ফাগুনের মলাট

বইমেলায় সাড়া জাগিয়েছে ‘আমার দেখা আমার লেখা’ প্রবন্ধ

নিজস্ব প্রতিবেদক : খ্যাতিমান সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রতনের ‘আমার দেখা আমার লেখা’ প্রবন্ধ এবার অমর একুশে গ্রন্থ মেলায় সাড়া জাগিয়েছে। ২১ ফেব্রুয়ারি বই মেলায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রবন্ধের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা দেশ বরেণ্য সাংবাদিক ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বলেন, ‘বই লেখা ও প্রকাশ করা একটি মহৎ কাজ। বই পড়ার মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানই মন ও মননশীলতাকে পরিমার্জিত করে, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটায় এবং দেশপ্রেমকে সুদৃঢ় করে।’ তিনি বলেন, ‘বই হোক আপনার নিত্যসঙ্গী- এই ব্রতকে ধারণ করে আপনি যদি জানার আগ্রহ নিয়ে নিয়মিত অধ্যবসায় অব্যাহত রাখেন তবে আপনি একজন পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে দেশ ও সমাজহিতৈষী হয়ে গড়ে উঠবেন। তাই মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে একুশের গ্রন্থমেলায় সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রতনের ‘আমার দেখা আমার লেখা’ বইয়ের প্রকাশনা ও মোড়ক উšে§াচন নিঃসন্দেহে একটি মহৎ কাজ এবং আনন্দ অনুষ্ঠান।’ এসময় দৈনিক বর্তমানের উপদেষ্টা সম্পাদক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের সাবেক প্রেস মিনিস্টার স্বপন কুমার সাহা, জাতীয় প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দৈনিক সমকালের সিটি এডিটর শাহেদ চৌধুরী, বইয়ের লেখক সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রতন এবং লেখা প্রকাশের স্বত্বাধিকারী বিপ্লব ফারুক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। লেখক রফিকুল ইসলাম রতন ১৯৬১ সালের ১ জানুয়ারি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নগরবাড়ী গ্রামে ঐতিহ্যবাহী তালুকদার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মৃত মোজাফ্ফর আলী তালুকদার ও মাতা হাজেরা খাতুন। সাংবাদিক রফিকুল ইসলাম রতন তিন ভাই ও চার বোনের সর্বকনিষ্ঠ। তার বড় ভাই বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজহারুল ইসলাম তালুকদার (ঠা-ু) কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও কালিহাতী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তিনি কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া টি আর কে এন উচ্চ বিদ্যালয়ের সাহিত্য ম্যাগাজিন ‘হাতেখড়ি’তে (১৯৭৪ সাল) কবিতা ও প্রবন্ধ লিখেছেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শ্রেণির ছাত্র থাকাকালীনও তিনি নিয়মিত টাঙ্গাইল জেলার প্রথম পাক্ষিক পত্রিকা ‘টাঙ্গাইল সমাচার’ এ লিখতেন (১৯৭৬-৭৮) এবং সৌখিন রিপোর্টার হিসেবে সংবাদ লিখেছেন। পরবর্তী সময়ে তিনি অধুনালুপ্ত সরকারি ট্রাস্টের পত্রিকা ‘দৈনিক বাংলার’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক সাংবাদিকতা শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর রফিকুল ইসলাম রতন ১৯৮৪ সালে টাঙ্গাইলে অবস্থানকালে জেলার প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘ঝংকার’ এর বার্তা সম্পাদক, ‘সাপ্তাহিক টাঙ্গাইল বার্তার’ নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক বাংলার টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় টাঙ্গাইল জেলার প্রথম দৈনিক পত্রিকা ‘দৈনিক মফস্বল’ প্রকাশে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন এবং ব্যবস্থাপনা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী কালে তিনি দৈনিক বাংলার ঢাকা অফিসে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৯৭ সালে পত্রিকাটি বন্ধের দিন পর্যন্ত সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দৈনিক বাংলা বন্ধ হওয়ার পর রফিকুল ইসলাম রতন দৈনিক বাংলার বাণীর বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে প্রায় দেড় বছর ভারপ্রাপ্ত চিফ রিপোর্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৯৯ সালে দৈনিক যুগান্তরের জন্ম পরিকল্পনার সময়েই বিশেষ সংবাদদাতা হিসেবে যোগদান করেন। এই পত্রিকায় তিনি একটানা সাড়ে ৯ বছর চিফ রিপোর্টার হিসেবে এবং পরে ডেপুটি এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি এখন দৈনিক বর্তমান পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

 

সাংবাদিকতা ছাড়াও রফিকুল ইসলাম রতন বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। নিজ এলাকায় একজন সদালাপী এবং পরোপকারী মানুষ হিসেবে পরিচিত। বর্ণাঢ্য জীবনে এটি তার মৌলিক গ্রন্থ হলেও তিনি বিভিন্ন সময় অনেক ম্যাগাজিন ও বইয়ের প্রকাশনার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। লেখক রফিকুল ইসলাম রতন বলেন, ‘তিন দশকেরও বেশি সময়ের সাংবাদিকতার বিচিত্র অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা বিভিন্ন বিষয়ের ওপর প্রবন্ধ সংকলন এই বইটি। এখানে যেমন উঠে এসেছে বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস, ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, ঐহিত্য, সংস্কৃতি, ত্বত্ত ও তথ্যের অনুসন্ধ্যান, সাংবাদিকতা, গণজাগরণ, তেমনি আছে নোবেল পুরস্কার অনুষ্ঠান, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলন, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বর্ণাঢ্য জীবন, প্রখ্যাত সাংবাদিকদের বিদায় বেলার স্মৃতিচারণ, নিজ জেলা টাঙ্গাইলকে নিয়ে বিভিন্ন লেখা, আছে ফুটবল ও ক্রিকেটসহ নানা বিষয়। আমি আশা করছি বইটি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মনের খোরাক মেটাতে সহায়তা করবে।’ প্রকাশক বিপ্লব ফারুক বলেন, ‘আমার দেখা আমার লেখা বইটি প্রকাশ করতে পেরে আমি আনন্দিত। ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, সাংবাদিকতা, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও মনীষীদের স্মরণসহ বিচিত্র বিষয়ের ওপর লেখা প্রবন্ধটি একুশে বইমেলাসহ পাঠক সমাজে সর্বত্র সমাদৃত হচ্ছে। বইটি মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের লেখা প্রকাশের ৬৪৩ নম্বর স্টলসহ বিভিন্ন স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। বইয়ের ভূমিকা লিখেছেন বিশিষ্ট সাংবাদিক ও প্রখ্যাত কবি সাজ্জাদ কাদির এবং প্রচ্ছদ এঁকেছেন বিশিষ্ট শিল্পী সৈয়দ লুৎফুল হক।  রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/কাজল আর্য/শাহনেওয়াজ