ফাগুনের মলাট

লিটল ম্যাগাজিনের জন্য কর্মীরাই দায়ী: দীপঙ্কর গৌতম

দীপংকর গৌতম একজন সুপরিচিত কবি, প্রাবন্ধিক ও গবেষক। গতকাল শুক্রবার তিনি এসেছিলেন অমর একুশে গ্রন্থমেলায়। মেলা প্রাঙ্গণে রাইজিংবিডি ডটকমের স্টলে বসে তিনি কথা বলেছেন মেলার বিভিন্ন দিক নিয়ে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন অহ নওরোজ রাইজিংবিডি : প্রথমে এবারের মেলা আর গতবারের মেলার মধ্যে পার্থক্য জানতে চাই। দীপংকর গৌতম : আসলে কি, এবারের মেলার মূল যে বিষয়টি চোখে পড়ছে সেটি হলো সাজানো গোছানো। গত বছরের চেয়ে এ বছরের মেলা সাজানো গোছানো ভালো হয়েছে। স্টলে মাঝে মাঝে ফাঁক আছে সেখানে লেখক পাঠকেরা বসে আড্ডা দিতে পারছেন। কারো সাথে কারো ধাক্কা লাগছে না। একটা বইয়ের স্টলের পাশে দাঁড়িয়ে মানুষের সাথে সাক্ষাৎ করা যায়, যেটা আসলে বইমেলায় হওয়া উচিত। রাইজিংবিডি :  এবার আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন মেলার সাথে যুক্ত হলো, বিষয়টি আপনি কীভাবে দেখছেন? দীপংকর গৌতম : আসলে বাংলা একাডেমি যে কীভাবে কী করে সেটা বোঝায় দায়। আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন মানে তো বড় ব্যাপার। কিন্তু এই যে সম্মেলন হলো এটা বাংলা একাডেমি ছাড়া আর কেউ জানে না। আমরা জেনেছি অনেক পরে। কিন্তু এমন তো হওয়া উচিত নয়। আমরা প্রত্যেকে যেমন পিঠা পার্বণের উৎসবে মিলিতভাবে যোগদান করি, সাহিত্য সম্মেলনও তো তেমন হওয়া উচিত। সবাই একসাথে মিলিত হয়ে যোগদান করবে কিন্তু সেটা হয়নি। আসলে সেটা হওয়া উচিত। নাহলে এই সাহিত্য সম্মেলনের অর্থ কী! রাইজিংবিডি : মেলা প্রসঙ্গে আসি, এবারের মেলা নিয়ে কি আপনি সম্পূর্ণ তৃপ্ত? দীপংকর গৌতম : আসলে বিন্যাস ভালো হয়েছে বলেই যে মেলা একদম সম্পূর্ণ ভালো হয়েছে তা কিন্তু নয়। অনেকের আক্ষেপ রয়েছে এখানে পানি খাওয়ার জায়গা নেই, পর্যাপ্ত ওয়াশরুমের ব্যবস্থা নেই। এটা তো হতে পারে না। এটা হওয়া উচিতও নয়। সিটি করপোরেশনকে বললে তো সিটি করপোরেশন দিয়ে যেত। কিন্তু বাংলা একাডেমির সে বিষয়ে মাথা ব্যথা নেই, তাদের সম্ভবত ইচ্ছা নেই। বিশেষ করে মেলার বিভিন্ন স্থানে পানি খাওয়ার ব্যবস্থা থাকা উচিত ছিল।

 

রাইজিংবিডি : কথা উঠেছে লিটল ম্যাগাজিন চত্বরের অব্যবস্থাপনা নিয়ে। এই বিষয়ে আপনার মতামত কী? দীপংকর গৌতম : আসলে লিটল ম্যাগাজিনের যে আন্দোলনটা সেটাই প্রখর না। এর কর্মীরাও সংঘবদ্ধ নয়। যে কারণে লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে এমন হেলাফেলা হওয়ার সুযোগ আছে এবং প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। আমাদের দেশে লিটল ম্যাগাজিন আন্দোলনের আগে যে অবস্থা ছিল, সেই সূত্র ধরে বর্তমানে যে অবস্থায় যাওয়ার কথা ছিল লিটল ম্যাগাজিন সেখানে না গিয়ে চলে গেছে অন্য জায়গায়। আন্দোলন বিষয়টি সেখানে নেই আর কর্মীদেরও একতা নেই। যে কারণে এটা হয়ে চলেছে। এর জন্য বাংলা একাডেমি যতটুকু দায়ী তার থেকে বেশি দায়ী এর কর্মীরা। আর লিটল ম্যাগাজিন নিয়ে আসলে এমন হেলাফেলা করা ঠিক না, তাদের সল্প আলো দেওয়া হয়েছে এবার। এ ছাড়া বসার জায়গা দেওয়া হয়নি, আছে আরো সমস্যা। কিন্তু এটা করা ঠিক না। কারণ লিটল ম্যাগাজিনের মাধ্যমে লেখক তৈরি হয়। এটা অনেক গুরুত্ববহন করে। এটাকে নিয়ে চিন্তা করা উচিত। রাইজিংবিডি : এবারের মেলায় কী ধরনের বই কিনবেন? দীপংকর গৌতম : আমি আসলে সেই বই কিনি যেটা পড়ে আমি আরো দু কথা লিখতে পারব। তবে এবারে প্রবন্ধের বই এবং গবেষণার বই বেশি কিনব। তরুণদের বইও কিনব। এখনো পুরদমে শুরু করিনি। রাইজিংবিডি : এতক্ষণ সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। দীপংকর গৌতম : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/অহ/এসএন