সাতসতেরো

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এখন বিলাসবহুল ভবন

আহমেদ শরীফ : ইউকেলিপ্টাস, পাম, অলিভ গাছসহ বাগান ঘেরা পুরোনো এক সিমেন্ট ফ্যাক্টরি এখন আধুনিক এক ভবনে পরিণত হয়েছে। স্পেনের বার্সেলোনার এক প্রান্তে এই পুরোনো ভবনটিকে দেখলে পরিত্যক্ত কমপ্লেক্স মনে হয়। ভবনটিকে আঁকড়ে ধরে বেড়ে উঠা গাছ, লতাপাতা সেটাই প্রমাণ করে। তবে আসল কথা হলো পুরনো এই সিমেন্ট ফ্যাক্টরিটি এখন পুরোপুরি একটি আধুনিক ভবন। এর ডিজাইন করেছেন স্পেনের স্থপতি রিকার্ডো বোফিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বন্ধ হয়ে যাওয়া সিমেন্ট ফ্যাক্টরিটি বোফিল খুঁজে পান ১৯৭৩ সালে। তিনি ও তার সহকর্মীরা এটি কিনে নেন। পুরোনো এই সিমেন্ট ফ্যাক্টরিতে আছে ৩০টি সাইলো (বায়ুনিরোধক ঘর)। ভূগর্ভস্থ গ্যালারি ও বিশাল কয়েকটি মেশিন রুমও আছে।

এই ভবনকে এখন টলার ডি আরকিটেকটুরা অফিসে রূপান্তর করা হয়েছে। তবে ফ্যাক্টরির সব পুরোনো ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে বর্তমানের আকর্ষণীয় রূপে পরিণত করতে দুই বছর সময় লেগেছে তাদের। এরপর অফিস কক্ষ, একটি ল্যাবরেটরি, আর্কাইভ, লাইব্রেরি, একটি প্রজেকশন রুম, একটি বিশাল প্রদর্শনী স্পেস ও বোফিলের থাকার জন্য ঘর গড়ে তোলা হয়েছে।

এক সময়ের পরিবেশ দূষণকারী সিমেন্ট ফ্যাক্টরি ‘লা ফ্যাবরিকা’ এখন পরিবেশবান্ধব শান্ত নিবিড় এক ভবন। বিশাল সব কংক্রিটের সাইলোসহ ভবনটিকে ঘাস দিয়ে মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। চারপাশ থেকে বেড়ে উঠা লতায় আবৃত ভবনটির পাশেই আছে বড় একটি বাগান। ভবনের কংক্রিট দেয়াল ও সিমেন্ট তৈরির সব স্মৃতিবহ দাগ বোফিল সযত্নেই রেখেছেন, যা কালের সাক্ষী হয়ে থাকবে। ভবনের প্রতিটি ঘরকে পৃথকভাবে সাজানো হয়েছে, যাতে করে একটির সঙ্গে আরেকটির মিল খুঁজে না পাওয়া যায়। কয়েকটি কক্ষে সিমেন্ট ফ্যাক্টরির সময়কার নিদর্শন রাখা হয়েছে। ধাতব সিমেন্ট মেশিনসহ আধুনিক অফিস রুম সাজানো হয়েছে। আর শান্ত নিবিড় পরিবেশে নিজের থাকা ও অফিসের কাজ করা দুটোই খুব প্রশান্তির বলে জানিয়েছেন বোফিল।

তিনি বলেন, ‘অন্য যেকোনো জায়গার চেয়ে এখানে আমি থেকে ও কাজ করে সবচেয়ে বেশি শান্তি পাই। এটাই একমাত্র জায়গা যেখানে  নতুন সব আইডিয়া  নিয়ে মনোযোগ দিয়ে ভাবতে পারি আমি।’ তবে প্রায় ৫০ বছর ধরে এই ভবনটিকে সংস্কার করার কাজ করলেও প্রতিনিয়ত ভবনটিতে নতুনত্ব আনতে চান বোফিল। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ মার্চ ২০১৭/সাইফুল