অন্য দুনিয়া

‘এবার ঈদে পোলাও-মাংস খেতে পারব’

তানভীর হাসান তানু, ঠাকুরগাঁও : লুৎফা বেগম বয়স ৫০। ঠাকুরগাঁও শহরের বরুণাগাঁও এলাকায় বাড়ি। পরিবারের সদস্য পাঁচজন। গত ছয় বছর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় স্বামী মারা যান। তার পর থেকে সংসারের হাল ধরেন তিনি। অনেক কষ্ট করে মানুষের বাড়িতে বাড়িতে কাজ করে কোনোমতে সংসার চালান লুৎফা বেগম।

তিনি বলেন, ‘অভাবের সংসাবের পরিবারের এত সদস্যকে তিন বেলা খাবার দেওয়া কোনোদিন সম্ভব হয়নি। কত দিন ধরে পোলাও-মাংস খাইনি আমরা। এবার ঈদে পরিবারের সবাইকে নিয়ে পোলাও মাংস পেট ভরে খাব।’ ঠাকুরগাঁওয়ের উত্তরের অভিযাত্রিক নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ঈদসামগ্রী বিতরণের পর লুৎফা বেগম এই কথাগুলো বলেন।সোমবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় মাল্টিপারপাস হলরুমে ১৬০ জন দরিদ্র মানুষকে ঈদসামগ্রী বিতরণ করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন উত্তরের অভিযাত্রিক।এই দুস্থ মানুষের মাঝে ঈদসামগ্রী তুলে দেন ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আখতারুজ্জামান সাবু।তিনি বলেন, উত্তরের অভিযাত্রিককে এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি। তারা স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে যেভাবে গরিব মানুষে পাশে দাঁড়িয়েছে তা অতুলনীয়। এই সংগঠনটি এগিয়ে যাক, পাশে থাকুক অসহায় মানুষের।ঈদসামগ্রী নিতে আসা মনসুর আলী নামে এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ কান্নাজড়িত কষ্টে বলেন, ‘ঈদে কোনো কিছু কেনার সামর্থ ছিল না আমার। দুই দিন আগে কয়েকজন শিক্ষার্থী আমার বাসায় গিয়ে দেখেন আমি বাসায় পড়ে আছি। তারা আমাকে একটি টোকেন ধরিয়ে বলেন, ২৮ জুলাই ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ে আসিয়েন। আমরা সেমাই, চিনি, চাল ও মাংস দিব।’ এদের দেওয়া ঈদসামগ্রী পেয়ে আনন্দে মন ভয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের এই উদ্যোগ গরিব মানুষকে বেঁচে থাকার আশা জাগিয়েছে। এখন মনে হচ্ছে কোনো গরিব অসহায় না।      

রাইজিংবিডি/ ঠাকুরগাঁও/২৮ জুলাই ২০১৪/তানভীর/রণজিৎ/কমল কর্মকার