সাতসতেরো

সবচেয়ে বড় আবাসিক জাহাজ (ভিডিও)

আহমেদ শরীফ : কোনো ধরনের প্যাকিং-আনপ্যাকিং এর ঝামেলা ছাড়া অসাধারণ সব জায়গায় দীর্ঘদিন এমনকি অনির্দিষ্টকালের জন্য ঘুরে বেড়াতে কার না ইচ্ছে করে। ভাগ্যবান কিছু মানুষের জন্য তেমনই এক সুযোগ আছে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড’  জাহাজে।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও পুরোনো আবাসিক জাহাজ এটি। যারা ওই জাহাজে থাকেন, তাদের কেউ কেউ ওই জাহাজে স্থায়ীভাবেই বসবাস করছেন। জাহাজের বাসিন্দারা বছরে কোন কোন গন্তব্যে ঘুরবেন, তাও নির্ধারণ করতে পারেন।

জাহাজটি এ পর্যন্ত পাপুয়া নিউ গিনি, রাশিয়ান আর্কটিকসহ বেশ কিছু সুন্দর এলাকায় ভ্রমণ করেছে। এমন বিশাল, বিলাসবহুল আবাসিক জাহাজে চড়ে বিশ্বভ্রমণের ধারণাটা এসেছে নরওয়ের শিল্পপতি নাট ক্লোস্টার জুনিয়রের মাথা থেকে। তার পরিবার আধুনিক ক্রুজ ইন্ডাস্ট্রির পথিকৃৎ। ১৯৯৭ সাল থেকে বিশাল এই জাহাজের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। তবে আর্থিক সংকটে জাহাজ নির্মাণে সময় লাগে বেশি। ২০০২ সালে ৪৩ হাজার টন ওজনের ও ১২টি ডেকের বিশাল এই জাহাজটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়। অবশ্য ক্লোস্টার যত পর্যটক আশা করেছিলেন, তত পর্যটককে আকৃষ্ট করতে ব্যর্থ হয় ‘দ্য ওয়ার্ল্ড’ ।

পরে ওয়েস্ট এলবি এজি ও জুরিখ ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস গ্রুপ নামের দুটি ব্যাংক জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এতে করে অবশ্য সমস্যা আরো বেড়ে যায়। জাহাজের সব অবিক্রিত অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি করা হলেও যারা মোটা অংকে সেগুলো কিনে নেয়, তাদের পরিবারের জন্য সেসব অ্যাপার্টমেন্ট খুব একটা আশানুরূপ ছিল না। যারা মিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থে অ্যাপার্টমেন্ট কেনেন, তারা সাধারণ ক্রেতাদের মতো একই সুবিধা পেয়ে হতাশ হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে জাহাজের বাসিন্দারাই ৭১ মিলিয়ন ডলার দিয়ে ৩৭টি অবিক্রিত অ্যাপার্টমেন্ট কিনে নেন। এরপর থেকে বাসিন্দারা ‘দ্য ওয়ার্ল্ড’ জাহাজটি নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। তারা নিজেদের অ্যাপার্টমেন্ট ধনীদের কাছে বিক্রি করেন।

স্বপ্নের এই জাহাজটিতে ছোট বড় ১৬৫টি অ্যাপার্টমেন্ট আছে। সাধারণ অ্যাপার্টমেন্ট বিক্রি হয় প্রায় ১ মিলিয়ন ডলারে। আর বিলাসবহুল স্যুট বিক্রি হয় ১৩ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি দামে। এ সব অ্যাপার্টমেন্টের মালিক প্রায় ১৩০টি ধনী পরিবার। সেসব পরিবারের কেউ কেউ তিন থেকে ছয় মাস ওই জাহাজে কাটান। আবার কেউ কেউ আছেন পুরো বছর জুড়েই। জাহাজে ভেসে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরে কাটিয়ে দেন তারা।

জাহাজটিতে সব ধরনের বিনোদনই আছে। ছয়টি রেস্টুরেন্ট, অনেকগুলো বার, সাগরের মাঝে অর্থাৎ জাহাজটিতে বিশ্বের একমাত্র ভাসমান প্রমাণ সাইজের টেনিস কোর্ট আছে। এ  ছাড়া, জিম, স্পা, লাইব্রেরি, সিনেমা হল সবই আছে। তাই জাহাজের বাসিন্দাদের জন্য বছর জুড়ে সাগরে ভেসে বেড়ানো কষ্টের কিছু না।

ভিডিও : 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ মে ২০১৭/উজ্জল/সাইফুল