ফাগুনের মলাট

মাইন উদ্দিন পাঠানের ‘চেতনার চার নাটক’

নাটক জনগণের মাঝে ইতিবাচক মানসিকতা সৃষ্টি, নেতিবাচক কাজ থেকে দূরে থাকার এক অনন্য মাধ্যম।

নাটকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয় সামাজিক কুসংস্কার, সমাজের অন্ধকার, সচেতনতার ঘাটতি, ধর্মান্ধতা, অবহেলিত জনগোষ্ঠী, শোষণ বঞ্চনার শিকার মানুষের গল্প। যা সমাজকে ইতিবাচক পরিবর্তনে সাহায্য করে আসছে যুগ যুগ ধরে। সমাজের অন্ধকারের নানা চিত্র তুলে ধরার প্রয়াস চালিয়ে যান নাট্যকাররা। তাদের মধ্যে একজন অধ্যাপক মাইন উদ্দিন পাঠান।

তিনি নাটক লেখেন। পাশাপাশি নাটক নির্মাণে নির্দেশনা দেন। আর এভাবেই নিজের নামের সাথে নাট্যকার শব্দটির মিশেল করেছেন তিনি।

এবারের মেলায় চারটি নাটক নিয়ে বের করেছেন ‘চেতনার চার নাটক’ নামে একটি বই। ‘দহল, সংক্রান্তি, দিন বদলের পালা, ১৯৪৬’ এই চারটি নাটক নিয়ে বের হয় বইটি। বাংলা একাডেমির একুশে গ্রন্থমেলায় পাওয়া যাচ্ছে বইটি।

নাটক দহলে উঠে এসেছে, তারুণ্যের বিপথগামিতা। সহজ, সরল মেধাবী তরুণরা কীভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী সম্পদ ও প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিদের চক্রান্তে বিপথগামী হয়, তার এক আখ্যান এ নাটক।

নাটক সংক্রান্তিতে দেখানো হয়েছে, দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কীভাবে একটি মেধাবী তরুণের সম্ভাবনাময় জীবনকে ধ্বংস করে দেয়। শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডের সামনে আজ অসহায়।

নাটক ‘দিন বদলের পালা’তে উঠে এসেছে, একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আবার মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে পর্যদুস্ত করে তাদের পরাজয়ের বদলা নিতে চায়। অনেকটা সফলও হয়েছে তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের আশা পূরণ হয় না। কারণ দিন যে বদলে গেছে৷ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বলীয়ান হয়ে নতুন প্রজন্ম এগিয়ে চলেছে।

আর শেষ নাটক ১৯৪৬ এ তুলে ধরা হয়েছে বৃহত্তর নোয়াখালী অঞ্চলের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়ের কথা।

‘চেতনার চার নাটক’ বইটির ভূমিকা লিখেছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার। আর প্রসঙ্গ কথা লিখেছেন এবার বাংলা একাডেমির সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত, ড. রতন সিদ্দিকী।

মাইন উদ্দিন পাঠান একজন শিক্ষাবিদ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের সদ্য বিদায়ী অধ্যক্ষ। ১৯৬১ সালের জেলার বায়পুর উপজেলার উত্তর রায়পুর গ্রামের পাঠান পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা/ইভা