বাবা দিবস _x

কার সোনার বন্দুকের দাম বেশি?

আবু সাইদ নয়ন : হিটলার থেকে গাদ্দাফি বিশ্বের আলোচিত নেতাদের ছিল সোনার বন্দুক। সাদ্দামের সোনার বন্দুক নিয়ে কতই না তুলকালাম। এসব বন্দুক এখন কোথায়? সোনার বন্দুকগুলোর দাম এখন কেমন? কার সোনার বন্দুকের দাম বেশি? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে এই লেখা।

 

গাদ্দাফির সোনার বন্দুকলিবিয়ার প্রয়াত স্বৈরশাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফির সোনার বন্দুক বিশ্বের আলোচিত বন্দুকের মধ্যে অন্যতম। ২০১১ সালে গাদ্দাফির মৃত্যুর সময় বন্দুকটি তার কাছে ছিল। গাদ্দাফিকে হত্যাকারী বিক্ষোভকারীদের হাতে সেদিন সোনার বন্দুকটি দেখা যায়।

   

গাদ্দাফির বন্দুকটি ব্রাউনিং হাই পাওয়ার ৯ এমএম। যা তৈরি হয় বেলজিয়ামে। এটি মূলত একটি পিস্তল। এর ওপর সোনার প্রলেপ দেওয়া। গাদ্দাফিকে হত্যার পর এক বিক্ষোভকারী তরুণের হাতে পিস্তলটি দেখা যায়। লিবিয়ায় গাদ্দাফিবিরোধী আন্দোলনের জয়ের নায়ক বনে যায় ওই বিক্ষোভকারী। কিন্তু বন্দুকটি তার কাছে শেষ পর্যন্ত পাওয়া যায় না বলে জানা গেছে। সেটি কার আছে তা এখনো নিশ্চিত নয়। তবে বন্দুকটি কারো না কারো কাছে এটি নিশ্চিত।

 

গাদ্দাফির সোনার পিস্তলের দাম কত হতে পারে। ২০১১ সালে পিস্তলটির দাম ছিল প্রায় ৫ লাখ মার্কিন ডলার। বর্তমানে নিশ্চয় আরো বেশি হবে। গাদ্দাফির সোনার পিস্তলটি পেতে অনেকে গোপন তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

 

সাদ্দামের সোনার একে-৪৭ইরাকের প্রাক্তন স্বৈরশাসক ও যুক্তরাষ্ট্রকে চাটুকারিতার বিরোধী নেতা প্রয়াত সাদ্দাম হোসেনের অনেক সোনার অস্ত্র ছিল। একে-৪৫ থেকে ¯œাইপার বন্দুক, তার ব্যক্তিগত সংগ্রহে থাকা সব ধরনের বন্দুক ছিল সোনার তৈরি। সাদ্দামের সোনার বন্দুকগুলো কোথায় আছে, তা নিয়ে কেউ মুখ খুলতে চায় না।

 

তবে বলা হয়ে থাকে, সাদ্দাম হোসেনের মৃত্যুর পর তার দামি দামি অস্ত্রগুলো মার্কিন সেনা এবং সাদ্দামবিরোধী ইরাকি সেনারা লুট করে। এ জন্য তিনজন মার্কিন সেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। ইরাক মাঝেমধ্যে সাদ্দামের সোনার অস্ত্রগুলোর মধ্যে দুই একটি দেখা যায়। তবে সেগুলোর মালিক সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায় না।

 

হিটলারের সোনার ‘বন্ড গান’দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের খলনায়ক ও নাৎসি বাহিনীর প্রধান অ্যাডলফ হিটলারের কাছে সোনার বন্দুক ছিল। তবে সেটি তিনি কখনো ব্যবহার করেছেন- এমন প্রমাণ পাওয়া যায় না। বলা হয়ে থাকে, হিটলার নিজের মাথায় নিজে গুলি করে মারা যান। কিন্তু এই তথ্য নিয়ে ঐতিহাসিক বিতর্ক আছে। কেউ কেউ দাবি করেন, হিটলার পালিয়ে যান এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনেক পরে তার মৃত্যু হয়।

   

আইয়ান ফ্লেমিংয়ের গোয়েন্দা চরিত্র জেমস বন্ড-এর মাধ্যমে হিটলারের সোনার বন্দুক বিশ্বখ্যাতি পেয়েছে। হিটলারের কিছু অনুসারী সোনা দিয়ে মোড়ানো বন্দুকটি তৈরি করে, যা তার ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে উপহার হিসেবে দেয় তারা। অনেকে দাবি করে থাকেন, হিটলারের বাড়ি থেকে মার্কিন সেনারা সোনার বন্দুটি হাতিয়ে নেয়।

 

তবে সে যা হোক, হিটলারের বন্দুকটি বর্তমানে এক বেসরকারি লোকের কাছে আছে। যিনি ১৯৮৭ সালে বন্দুকটি নিলামে সর্বোচ্চ দাম হেঁকে কিনেছিলেন। ওই সময় এর দাম ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার মার্কিন ডলার। বর্তমানে কয়েক গুণ বেশি দাম হবে নিশ্চয়ই।

 

সোনার মরু ঈগলবিশ্বের হ্যান্ডগানগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ধরা হয় সোনার মরু ঈগলকে। দ্য গোল্ড ডেজার্ট ঈগল নামের পিস্তলটি তৈরি করে ইসরায়েলি অস্ত্র নির্মাতারা। ম্যাগনাম রিসার্চ ও ইসরায়েলি সামরিক ইন্ডাস্ট্রিজ এ জাতের কয়েক শ পিস্তল তৈরি করে। পিস্তলের পেছনের অংশে টাইটেনিয়াম গোল্ড থাকে। এক একটি সোনার মরু ঈগলের দাম ১০ হাজার মার্কিন ডলার।

 

হল্যান্ড অ্যান্ড হল্যান্ড রয়্যাল রাইফেলএ ধরনের বন্দুক দিয়ে লক্ষে গুলি ছোঁড়া খুব সোজা। এই বন্দুকের নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নাম হল্যান্ড অ্যান্ড হল্যান্ড কোম্পানি। কোম্পানিটির দাবি, তাদের এই বন্দুকগুলো সব হাতে তৈরি। ব্রিটিশ রাজপরিবারে এই বন্দুক আছে। এক একটি বন্দুক তৈরিতে ৮৫০ কর্মঘণ্টা সময় লাগে। যে কারণে এর দাম অত্যন্ত চড়া। যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট হল্যান্ড অ্যান্ড হল্যান্ড বন্দুকের পাগল ছিলেন।

     

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬/রাসেল পারভেজ