অন্য দুনিয়া

সিলেটে আতঙ্কের নাম ‘ব্যাকপ্যাক গ্রুপ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : সিলেট নগরীতে আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে ‘ব্যাকপ্যাক গ্রুপ’। রাজনৈতিক দলগুলোর মিছিল-সমাবেশে এই গ্রুপের ক্যাডাররা পিঠে ‘ব্যাকপ্যাক’ নিয়ে বেরোলেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে নগরবাসীর মধ্যে। এই বুঝি দাঙ্গা-হাঙ্গামা, বোমাবাজি আর অস্ত্রের ঝনঝনানি শুরু হলো।

 

রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যাকপ্যাকের আড়ালে ক্যাডাররা আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়ায় নগরীতে। আর প্রতিপক্ষ পেলেই ওইসব ব্যাগ থেকে অস্ত্র বের করে শুরু করে সহিংসতা।

 

সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মিছিল, সমাবেশ কিংবা যেকোনো শোডাউনে পিঠে ব্যাকপ্যাক নিয়ে একদল যুবক ও কিশোরকে অংশ নিতে দেখা যায়। এরা সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। মিছিল কিংবা সমাবেশে এরা সব সময় ফটোসাংবাদিক ও পুলিশকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে।

 

আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র ও হাতবোমা সঙ্গে নিয়ে ঘুরে বেড়ানো ব্যাকপ্যাক গ্রুপকে আড়াল করার জন্য থাকে আরেকটি উপগ্রুপ। এই উপগ্রুপ অস্ত্রধারী ‘ব্যাকপ্যাক’ গ্রুপের চারপাশে অনেকটা মানবদেয়াল সৃষ্টি করে তাদের সহায়তা করে। লুকানোর চেষ্টা সত্ত্বেও অনেক সময় ওই ‘ব্যাকপ্যাক’ থেকে উঁকি মারে আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রের বাট।

 

গত কয়েক দিনে সিলেটে ছাত্রদলের দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়েছে। এসব সংঘর্ষের সময় ব্যাকপ্যাকধারী ক্যাডাদের ব্যাগ থেকে অস্ত্র বের করে সংঘর্ষে জড়াতে দেখা গেছে।

 

মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা নিজামী ও মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পর দলটির ডাকা হরতালের সমর্থনে মিছিল-সমাবেশে নগরীতে শিবির ক্যাডাররা ব্যাকপ্যাকে করে আগ্নেয়াস্ত্র, ধারালো অস্ত্র ও হাতবোমা নিয়ে মাঠে ছিল।

 

গত রোববার নগরীর খাসদবির এলাকায় পুলিশকে ধাওয়া করার সময় শিবির ক্যাডারদের ব্যাকপ্যাক থেকে হাতবোমা বের করে ছুড়ে মারতে দেখা গেছে। হরতাল প্রত্যাখ্যান করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের মিছিল-সমাবেশেও দেখা গেছে ব্যাকপ্যাক গ্রুপকে।

 

বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর মিছিল-সমাবেশে ব্যাকপ্যাকধারী দেখলেই নগর জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। সংঘর্ষ আর সহিংসতার আশঙ্কায় নগরীর ব্যবসায়ীরা বন্ধ করে দেন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। মুহূর্তে খালি হয়ে যায় নগরীর রাজপথ।

 

এ ব্যাপারে সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. রহমত উল্লাহ জানান, ব্যাকপ্যাকধারীদের কথা তিনি শুনেছেন। কিন্তু পুলিশ যাওয়ার আগেই তারা পালিয়ে যায়। এখন থেকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে এইসব ব্যাকপ্যাকধারী ক্যাডারদের ব্যাপারে নজরদারিতে রাখা হবে বলে জানান তিনি।

     

রাইজিংবিডি/সিলেট/৩ নভেম্বর ২০১৪/বদর উদ্দিন আহমদ/বকুল/কমল কর্মকার