অন্য দুনিয়া

বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র : চট্টগ্রামের প্রতীক

রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম : দেশের প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র বন্দরনগরী চট্টগ্রামে দেশের প্রথম বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের (ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার) কার্যক্রম চালু হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার এই বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র উদ্বোধন করবেন।

 

এর মাধ্যমে বিশ্বের ৩২৭টি বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম। 

 

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের নিজস্ব অর্থায়নে নগরীর আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই বাণিজ্য কেন্দ্রটি নির্মিত হয়েছে। উদ্বোধনের পর এটি চট্টগ্রামের প্রতীক (সিম্বল অব চিটাগাং) হিসেবে বিবেচিত হবে বলে দাবি করছে চট্টগ্রাম চেম্বার।

 

চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি মাহবুবুল আলম রাইজিংবিডিকে জানান, বিশ্বে ৩২৭টি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার আছে। চট্টগ্রামে নির্মিত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারটি হবে ৩২৮তম। প্রায় ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে দেশের এই বৃহৎ বাণিজ্যিক অবকাঠামো। ২৪ তলা বিশিষ্ট ভবনটিতে রয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের যাবতীয় আয়োজন। এই সেন্টারে থাকছে ৫ কোটি টাকায় নির্মিত বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের বিশালাকারের প্রদর্শনী কেন্দ্র। ১৩৮টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের উৎপাদিত পণ্যের প্রদর্শনী হবে এই কেন্দ্রে।

 

চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উচ্চতা প্রায় ৯১ মিটার বা ২৯৮ ফুট। এটি দেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক কেন্দ্র। বর্তমানে এটি চট্টগ্রামের সর্বোচ্চ বাণিজ্যিক ভবনও। এই ভবনে আছে তিনটি বেসমেন্ট। নিচতলায় ব্যাংক ও অস্থায়ী এক্সিবিশন হল। দ্বিতীয় তলায় ব্যাংক, শপিংমল ও ফুডকোর্ট; তৃতীয়, ষষ্ঠ ও সপ্তম তলায় অফিস, চতুর্থ তলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী এক্সিবিশন হল; পঞ্চম তলায় আইটি জোন, ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড ইনস্টিটিউট, সভাকক্ষ ও মিডিয়া সেন্টার; অষ্টম তলায় হেলথ ক্লাব, ব্যাংকুইট হল ও স্নোকার রুম; নবম তলায় টেনিস কোর্ট, সুইমিংপুল ও কনফারেন্স রুম এবং ১০ থেকে ২০ তলা পর্যন্ত পাঁচ তারকা মানের হোটেল। এ ছাড়া ২৪ তলায় রয়েছে হেলিপ্যাড সুবিধা। পাঁচ তারকা হোটেল হিসেবে বিশ্ববিখ্যাত চেইন হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে চট্টগ্রাম চেম্বার কর্তৃপক্ষ।

   

চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘কোনো ধরনের ব্যাংক ঋণ ছাড়াই ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারটি নির্মিত হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারটি ‘সিম্বল অব চিটাগাং’-এ পরিণত হবে। এটি শুধু চট্টগ্রামের নয়, সারাদেশের গর্ব। বিশ্বমানের বন্দরের জন্য বিশ্বমানের শহর দরকার। বিশ্বমানের শহরের জন্য প্রয়োজন অবকাঠামো। এই ক্ষেত্রে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে একধাপ এগিয়ে যাব আমরা।’

 

চট্টগ্রামের বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রের যেসব সুবিধা থাকবে, তার বিবরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘এটি শুধু একটি ভবন নয়, এখানে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক সুযোগ-সুবিধা থাকবে। ভবনের পঞ্চম তলায় ১৩২টি শোকেসে রফতানি পণ্য প্রদর্শন করা হবে। প্রয়োজনে ভবনের আরো তিনটি মেঝেতে রফতানি পণ্য প্রদর্শনের জন্য বরাদ্দ রাখা হবে। অনলাইনেও যে কেউ নমুনা দেখে পণ্য কিনতে পারবেন। ব্যবসায়ীসহ বিদেশি উদ্যোক্তাদের ব্যবহারের জন্য চেম্বার থেকে একটি হেলিকপ্টারও কেনা হবে।’

   

রাইজিংবিডি/চট্টগ্রাম/২৯ জানুয়ারি ২০১৬/রেজাউল/রফিক