সাতসতেরো

‘১০১ পাকসেনা খতমের লড়াই তার জীবনের মাইলফলক’

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে হবিগঞ্জে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে অন্যতম লড়াইটি হয় চুনারুঘাট উপজেলার কালেঙ্গা পাহাড়ে। এ যুদ্ধে পাকবাহিনীর ইউসুফ খান গ্রুপের ১০১ জন সৈনিক নিহত হয়। ডা. আবুল হোসেন কালেঙ্গা পাহাড়ে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে অনুষ্ঠিত যুদ্ধে অংশ নেওয়া একজন মুক্তিযোদ্ধা।তিনি জেলার বাহুবল উপজেলার লামাতাসী ইউনিয়নের নন্দনপুর গ্রামের বাসিন্দা। ১০১ পাকসেনা খতমের এ যুদ্ধে অংশ নিতে পেরে তিনি গর্বিত।বর্তমানে তিনি বাহুবল উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডের কমান্ডার। ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়ে  ৩ নং সেক্টরের অধীনে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন ডা. আবুল হোসেন। প্রশিক্ষণ নেন ভারতের ত্রিপুরার অমিজানগরে । এরপর থেকে তিনি মেজর এজাজ আহমেদ ও কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীর  নেতৃত্বে হবিগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় হাতে অস্ত্র নিয়ে পাকসেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তিনি যুদ্ধ থেকে পিছপা হননি।  দেশকে পাক সেনা মুক্ত করতে তিনি একের পর এক লড়াইয়ে অংশ নিয়ে সফল হয়েছেন। ডা. আবুল হোসেন জানান, এর মধ্যে অন্যতম হলো, জেলার চুনারুঘাট উপজেলা কালেঙ্গা পাহাড়ের লড়াই। এ লড়াইটি তখন এই অঞ্চলে বিশেষ আলোড়ন তুলেছিল।এ লড়াইয়ের পরই এই অঞ্চলে মনোবল হারিয়ে খর্ব হতে থাকে পাকবাহিনীর সমরশক্তি।  এ লড়াইয়ে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধার সাথে তিনিও অংশগ্রহণ করেন। ৭১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ দিকে এ লড়াইয়ে পাকবাহিনীর ইউসুফ খান গ্রুপের ১০১ জন সৈনিক প্রাণ হারায়। এ যুদ্ধ তার জীবনে এক বিশেষ মাইলফলক হয়ে আছে বলে জানান তিনি। দেশ স্বাধীন হলে, ডা. আবুল হোসেন লামাতাসী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রথমে অংশ নিয়ে বিপুল ভোটে মেম্বার নির্বাচিত হন। পরে তিনি পরপর দুইবার এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে তৃণমূল মানুষের কল্যাণে কাজ করেন। নির্বাচিত হন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।  বর্তমানেও তিনি তৃণমূল মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন। এছাড়া তিনি ডাক্তারি পেশায় নিয়োজিত থেকে স্বেচ্ছায় সেবা প্রদান করছেন। লোকজনের কাছে তিনি একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবে পরিচিত। একান্ত আলাপকালে  আলহাজ্ব ডা. আবুল হোসেন বলেন, ‘যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলাম দেশকে শত্রুমুক্ত করার জন্য। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। এটাই বড় পাওয়া। এখন জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ  এগিয়ে যাচ্ছে। এসব দেখে ভাল লাগছে।’ তিনি বলেন, ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডেট মানিক চৌধুরী আমার নেতা ছিলেন। যুদ্ধ ক্ষেত্রে তিনি আমাকে বিভিন্নভাবে পরামর্শ দিয়ে সার্বিক দিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন। বাহুবলের সর্বত্র আওয়ামীলীগকে শক্তিশালী করতে তার নেতৃত্বে কাজ করেছি। বর্তমানে কমান্ডেন্ট মানিক চৌধুরীর কন্যা কেয়া চৌধুরী এমপি হয়ে বাহুবল ও নবীগঞ্জবাসীর উন্নয়নে কাজ করছেন। তার মঙ্গল কামনা করছি।’ রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/১ এপ্রিল ২০১৭/মামুন চৌধুরী/টিপু