সাতসতেরো

১৮ সাধারণ মানুষ যাদের বিয়ে হয়েছে রাজবংশে

এস এম গল্প ইকবাল : রূপকথার চরিত্র সিন্ডারেলা তার প্রিন্সকে দেখে নাচের অনুষ্ঠানে। সে তো প্রিন্সকে বারেও দেখতে পারত, তাই না? সিন্ডারেলা না দেখলেও মেরি এলিজাবেথ ডোনাল্ডসন ঠিকই তার প্রিন্সকে বারে দেখতে পায়। তিনি এখন ডেনমার্কের ক্রাউন প্রিন্সেস। এবার আসা যাক কেট মিডলটনের কথায়। ২০১১ সালে প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে তার বিবাহ বন্ধন লাখ লাখ মানুষকে বিমোহিত করে। তিনি হয়ে যান ডিউকের পত্নী। সাধারণ জীবন থেকে রাজপরিবারে বিয়ের মাধ্যমে রাজকীয় জীবনযাপনের অধিকারী হওয়া ১৮ সাধারণ ব্যক্তি নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ প্রথম পর্বে ৯ জনের সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।  

গ্রেস কেলি (প্রিন্সেস অব মোনাকো)

অভিনেত্রী হিসেবে গ্রেস কেলির ক্যারিয়ার শুরু হয় ১৯৫০ সালে। অস্কার বিজয়ী এই অভিনেত্রী ১৯৫৬ সালে ২৬ বছর বয়সে অভিনয়কে বিদায় জানান মোনাকোর প্রিন্স রেইনিয়ের থার্ডের সঙ্গে বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে। হলিউড তারকা থেকে তিনি হয়ে ওঠেন প্রিন্সেস অব মোনাকো। তাদের প্রথম দেখা হয় ১৯৫৫ সালে কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে একটি ফটোশুটে। এই দম্পতির সংসারে আসে তিন সন্তান। ১৯৮২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ব্যক্তিগত গাড়ি চালানোর সময় মোনাকোর রাজকুমারী গ্রেস কেলি মাইনর স্ট্রোক করেন এবং বাঁধের সঙ্গে সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন। ওই দিন রাতেই হাসপাতালে তিনি মারা যান।  

চার্লিন উইটস্টক (প্রিন্সেস অব মোনাকো)

চার্লিন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অলিম্পিক সাঁতারু। ২০০০ সালে মোনাকোতে এক সাঁতার প্রতিযোগিতার সময় প্রিন্স অব মোনাকো আলবার্ট সেকেন্ড (গ্রেস কেলির পুত্র) এর দেখা পান। এই জুটি ২০০৬ সালে উইন্টার অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে আসেন। তারা ২০১১ সালের জুলাইয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সাবেক সাতারু থেকে চার্লিন হয়ে উঠেন মোনাকোর রাজকুমারী। চার্লিন ২০১৪ সালে যমজ সন্তানের মা হয়েছেন।  

কেট মিডলটন (ডাচেস অব ক্যামব্রিজ)

কেট মিডলটন ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট জোসেফে পড়াকালীন ২০০১ সালে প্রিন্স উইলিয়ামের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়। অনেক বছর প্রেম করে তারা ২৯ এপ্রিল ২০১১-তে বিয়ে করেন। তাদের বিবাহ অনুষ্ঠান দেখার জন্য লাখ লাখ মানুষ টিভির সামনে বসেছিল। এই দম্পতির দুই সন্তান আছে: প্রিন্স জর্জ (জন্ম: জুলাই ২০১৩) ও প্রিন্সেস চার্লট (জন্ম: মে ২০১৫)।  

সিলভিয়া সোমারল্যান্ড (কুইন অব সুইডেন)

১৯৭২ সালে মিউনিখে সামার অলিম্পিকে অতিথিসেবিকা হিসেবে কর্মরত সময়ে প্রিন্স কার্ল গুস্তাফের (প্রিন্স অব সুইডেন) সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় সিলভিয়ার। ১৯৭৩ সালে দাদার মৃত্যুর পর প্রিন্স কার্ল গুস্তাফ সিংহাসনে বসেন। এই জুটি ১৯৭৬ সালে বিয়ে করেন। তাদের তিন সন্তান ও পাঁচ নাতি-নাতনি রয়েছে।  

