সাতসতেরো

হাওরের বক

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : হাওরের দিগন্ত জুড়ে ওড়াওড়ি করে নানা প্রজাতির বক। হাওরে বেড়াতে গেলেই দেখা মেলে বকের। এসব বক শিকারে ফি বছরই সংঘবদ্ধ চক্রকে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। এ বছর এদের প্রতিরোধে হাওরসংশ্লিষ্ট সাধারণ অনেকেই এগিয়ে এসেছেন। ফলে বকেরা অভয় নিয়ে হাওরে বিচরণ করছে।

 

হবিগঞ্জের হাওর এলাকার বাসিন্দা সাদেক মিয়া। বয়স ৫০। চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। বক শিকারে যারা বাধা দিচ্ছেন সাদেক মিয়া তাদেরই একজন। তিনি জানান, হাওরে  বকের বিচরণ মানুষকে মুগ্ধ করে। তবে একটি চক্র বক শিকারে সক্রিয়। আমরা তাদের শিকারে বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছি। শিকার বন্ধ হওয়ায় হাওরে দিন দিন বকের বিচরণ বাড়ছে বলে দাবী করেন তিনি।

 

সূত্র জানায়, একসময় হবিগঞ্জের আদালত পাড়ায় দেশি মুরগির পাশাপাশি অহরহ বকেরও বেচাকেনা চলতো। এখান থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানেই ফেরির মাধ্যমে বিক্রি হতো সংঘবদ্ধ শিকারীদের লুকিয়ে রাখা বক। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনের নজরে আসলে তারা কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এতে বক বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে হাওরে অবাধে বকদের বিচরণ এখন অবাধ। হাওর এলাকার গাছে গাছে এখন বক দেখতে পাওয়া যায়।

 

হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘বক শিকারকারীরা পরিবেশের শক্র। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় শিকার এখন বন্ধপ্রায়।’

 

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বক পরিবেশ রক্ষায় উপকারী। এটি রক্ষা সবারই দায়িত্ব। পাখিটি রক্ষায় সবার সাথে আমরাও কাজ করছি। যার কারণে হাওরে বকের বিচরণ বাড়ছে।

 

মাহবুবুল আলম বলেন, হবিগঞ্জ জেলার একদিকে পাহাড়। পাহাড় থেকে নেমে এসেছে অসংখ্য ছড়া। এসব ছড়ার মিলন হয়েছে হাওরাঞ্চলে এসে। হাওরাঞ্চলে প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নিচ্ছে নানা প্রজাতির দেশীয় মাছ। রয়েছে পোকা মাকড়ও। এসব খেতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করে বক ও মাছরাঙা। এসব বকেরা বাসা বাঁধে হওরাঞ্চলের নিকটবর্তী বাঁশ বাগান ও গাছে।

       

রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/২৮ জুলাই ২০১৫/মামুন চৌধুরী/টিপু