অহ নওরোজ : মুসলমানদের কাছে মসজিদ মানে হল সৃষ্টিকর্তার ঘর। শুধু নামাজ নয়, ইসলামী শাসনামলে মসজিদ থেকেই চালিত হত রাষ্ট্রের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড।
ইসলামের বিস্তৃতির সঙ্গে পৃথিবীতে নির্মিত হয়েছে বহু মসজিদ। বেড়েছে এর পরিধিও। এ ছাড়া একেক দেশের একেক রকমের সংস্কৃতির ছাপ পৃথিবীর একাধিক মসজিদের নির্মাণশৈলীতে ঠায় পেয়েছে।
পৃথিবীর সেরা মসজিদগুলোর নির্মাণশৈলী এবং ইতিহাস নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই। উইকিপিডিয়ার করা তালিকায় আয়তনের দিক থেকে সেরা দশে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম।
চলুন জেনে নেওয়া যাক, আয়তনের দিক থেকে পৃথিবীর সেরা দশ মসজিদ সম্পর্কে।
মসজিদ-উল-হারাম : পৃথিবীর সবথেকে বড় মসজিদ হল মসজিদ-উল-হারাম। ইসলাম ধর্মের সবথেকে পবিত্র স্থান ‘কাবা’কে ঘিরে সৌদি আরবের মক্কা নগরীরতে এর অবস্থান। ৮৮.২ একর বা ৩,৫৬,৮০০ বর্গমিটার জমির ওপরে মসজিদটির অবস্থান। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ এই মসজিদটির সাধারণ প্রায় ৯ লাখ মুসলিম একসঙ্গে নামাজ পড়ে। তবে হজের সময় এর পরিমাণ বেড়ে কখনো কখনো ৪০ লাখে পৌঁছায়। বর্তমানে মসজিদটির সংষ্কারের কাজ করে যাচ্ছে সৌদি সরকার।
মসজিদে নববী : হযরত মুহাম্মাদ (স.) এর হাতে ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত হয় মসজিদে নববী কিংবা আল-মাসজিদুন-নাবী। অর্থাৎ নবীর মসজিদ। সৌদি আরবের মদিনা শহরে এই মসজিদটি অবস্থিত। মসজিদটিতে ৬ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে।
তবে মসজিদটি হযরত মুহাম্মাদ (স.)- এর রওজা সংলগ্ন হওয়ায় হজের সময় প্রায় ১০ লাখ মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করার রেকর্ড রয়েছে। মসজিদের ১০টি মিনারের মধ্যে সবথেকে উঁচু মিনারটির উচ্চতা ১০৫ মিটার।
হারামে ইমাম রেজা : শিয়া সম্প্রদায়ের ১২ ইমামের অষ্টম ইমাম, ইমাম রেজা এই মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে ‘হারামে ইমাম রেজা’ মসজিদটি ‘ইমাম রেজা মসজিদ’ নামেই সর্বাধিক পরিচিত।
ইরানের খোরসান প্রদেশের রাজধানী মসনদে অবস্থিত পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম এই মসজিদটি। প্রায় ৩,৩১,৫৭৮ বর্গমিটার জমির ওপরে অবস্থিত এই মসজিদটিতে প্রায় ৫ লাখ মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। ৮১৮ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত এই মসজিদটির আটটি মিনার রয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ মিনারের উচ্চতা ৪১ মিটার।
ইস্তিকলাল মসজিদ : জনসংখ্যার দিক থেকে অন্যতম বৃহত্তম মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় অবস্থিত ইস্তিকলাল মসজিদটি। এটিই ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় মসজিদ। ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার স্মৃতিস্বরুপ মসজিদটি নির্মিত করা হয়েছিল বলে এর নাম ‘ইস্তিকলাল মসজিদ’।
ইন্দোনেশিয়ান ভাষায় শব্দটির অর্থ স্বাধীনতা। মসজিদটি সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় ১৯৭৮ সালে । ৯৫,০০০ বর্গমিটার জায়গা নিয়ে অবস্থিত পৃথিবীর চতুর্থ বৃহৎ এই মসজিদটিতে প্রায় ১,২০,০০০ মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারে।
মসজিদুল হাসান-আল শানী : মসজিদুল হাসান-আল শানী স্থানীয়দের কাছে ক্যাসাবালাঙ্কা হাজ কিংবা হাসান মসজিদ নামে বহুল পরিচিত। মরক্কোর সবথেকে বড় শহর ক্যাসাবালাঙ্কায় আটলান্টিক মহাসাগরের তিরে অবস্থিত মসজিদটি।
অনেকটা মুঘল স্থাপত্যের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এই মসজিদটির অবস্থান প্রায় ২১,০০০ বর্গমিটার জমির ওপরে। প্রায় ৪০,০০০ হাজার মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারে এই মসজিদটিতে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জুন ২০১৬/সাইফ