অন্য দুনিয়া

এক প্রতিষ্ঠানে ৮৪ বছর, জানালেন অনুগত কর্মী হওয়ার কৌশল 

ওয়াল্টার ওর্থম্যান। শতবর্ষী এই ব্রাজিলিয়ান সম্প্রতি গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এ নাম লিখিয়েছেন। জানিয়েছেন এর পেছনের কারণ। 

বিশ্বের সবচেয়ে অনুগত কর্মীর খেতাব জিতে এই রেকর্ড গড়েছেন ওয়াল্টার ওর্থম্যান। মাত্র পনেরো বছর বয়সে ইন্ডাস্ট্রিয়াস রেনাক্স এস.এ. নামের একটি টেক্সটাইল কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন তিনি। শিপিং বিভাগে সহকারী হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। তবে পরে প্রশাসন বিভাগে সহকারী ও বিপণন ব্যবস্থাপক হিসেবে পদোন্নতি পান। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো— এই প্রতিষ্ঠানে গত ৮৪ বছর অর্থাৎ ৭ যুগ ধরে কাজ করছেন তিনি। দীর্ঘ কেরিয়ারে বিপণন কাজে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরেছেন। নয়টি আলাদা মুদ্রায় বেতন পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, ব্রাজিলের প্রায় সব বাণিজ্যিক এয়ারলায়েন্সে তিনি ভ্রমণ করেছেন।        

ওয়াল্টার ওর্থম্যান বলেন, ‘কাজকে ভালোবাসতে হবে। আমি সেই ইচ্ছাশক্তি ও উদ্দীপনা নিয়েই কাজ শুরু করেছিলাম।’ আট দশক ধরে চাকরি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘কাজ করছি’ এ কথা ভেবে কোনো কাজই করতে পারবেন না। সেটি ভাবলে কখনোই টিকে থাকতে পারবেন না। নিত্যনতুন পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়ন- এই হলো মূল কথা।’’  

চলতি বছর ফেব্রুয়ারিতে একই প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশিদিন চাকরি করায় ওর্থম্যানের রেকর্ডটি গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ডে যুক্ত করা হয়। গত ১৯ এপ্রিল ১০০ বছর পূর্ণ করলেন তিনি। তবে এখনো এই প্রতিষ্ঠান থেকে অবসর নেওয়ার পরিকল্পনা তার নেই। 

ওর্থম্যান জানান, তিনি যখন ওই কোম্পানি কাজ শুরু করেন তখন কোনো কম্পিউটার ও ফোন ছিল না। টাইপরাইটারের মাধ্যমে লিখে চিঠি পাঠাতে হতো। রাস্তায় ল্যাম্প পোস্ট ছিল না। বৃষ্টি হলে রাস্তায় কাদা হতো। তবে এখন পরিস্থিতি বদলে গেছে। তার মতে, এখন মোবাইল ও ইন্টারনেট কানেকশন থাকলেই বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে যোগাযোগ করা যায়।

দীর্ঘদিন ধরে যারা কাজ করতে চান তাদের পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, ‘কখনোই রাগ করা যাবে না। হাসিমুখে সব করতে হবে। যা পছন্দ করবেন সেটিই করতে হবে। আমি এখানে কাজ করি। আমার কোনো শত্রু নেই। ক্ষমা চাইবেন। শান্তভাবে থাকবেন। পৃথিবীতে আমরা ক্ষণিকের অতিথি। এটি উপভোগ করুন। যা মন চায় সেটিই করুন।’