ড্যানিয়েল ওয়েস্টলিং (প্রিন্স অব সুইডেন, ডিউক অব ভ্যাস্টারগটল্যান্ড)

ড্যানিয়েল ছিলেন ব্যায়ামাগারের মালিক ও প্রশিক্ষক। ২০০১ সালে এক ব্যায়াম প্রশিক্ষণ দেওয়ার সময় ক্রাউন প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। তিনি ২০০৬ সালে ব্যালেন্স নামে একটি ব্যায়ামাগার কোম্পানি শুরু করেন। ২০০৯ সালে তিনি এ কোম্পানির সিইও পদ থেকে পদত্যাগ করেন। জুন ২০১০-এ তারা বিয়ে করেন। তাদের দুই সন্তান আছে।  

সোফিয়া হেল্কভিস্ট (প্রিন্সেস অব সুইডেন, ডাচেস অব ভার্মল্যান্ড)

প্রিন্সেস হওয়ার আগে সোফিয়া ছিলেন মডেল ও টিভি রিয়েলিটি শো এর প্রতিযোগী। ২০১০ থেকে তিনি প্রিন্স কার্ল ফিলিপের (সিলভিয়ার পুত্র এবং ভিক্টোরিয়ার ভাই) সঙ্গে প্রেমে মাতেন। ২০১৫ এর জুনে তারা বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হন। এপ্রিল ২০১৬-তে তাদের প্রথম সন্তান প্রিন্স আলেকজান্ডার জন্ম নেয়। তারা সেপ্টেম্বর ২০১৭ এর মধ্যে আরেকটি সন্তান আশা করছেন।  

মিশিকো শোডা (এমপ্রেস অব জাপান)

মিশিকো ১৯৫৭ সালে টেনিস খেলার সময় তার ভবিষ্যত স্বামী ক্রাউন প্রিন্স আকিহিতোর দেখা পান। তাদের সম্পর্ক নিয়ে অনেক বিরোধিতা থাকা সত্ত্বেও তারা ১৯৫৯ সালে বিবাহ বন্ধনে জড়ান। তাদের তিন সন্তান রয়েছে।  

মাসাকো ওয়াদা (ক্রাউন প্রিন্সেস অব জাপান)

মাসাকো হার্ভার্ড থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক শেষ করেন। তিনি ১৯৮৬-তে জাপানে ফিরে আসেন ইউনিভার্সিটি অব টোকিওতে আইনে অধ্যয়নের জন্য। ওই বছরই ডাচেস অব লুগোর সম্মানার্থে দেওয়া চা উৎসবে ক্রাউন প্রিন্স নারুহিতোর (মিশিকো শোডার পুত্র) সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। প্রিন্স নারুহিতোর দুটি প্রস্তাবের পর তিনি রাজি হন। ১৯৯৩ সালে তারা বিয়ে করেন। ২০০১ সালে তাদের ঘরে এক কন্যা সন্তান জন্ম নেয়। প্রিন্স নারুহিদো সিংহাসনে আরোহণ করলে মাসাকো ওয়াদা সম্রাজ্ঞী হবেন।  

ম্যাক্সিমা জুরেগিটা (কুইন অব দ্য নেদারল্যান্ডস)

ম্যাক্সিমা অর্থনীতিতে ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি নিউ ইয়র্ক সিটিতে ডুশে ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন এবং ওখানে প্রিন্স আলেকজান্ডারের সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। তারা স্পেনে সেভিলা স্প্রিং ফেয়ারের সময় দেখা করে। প্রিন্স আলেকজান্ডার নিজেকে প্রিন্স বলে পরিচয় দেন। ম্যাক্সিমা এর আগে জানতেন না যে তিনি প্রিন্স। তারা ২০০২ সালে বিয়ে করেন। তারা তিন কন্যা সন্তানের পিতামাতা। ম্যাক্সিমা সাধারণ ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত যদিও তিনি ছিলেন পর্তুগালের রাজা এফনসো থার্ড এর বংশধর। তথ্যসূত্র : ইনসাইডার

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১০ জুলাই ২০১৭/ফিরোজ