ফাগুনের মলাট

‘কালু শাহ্ শিল্পীগোষ্ঠী’র পরিবেশনায় শেষ হলো গ্রন্থমেলার ২৩তম দিন

নিজস্ব প্রতিবেদক : আজ শুক্রবার ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলার-২০১৮’ এর ২৩ তম দিন ছিল। বিকেল থেকেই মেলায় লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠে একুশে গ্রন্থমেলা। সন্ধ্যার পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আজকের ছুটির দিনটি মাতিয়েছে ‘কালু শাহ্ শিল্পীগোষ্ঠী’ ও ‘বাংলাদেশ আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী’। ‘কালু শাহ্ শিল্পীগোষ্ঠী’র পরিচালনা করেন মো. মফিজুল ইসলাম ও ‘বাংলাদেশ আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী’র পরিচালনা করেন সালাউদ্দীন বাদল। এতে সংগীত পরিবেশন করেন সমর বড়ুয়া, সালমা চৌধুরী, আহাদ চৌধুরী, আমিরুল ইসলাম এবং রীতা ভাঁদুরী। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তবলায় ছিলেন বাবু জামান এবং আজিজুর রহমান ছিলেন কী-বোর্ডে। একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় দক্ষিণ এশিয়ার কবিতা শীর্ষক আলোচনাপর্ব। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অধ্যাপক কায়সার হক। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন নেপালের লেখক আভি সুবেদি,  কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, অধ্যাপক সোনিয়া নিশাত আমিন এবং কবি সাদাফ সায। বক্তারা বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার কবিতা ব্যক্তিগত অনুভব এবং সমষ্টিক অঙ্গীকার উভয় সত্যকে ধারণ করে নতুন শতকে নবতর ভাষা ও আঙ্গিকে প্রকাশমান।’ মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ২৬৬টি। ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত গ্রন্থমেলায় ছিল শিশুপ্রহর। দুপুর ১২টায় দক্ষিণ এশিয়ার ভাষা এবং অনুবাদ শীর্ষক সমাপনী আলোচনা পর্বে বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক আবদুস সেলিম।আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন রাশিদ আসকারী, ফায়েজা হাসানাত এবং জি এইচ হাবীব। বক্তারা বলেন, ‘অনুবাদের মধ্য দিয়ে যেমন দক্ষিণ এশিয়ার সাহিত্য পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে তেমনি মূলভাষা ব্যতীত ইংরেজি থেকে ঢালাও অনুবাদের ফলে পাঠক সাহিত্যের প্রকৃত রস থেকে বঞ্চিতও হয়। সেজন্য অনুবাদের ক্ষেত্রে ইংরেজির পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয় নানাভাষার পারস্পরিক অনুবাদও অত্যন্ত জরুরি।’ বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে ছিল শওকত আলীর সাহিত্যসাধনা শীর্ষক আলোচনানুষ্ঠান।প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আবু হেনা মোস্তফা এনাম।আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফারজানা সিদ্দিকা এবং তারেক রেজা। এতে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম। প্রাবন্ধিক বলেন, ‘শওকত আলীর সৃষ্টিক্ষমতায় এবং ব্যক্তিজীবনের প্রগতিশীল রাজনৈতিক মতাদর্শ ও সক্রিয় কর্মোন্মুখ চৈতন্যের লুব্ধ আলো মৃত্যুর পরও তাকে দেবে নতুন স্থান।শওকত আলী কোন্ জীবনাভিজ্ঞতা, কোন্ জীবনদর্শনের গল্প বয়ান করেছেন তার সমকালের রূপান্তরক্রিয়া নির্মাণের এই সূত্রটি আবিষ্কার করা প্রয়োজন। কেননা সময়ের অদৃশ্য নিঃশ্বাসে আন্দোলিত হয় বস্তু, ব্যক্তি ও সমাজ। বস্তু ও ব্যক্তির অস্তিত্ব ও বিকাশের সমস্ত সূত্র তাই মূর্ত হয়ে ওঠে সমাজ-সংগঠনে, সময়ের পরিচিহ্নে।’ তিনি আরো বলেন, ‘শওকত আলী সাহিত্যসাধনা, বিশেষত কথাসাহিত্য সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলে আমাদের উপর্যুক্ত বৈশ্বিক ও বাংলাদেশের সমকালীন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক রূপান্তরের ইতিবৃত্তের মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’ সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘শওকত আলী জনপ্রিয় হওয়ার জন্য কলম ধরেননি।তিনি বাস্তবতাবিবর্জিত কোনো গল্প, উপন্যাস কখনোই লিখেননি। শওকত আলী উপন্যাসকে কালের দর্পণ ভাবতেন। তার মতো জীবনঘনিষ্ঠ লেখক সত্যিই বিরল।’ 

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/রাহাত/এসএ