অন্য দুনিয়া

পদ্মাপারে এখনো চলছে কান্নার রোল

কাঞ্চন কুমার, কুষ্টিয়া : গঙ্গারামপুর, ফারাকপুর ও বৈরাগীর চর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পদ্মাপারের তিনটি গ্রাম। এ গ্রামগুলোতে প্রতিটি বাড়িতে এখনও চলছে কান্নার রোল, চলছে হাহাকার। মঙ্গলবার সকালে দেশের আর ১০টা গ্রামের মতো ঈদের আনন্দ ওই গ্রামগুলোতেও শুরু হয়েছিল। কিন্তু বেলা গড়িয়ে বিকেল হতেই সেই আনন্দ ম্লান হয়ে যায়।ঈদের আনন্দে পদ্মায় নৌভ্রমণে গিয়ে নিখোঁজ হন ওই তিন গ্রামের বেশ কয়েকজন পুরুষ, মহিলা ও শিশু। গত তিন দিনে তাদের ১৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।শনিবার সকালে গ্রাম তিনটি ঘুরে দেখা যায়, স্বজনদের কান্না আর আহাজারিতে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। প্রতিটি বাড়িতে চলছে কান্নার রোল, চলছে হাহাকার। ফারাকপুর গ্রামের আবু বক্করের মেয়ে সাবরিনা সিদ্দিকা বিভা। তিনি রাজশাহীতে থেকে পড়াশোনা করতেন। তাকে হারিয়ে দিশেহারা পরিবারের সদস্যরা। বাড়ির সামনে বসে কেদেই যাচ্ছেন আবু বক্কর।আবু বক্করের বাড়ির কাছেই রাস্তার অপর পাশে স্বপন, সাহাজুল ও শিপনের বাড়ি। ওই তিন বাড়ি থেকেও ভেসে আসছে কান্নার শব্দ। স্বপন, সাহাজুল, শিপনের বাড়িতে ও একই অবস্থা, সবার চোখে পানি।

বৈরাগীর চরের শিখা খাতুন আর ইমরান দুই ভাইবোন। তাদের বাবা ইমারুল কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না একসঙ্গে দুই সন্তান হারানোর শোক। শিখার স্বামী মিঠুন প্রামাণিক বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। গঙ্গারামপুর গ্রামে অহিদুলের পরিবারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। সেই পরিবারের সদস্যরা নির্বাক হয়ে পড়েছে। তবে এখনও নিখোঁজ রয়েছে তাবাসসুম কাজল নামের এক শিশু।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, তাবাসসুম কাজলের খোঁজে পদ্মার বিভিন্ন জায়গায় নৌকা দিয়ে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে।দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনামুল হক বলেন, নিমজ্জিত নৌকাটির মাঝি আশরাফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে আদালতের নির্দেশে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

রাইজিংবিডি/কুষ্টিয়া/২ আগস্ট ২০১৪/কাঞ্চন/রণজিৎ