অন্য দুনিয়া

দৌড় শেষ করতে ৫৫ বছর

ম্যারাথন যত লম্বাই হোক কত সময়েরই-বা হয়ে থাকে? কয়েক ঘণ্টা বা একদিন। তাই বলে একটি ম্যারাথন শেষ করতে ৫৫ বছর! আসুন জেনে নেই বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম ম্যারাথনের গল্প।

ঘটনাটি ১৯১২ সালের জুলাই মাসের। দিনটি ছিল রোববার। সেদিন এক আশ্চর্য ঘটনার সাক্ষী হয়েছিলেন সুইডেনের স্টকহোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামের ১৮ হাজার দর্শক। ম্যারাথন দৌড়ে অংশ নিয়ে প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন ৩০ জন দৌড়বিদ। মারা যান একজন। কিন্তু এদের মধ্যে একজন হন নিখোঁজ। তিনি জাপানের বিখ্যাত দৌড়বিদ শিজো কানাকুরি। তাকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না আয়োজকেরা। 

প্রাথমিকভাবে নিখোঁজ ধরা হলেও খোঁজ মিলেছিল শিজোর। সেদিনকার সেই ম্যারাথনের ট্র্যাকে অন্যদের মতো তিনিও অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়ার পর ডাক্তারের পরামর্শে কাউকে কিছু না জানিয়ে জাপানে পাড়ি জমান শিজো।

এই ঘটনার পর কেটে গেছে প্রায় ৫৫ বছর। তরুণ শিজো বয়সের ভারে হয়েছেন বুড়ো। কিন্তু ম্যারাথন মিশে আছে রক্তে। শিজো অনুতপ্ত হন। কারণ সেদিন ম্যারাথন অসম্পূর্ণ রেখেই চলে এসেছিলেন তিনি। এরপর সুইডিশ সাংবাদিক সৌডারল্যান্ড তাকে আমন্ত্রণ জানান সুইডেনে। ১৯৬৭ সালে পুনরায় ওই ট্র্যাকে দাঁড়ান শিজো এবং মাঝপথ থেকে দৌড় শুরু করেন। তো সব মিলিয়ে এই ম্যারাথন শেষ করতে শিজো সময় নেনে ৫৪ বছর ২৪৯ দিন ৫ ঘণ্টা ৩২ মিনিট ২০ সেকেন্ড। শিজোর এই দীর্ঘতম ম্যারাথন এখনো শীর্ষস্থান দখল করে রয়েছে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস-এর পাতায়। 

ম্যারাথন শেষ করার পর শিজো বলেন, এটি সত্যিই একটি লম্বা ম্যারাথন। এই দীর্ঘ পথে আমি বিয়ে করেছি, ছয়টি সন্তান এবং দশটি নাতির মুখ দেখেছি। 

১৮৯১ সালের ১০ আগস্ট জাপানে জন্ম নেওয়া শিজো মারা যান ১৯৮৩ সালের ১৩ নভেম্বর। জাপানে তাকে বলা হয় ‘ফাদার অফ ম্যারাথন’।