সাতসতেরো

শোভাময় এলিসাম ফুল

হুরণ আজাদী : ছোট নাকফুলের আকৃতি। খুবই দৃষ্টিনন্দন। যখন ফোটে, মধুর গন্ধ ছড়িয়ে দেয় সন্ধ্যার বাতাসে। তবে দিনের বেলায় এর গন্ধ তেমন পাওয়া যায় না। বলা হচ্ছে, এলিসাম ফুলের কথা। এ ফুল যে কারোরই মন হরণ করবে।

   

এটি এলিসামগণের এক প্রজাতি। ১০০ থেকে ১৭০ প্রজাতির এলিসাম ফুলের গাছ আছে বলে জানা যায়। এর থেকে মাত্র ২০/২৫ প্রজাতির গাছ বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য লাগানো হয়ে থাকে। এলিসাম ফুল গাছ ব্রাসিকাসিয়া পরিবারের সদস্য। এর আদি নিবাস ইউরোপ, এশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এলিসাম ফুলের বৈজ্ঞানিক নাম ওবুলারিয়া মারিটিমা  (Obularia maritima)। সুইট এলিসাম ফুলের গাছ সুইট এলিসন নামে পরিচিত। এলিসামগণের কিছু প্রজাতি বর্ষজীবী, কিছু বহুবর্ষজীবী হয়ে থাকে।

 

এলিসাম গাছ খুব ছোট আকারে হয়ে থাকে। ছোট ছোট গাছ একসঙ্গে যখন ফুলে ভরে যায়, তখন দেখে মনে হয় বাগানে কেউ গালিচা পেতে রেখেছে। অনেকে বাগানের জংলী গাছ এড়াতে এই ফুলের গাছ লাগায়। এলিসাম ফুল মিষ্টি ঘ্রাণে ভরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এই গাছে সারা বছরই ফুল ফোটে। এই গাছের সর্বোচ্চ উচ্চতা দুই থেকে বারো ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। এলিসাম গাছে অনেক শাখা-প্রশাখা হয়, যার সঙ্গে অসংখ্য ছোট থোকা থোকা ফুল ফোটে। এলিসাম গাছের পাতা এক থেকে সাত সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা এক সেন্টিমিটার পর্যন্ত চওড়া হয়। ডালের সঙ্গে পাতা দেখে মনে হয় পর্যায়ক্রমে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। পাতার কিনারায় সূক্ষ্ম লোমের মত আচ্ছাদিত থাকে।

 

এলিসাম ফুল নানা রঙের হয়ে থাকে। সাদা, হলুদ, বেগুনি, গোলাপি ইত্যাদি। এই ফুলের পাপড়ির গঠন বৃত্তাকার। চারটি পাপড়ি হয়। এলিসামের বীজ অনেকটা ডিম্বাকৃতির। আংশিক আলোছায়াপূর্ণ জায়গায় এই গাছ ভালো জন্মে। শুষ্ক জায়গায় এই গাছ লাগাতে হয়। শীতকালে টবে লাগিয়ে ঘরে রাখা যায়।

   

এলিসাম গাছ ক্যালসিয়াম কার্বোনেটপূর্ণ মাটিতে ভালো জন্মে। এই গাছের ফুল ও পাতা উভয়ই খাওয়া যায়। এর স্বাদ অনেকটা ব্রুকলির মতো। এর ফুল ও পাতা অনেকে সালাদে ব্যবহার করে থাকেন। এলিসাম ফুলের পাতা শুঁয়ো পোকাদের প্রিয় খাবার। এই ফুল বাগানের শোভা বৃদ্ধির জন্য লাগানো হয়ে থাকে। এলিসাম ফুল গাছের কিছু ওষুধি গুণও আছে।

 

লেখক : উদ্ভিদবিদ।

   

রাইজিংবিডি/ঢাকা/ ২৮ নভেম্বর ২০১৫/হাসনাত/রহমান/রাসেল পারভেজ