বাবা দিবস _x

মায়ের কোলে বৃদ্ধ শিশু!

আনোয়ার হোসেন শাহীন, মাগুরা : নববধূর কোলে প্রথম সন্তান আসছে- এ খবরে পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের আনন্দের সীমা ছিল না। কিন্তু ছেলেশিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর উৎসবের পরিবর্তে সবার মুখে বিষাদের ছায়া নামে।

 

সদ্য পৃথিবীর মুখ দেখা শিশুটি মানবশিশু নাকি অন্য কিছু, তা নিয়ে সব খানে আলোচনা। কারণ তার অবয়বে বৃদ্ধ মানুষের ছাপ, বিকৃত চেহারা। দেখলে মনে হয়, সে আশি বছরের বৃদ্ধ।

 

জন্মের পর শিশুটিকে দেখে ভয় পেত অনেকেই। কাছে ভিড়তে চাইত না কেউ। রটাত নানা কল্পকাহিনি। সবাই যখন শিশুটিকে ফেলে দূরে সরে গেল, তখন পরম মমতায় সন্তান বায়েজিদকে লালনপালন করতে লাগলেন মা তৃপ্তি খাতুন।

 

বায়েজিদের বাবার নাম লাভলু শিকদার। তার বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের খালিয়া গ্রামে।

   

রোববার বিকেলে লাভলুর বাড়ি গিয়ে কথা হয় তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে। বায়েজিদের মুখে সব সময় হাসি লেগেই থাকে। বায়েজিদ শিকদারের বয়স এখন চার বছর। শুনলে সবাই চমকে ওঠেন। কারণ, ৮০ বছরের বৃদ্ধের মতো মুখ-পেটসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে চামড়া ঝুলে আছে। দেখলে মনে হয়, বৃদ্ধ মানুষ।

 

বায়েজিদের দাদা হাসেম আলী শিকদার জানান, শিশুটি বিকৃত চেহারা নিয়ে জন্ম নেয়। এ নিয়ে নানা কথা রটাত গ্রামের লোকজন। অনেকে ভয়ে তার কাছে ভিড়ত না। আস্তে আস্তে সে বড় হতে থাকলে তার চেহারায় বৃদ্ধ মানুষের ভাব চলে আসে। দিন যত যাচ্ছে, তার এ সমস্যা বাড়ছে।

 

মা তৃপ্তি খাতুন জানান, স্বাভাবিক শিশুরা ১০ মাসে হাঁটা শিখলেও বায়েজিদ সাড়ে তিন বছরে হাঁটতে শিখেছে। আবার তিন মাস বয়সে তার সবগুলো দাঁত উঠেছে। সে স্বাভাবিক চলাফেরা ও খাওয়াদাওয়া করতে পারে।

 

লাভলু শিকদার বলেন, ‘অনেক ডাক্তার দেখিয়েছি। ৩-৪ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। কোনো অসুখ ধরতে পারেননি চিকিৎসকরা। অনেক কষ্টে টাকাপয়সা সংগ্রহ করে কয়েক জায়গায় চিকিৎসা করিয়েও কোনো ফল পাইনি। চিকিৎসকরা বিদেশে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এটা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’