অন্য দুনিয়া

ত্রাণ নিতে ঘুষ দিতে হচ্ছে বগুড়ার বানভাসিদের

বগুড়া প্রতিনিধি : বগুড়ায় বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও জনভোগান্তি এখনো চরমে। পানিবাহিত রোগে আক্রান্তদের অনেকে পড়ে রয়েছেন খোলা আকাশের নিচে। চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না তারা।

 

এদিকে সামান্য ত্রাণ নিতে ঘুষ দিতে হচ্ছে স্থানীয় নেতা আর জনপ্রতিনিধিদের,  অভিযোগ বানভাসিদের। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বানভাসি মানুষের এমন দুর্ভোগের চিত্র।

 

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টির ফলে গত দুই সপ্তাহ পূর্বে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি- ফসলি মাঠ তলিয়ে যায়। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় যমুনা নদী সংলগ্ন বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার চন্দনবাশাইশা ইউনিয়নের ঘুঘুমারি, শেখপাড়া, কুতুবপুর ইউনিয়নের বয়রাকান্দি, ধলাকান্দি, কামালপুর ইউনিয়নের দড়িপাড়া, ইছামারি, রহদহ, গোদাখালী, ধূনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের উত্তর শহরাবাড়ি, দক্ষিণ শহরাবাড়ি, শিমুলবাড়ি, রাধানগর, বৈশাখী বথুয়াভিটা, বানিয়াজান, কৈয়াগাড়ি, রঘুনাথপুর, ভুততবাড়ি, পুকুরিয়া ও মাধবডাঙ্গাসহ ৩০টি গ্রামের বাসিন্দরা।

 

তাদের একমাত্র আশ্রয়স্থল বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর পলিথিনের তৈরি ঝুপড়ি ঘর। যেখানে গবাদিপশুর সঙ্গেই বসবাস তাদের। বিশুদ্ধ পানি আর খাবারের চরম সংকট দেখা দিয়েছে তাদের। ফলে অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন পানিবাহিত রোগে।

 

আব্দুল মজিদ নামের এক কৃষক জানান, তিনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন তিনদিন পূর্বে। মাটিতে খড় বিছিয়ে শুয়ে আছেন। তার পাশেই বাঁধা রয়েছে গবাদিপশু। এপর্যন্ত আধা কেজি চিড়া আর গুড় পেয়েছেন।

 

মরিয়ম বিবি নামের এক গৃহবধূ জানান, এখানকার কিছু নেতা আর মেম্বারদের ঘুষ দিলেই ত্রাণ মিলে। অথবা ত্রাণের অর্ধেকই তাদের দিয়ে দিতে হয়।

 

আজিরন, কুলসুমসহ অনেকেই অভিযোগ করেন, তাদের সন্তানরা ডায়রিয়া, জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হয়েছেন।

 

তাদের অভিযোগ বন্যা দুর্গতের জন্য মেডিক্যাল টিম থাকলেও ওধুষ মিলছেনা তাদের ভাগ্যে। আবার ত্রাণ নিতে হলে অর্ধেকই দিয়ে দিতে হয়। দেখার যেন কেউ নাই।

 

বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) খোরশেদ আলম রাইজিংবিডিকে জানান, এ পর্যন্ত ৫০ মেট্রিকটন ত্রাণ দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি আর রাজনৈতিক নেতাদের সমন্বয়ে ত্রাণের তালিকা প্রণয়ন করা হয়ে থাকে। যদি এতে কোনো প্রকার অনিয়ম হয়ে থাকে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ওষুধের পরিমাণ বাড়াতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

     

সারিয়াকান্দি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল মোতালিব রাইজিংবিডিকে জানান, বন্যার পানি অনেকটাই কমেছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বাড়ি ফিরতে পারবেন বন্যা কবলিতরা।

     

রাইজিংবিডি/বগুড়া/১ সেপ্টেম্বর  ২০১৫/একে আজাদ/রুহুল

 

ক্যাপশন : বাঁধে বন্যাকবলিতদের ঝুপড়ি