সাতসতেরো

জেলের বদলে বুকডন

রুহুল আমিন : পুলিশ যদি প্রকৃতই মানুষের বন্ধুর মতো কাজ করত তাহলে কী যে ভালো হতো। মানুষের তো ভালো হতোই, পুলিশের প্রতি মানুষের ভালোবাসারও অন্ত থাকতো না। কিন্তু এই নিরেট পৃথিবীতে সবাই থাকে ক্ষমতা দেখানোর তালে। ফলে ভালো কিছু করার প্রবৃত্তি নেই বললেই চলে। তাই অপরাধী পেলেই হলো, পুলিশ তাকে জেলে ঢুকিয়েই থামে।

 

তবে ব্যতিক্রম বলে একটি শব্দ আছে।এই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ যদি ভালো হয়ে থাকে তাহলে সেই কাজটির প্রশংসা সকলেই করে থাকে। এমটি একটি প্রশংসিত কাজ করেছে আমেরিকার টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের আর্লিংটন পুলিশের এক সদস্য। এবং অবশ্যই আইনের বাইরে গিয়ে। আইনের ভেতরে থেকে আর যাই হোক ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যোগ নেওয়া যায় না।

 

অপরাধীকে শাস্তি কি শুধু জেলে পুড়ে দেওয়া যায়? অন্যভাবেও দেওয়া যায়। এই অন্যভাবে কাজটি করার জন্য আক্ষরিক অর্থেই দরকার হয় ব্যতিক্রমধর্মী উদ্যেগের।

 

যুক্তরাষ্ট্রের আর্লিংটনের এক সিনেমা হলের সামনে এক কিশোর গাঁজা টানছিল। এক পুলিশ সদস্য তাকে ধরে ফেলে। আইন অনুযায়ী তার জেল হওয়ার কথা। কিন্তু ওই পুলিশ সদস্য তাকে জেলে না পাঠিয়ে ২০০টি বুকডন দিয়ে ছেড়ে দেন। এই ঘটনার পর একটি ভিডিও সামাজিক গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

 

ভিডিওতে দেখা যায় ওই কিশোর বুকডন দিচ্ছে। এতে সামাজিক গণমাধ্যমে ওই পুলিশ সদস্যের ব্যাপক প্রশংসা করা হয়।

 

আর্লিংটন পুলিশ বিভাগ ভিডিওটি দেখে ওই পুলিশ অফিসারের পরিচয় নিশ্চিত করেছে। তার নাম এরিক বাল।তিনি আর্লিংটনের একটি সিনেমা হল বন্ধের দিন তার সামনে ডিউটি দিচ্ছিলেন। এমন সময় কেউ একজন এসে তাকে জানালেন, এক কিশোর হলের বাইরে গাঁজা টানছে। তিনি বাইরে গিয়ে দেখলেন এক কিশোর একটি সিগারেট শেষে করে তা ছুড়ে ফেলছে। কিন্তু গাঁজার গন্ধ তখন্ও ভাসছিল।   

 

আর্লিংটন পুলিশ ডিপার্টম্যান্টের মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট ক্রিস কোক বলেন, গাঁজার নিজস্ব একটি গন্ধ আছে। তাই এরিক বুঝতে পারলো ওই কিশোর কি করেছে।

 

কোক বলেন, কিশোরটি তার ভুল বুঝতে পেরেছিল।যদিও এরিক তাকে গ্রেপ্তার করতে পারত। কিন্তু সে ভিন্ন কিছু করার সিদ্ধান্ত নিল। তখন সে কিশোরকে বলল, তুমি ২০০টি বুকডন দাও, আমি তোমাকে জেলে দিব না।

 

কোক জানায়, অফিসার এরিক স্কুল ফুটবল খেলেছে এবং তার কোচ নিয়মানুযায়ী যতটা বুকডন দিতে বলতো ঠিক ততটা দিত সে। তবে অপরাধীর সঙ্গে আগে কখনো এমন আচরণ করেনি এরিক। হুট করেই তার মাথায় এই বুদ্ধি আসে।

 

কোক বলেন, এরিক ছেলেটিকে গ্রেপ্তার করতে পারত। কিন্তু তার পরিবর্তে ভাল কিছু করার চেষ্টা করেছিল।

 

আর্লিংটন পুলিশ বলেছে, ছেলেটির নাম তারা জানে না। তবে তার বয়স ১৭ থেকে ১৮ হবে।

 

পুলিশ জানায়, এরিক ওই কিশোরের মাকে সিনেমা হলের ভেতরে খুঁজে পায়। তিনি এরিকের সঙ্গে কোলাকুলি করে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় নেন।

     

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ জানুয়ারি ২০১৭/রুহুল/টিআর