সাতসতেরো

মানিকগঞ্জের খেজুর রসে রসনা মেটে রাজধানীবাসীর

আশরাফুল আলম লিটন, মানিকগঞ্জ : খেজুর গুড়ের জন্য বিখ্যাত মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা। অন্যান্য উপজেলায়ও কমবেশি উৎপাদিত হচ্ছে খেজুর গুড়। তাই শীতের শুরুতেই খেজুরগাছ কাটার ধুম পড়েছে এখানে। ঢাকার সন্নিকটে হওয়ায় এখানের খেজুরের রস ও গুড়-ই রাজধানীর মানুষ সবার আগে পায়। আর রাজধানীতেও রয়েছে মানিকগঞ্জের খেজুর গুড়ের বিশেষ কদর। আসলে মানিকগঞ্জের খেজুর রসেই রসনা মেটে রাজধানীতে বসবাসরতদের।

 

মানিকগঞ্জের গাছিরা খেজুর রস জ্বাল দিয়ে ঝোলা, দানা ও পাটালি তিন প্রকারের গুড়-ই তৈরি করে। খেজুরের গুড় থেকে একসময় বাদামি চিনিও তৈরি করা হতো। যার স্বাদ ও ঘ্রাণ ছিল একেবারেই ভিন্ন। স্বাদের তৃপ্তিতে বাদামি চিনির জুড়ি নেই। এখন অবশ্যই সে চিনির কথা রূপকথার-ই গল্প।

 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকার পশ্চিমাঞ্চলীয় জেলাগুলোতে একসময় প্রচুর খেজুর গাছ ছিল। আর এসব খেজুরগাছের এক-তৃতীয়াংশই ছিল মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে। সেখানে প্রতি একরে ১৫টি খেজুরগাছ দেখা যায়। তবে, ইটভাটার জ্বালানিতে খেজুরগাছ ব্যবহৃত হওয়ায় এর সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।

 

হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকা গ্রামের স্কুল শিক্ষক মহিম উদ্দিন জানান, পুরো মৌসুমজুড়ে চলবে রস, গুড়, পিঠা-পুলি আর ক্ষীর-পায়েস খাওয়া। কয়েকদিন পর থেকে বাজারে উঠবে নতুন খেজুর গুড়। খেজুরের রস দিয়ে তৈরি এই গুড় অনেক মজার।

 

তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে গাছ থেকে রস আহরণ শুরু হয়েছে। কয়েক দিন পর থেকেই পুরোদমে শুরু হবে খেজুরগাছের রস খাওয়া ও গুড় বিক্রির ধুম। রাজধানী থেকেও অনেকে ছুটে আসবেন রস খাওয়ার জন্য। আবার রাজধানীতেও যাবে এখানের গুড় ও রস।

 

স্থানীয় গাছি মোজাম্মেল হোসেন জানান, জেলার হরিরামপুর ছাড়াও সাটুরিয়ায় বেশ খেজুরগাছ রয়েছে। জেলায় প্রায় ৫ হাজার মানুষ রস সংগ্রহ ও এর সঙ্গে জড়িত। তবে, দিন দিন গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে খেজুরগাছ না লাগালে একসময় খেজুর রসের অস্তিত্ব হয়তো বা খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে।

     

রাইজিংবিডি/মানিকগঞ্জ/৩০ নভেম্বর ২০১৫/লিটন/শাহ মতিন টিপু/এএন