সাতসতেরো

রাধানন্দ জমিদার বাড়ি

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : হবিগঞ্জের ধুলিয়াখাল-মিরপুর সড়ক দিয়ে যেতে ফাঁড়ি পথে প্রবেশ করে একটু গেলেই চোখে পড়ে প্রাচীন এক আলীশান বাড়ি। বাড়িটির সামনে বড় পুকুর। একপাড়ে স্কুল, অপরপাড়ে চাষ হচ্ছে সবজি।  স্থানটির নাম ‘আব্দাবখাই’। এ বাড়িটিই  রাধানন্দ জমিদার বাড়ি । কেউ কেউ বলেন হাতিরথান জমিদার বাড়ি। দেশ স্বাধীনের পূর্বে জমিদার রাধানন্দ বাবু ছাড়াও তার ছেলে রাজেন্দ্র ও রবীন্দ্র বাড়িটিতে বসবাস করতেন। কয়েক শ বছর ধরে এ বাড়িতে জমিদাররা বসবাস করে আসছিলেন। বাবা রাধানন্দ’র পর রাজেন্দ্র ও রবীন্দ্র দক্ষতার সাথে জমিদারি পরিচালনা করেন। আব্দাবখাই, হাতিরথান, নোয়াবাদ, চাঁনপুর, আউশপাড়া, মশানজানসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রজারা এসে তাদের কাছে  জমিদারি খাজনা পরিশোধ করতেন। জমিদারি বিলুপ্ত হওয়ার পর এ বাড়ি ছেড়ে জমিদাররা চলে যান কলকাতায়। এরপর বাড়িটি পরিত্যক্ত থাকে। তবে বেশি দিন পরিত্যক্ত ছিলনা। একসময় স্থানীয় প্রভাবশালীরা বাড়িটিতে বসবাস শুরু করেন। জমিদারবিহীন জমিদারি ভাব নিয়ে বাড়িটি আজো কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় বাড়িটিতে জমিদারের কোনো বংশধর বসবাস করেন না। এ এলাকার বাসিন্দা জমিদারের ঘনিষ্ট হিসাবে পরিচিত শত বছর বয়সী আব্দুল লতিফ মিয়া জানান, রাধানন্দরা সফলতার সাথে জমিদারি পরিচালনা করে গেছেন। এখন তারা কেউ থাকেন না। সবাই চলে গেছেন কলকাতায়। তাদের দানকৃত ৫৮ শতক জমিতে একটি স্কুল স্থাপিত হয়। এ স্কুলের নামকরণ করা হয় রাধানন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় । তিনি আরো জানান, রাধানন্দ ছিলেন খুব ভাল একজন জমিদার। খাজনা আদায়ে প্রজাদের সাথে কোনো দিনই খারাপ আচরণ করেননি। প্রজারা তার শাসনে মুগ্ধ ছিলেন। পরে তার ছেলে রাজেন্দ্র ও রবীন্দ্র জমিদারি পরিচালনা করেন। তিনি জানান, এ বাড়িতে সে আমলে নানা ধরনের উৎসব হতো। দলে দলে লোকজন এসে এসব উৎসবে যোগদান করত। এখন তারাও নেই আর উৎসবও হয় না। রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/১৯ জুন ২০১৭/মামুন চৌধুরী/টিপু