অন্য দুনিয়া

চোখের ভেতর ট্যাটু

এস এম গল্প ইকবাল: বছরজুড়ে কত ঘটনাই না ঘটে। অনেক ঘটনা এতটাই আমাদের অবাক করে যে, সেগুলো অনেকদিন মনে থাকে। বিশেষ করে সেগুলো যদি মেডিকেল সায়েন্স বিষয়ক হয় তাহলে তো কথাই নেই। ২০১৭ সালের অদ্ভুত কিছু ঘটনা নিয়ে এ প্রতিবেদনের পড়ুন তৃতীয় পর্ব। ক্যাট গ্যালিঙ্গার নামে ২৪ বছর বয়সি এক মডেল আই বলে ট্যাটু করার পর মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হন। বিশেষজ্ঞদের মতে, আই বলে ট্যাটু করার এই পদ্ধতি অনিরাপদ। ক্যাট গ্যালিঙ্গারের চোখের সাদা অংশে পার্পল ট্যাটু ইনক ইনজেক্ট করা হয় এবং এ চর্চা ‘স্ক্লেরা ট্যাটুয়িং’ নামে পরিচিত। কিন্তু তিনি এরপর ঝাপসা দৃষ্টি, চোখ ব্যথা, চোখ ফোলা এবং চোখ থেকে পানি ঝরার মতো মারাত্মক উপসর্গের সম্মুখীন হন। গ্যালিঙ্গারের ফেসবুক পোস্ট থেকে জানা যায়, চোখের ব্যথা উপশম করতে তাকে অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েডসহ কিছু ওষুধ সেবন করতে হয় এবং পরবর্তী সময়ে বাধ্য হয়ে তাকে সার্জারির চাকুর নিচে চোখ রাখতে হয়।  তিনি জানান, সার্জারির পর শেষ পর্যন্ত তার চোখ ভালো হয়ে যায় এবং পূর্বের তুলনায় কম ব্যথা অনুভব করেন। কিন্তু ট্যাটু নিয়ে তারপরও বছরজুড়ে কম আলোচনা হয়নি। এ বছর শেষের দিকে ফ্লোরিডার একজন লোকের অস্বাভাবিক ট্যাটু নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। লোকটিকে অজ্ঞান অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় এবং তার বুকে ‘জ্ঞান ফিরিয়ে আনবেন না’ লেখা ট্যাটু ছিল।  

এরপরই চিকিৎসকরা দুই দলে বিভক্ত হয়ে পড়েন। তারা বুঝতে পারছিলেন না, এ অবস্থায় রোগীর জ্ঞান ফিরিয়ে আনা ঠিক হবে কিনা? একদল মনে করেন, রোগীর অনুমতি ছাড়া কাজটি করা ঠিক হবে না। যেহেতু তার শরীরে এরকম কথা লেখা আছে। অন্য দলের ভাষ্য তাদের অবশ্যই যে কোনো উপায়ে রোগীর সংজ্ঞা ফিরিয়ে আনা উচিত। একজন মেডিকেল নৈতিকতা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের এ সময় রোগীর ট্যাটুকে সম্মান জানাতে উপদেশ দেন। পরবর্তী সময়ে দেখা যায়, লোকটি আসলেই ফ্লোরিডা ডিপার্টমেন্ট অব হেলথ থেকে অফিসিয়াল ‘জ্ঞান ফিরিয়ে আনবেন না’ অর্ডার নিয়েছিল। খুব দ্রুত তার অবস্থার অবনতি হয় এবং কোনোরকম লাইফ-সাপোর্ট মেথড ছাড়া ইচ্ছানুসারে তিনি মারা যান। দ্য নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে গত ৩০ নভেম্বরে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিতর্কের ঝড় ওঠে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ ডিসেম্বর ২০১৭/ফিরোজ/তারা