চা করছি। তিনি আমার সংগীতগুরু, ভীষণভাবে তিনি আমাকে উৎসাহ দিচ্ছেন।

রাইজিংবিডি : আপনি তো দুই বাংলাতেই গান করছেন। দুই বাংলার শিল্পীদের মধ্যে মেলবন্ধন নিয়ে আপনার ভাবনা? কমলিকা চক্রবর্তী : এ রকম একটা ভাবনা আছে। দুই বাংলাতেই ভালো গান করার পরিকল্পনা আছে। রাইজিংবিডি : সামনে আপনার নতুন কোনো অ্যালবাম আসছে? কমলিকা চক্রবর্তী : আপাতত নতুন কোনো অ্যালবাম করার ইচ্ছে নেই। এখন আমি স্টেজ শো বেশি করছি। তা ছাড়া, নতুন গান গাওয়ার ইচ্ছে আছে। সামনে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কাজ করার কথা হচ্ছে। ‘শেখ হাসিনার চোখে তার বাবা’ এই বিষয়ে গানের মাধ্যমে প্রজেক্টটা হবে। রাইজিংবিডি : এ প্রজন্মের অনেক শিল্পী ভার্চুয়াল গান নিয়ে কাজ করছেন। অনেকেই ইউটিউব চ্যানেল করেছে। আপনার কোনো পরিকল্পনা আছে? কমলিকা চক্রবর্তী : এখন সিডি প্রকাশের পাশাপাশি অনলাইনেও গানের কাজ হচ্ছে। কারণ ইউটিউবের মাধ্যমে গান আপলোড করে দিলে বিশ্বব্যাপী দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। রাইজিংবিডি : বইমেলা নিয়ে আপনার অনুভূতি? কমলিকা চক্রবর্তী : এখানে মাইকে ঘোষণা করে বিভিন্ন নতুন বইয়ের খবর, লেখকের খবর জানানো হয়। এই বিষয়টি খুব ভালো লাগে। কিন্তু কলকাতা বইমেলায় এটা দেখা যায় না। রাইজিংবিডি : কোনো বই কিনেছেন? কমলিকা চক্রবর্তী : না, এখনো কোনো বই কেনা হয়নি। তবে গান নিয়ে কিছু বই কিনব। রাইজিংবিডি : গান নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা? কমলিকা চক্রবর্তী : বাংলাদেশ তো বটেই, ভারতবর্ষেও যেন সবাই জানে কমলিকা চক্রবর্তীর নাম। ভালো গান করতে চাই।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/সাইফ/ইভা/এএন