সাতসতেরো

রাজরাণী সুভাষিণী স্কুল মানেই এক জমিদারির ইতিহাস

মো. মামুন চৌধুরী, হবিগঞ্জ : রাজরাণী সুভাষিণী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।স্কুলটি স্থাপিত হবিগঞ্জ জেলার কালিয়ারভাঙ্গা নামক স্থানে। কে এই রাজরাণী, যার নামে এই বালিকা বিদ্যালয়? কৌতুহলের সূত্র ধরে বেরিয়ে এল এক জমিদারের ইতিহাস। দুই জমিদার ভাইয়ের স্ত্রীর নাম এক হয়ে হয়েছে রাজরাণী সুভাষিণী।জমিদার ক্ষেত্রমোহন দাসের স্ত্রী সুভাষিণী ও জমিদার শ্রীনাথ দাসের স্ত্রী রাজরাণী । একসময় ক্ষেত্রমোহন ও শ্রীনাথ এখানেরই জমিদার ছিলেন। সেই স্মৃতিকে ধরে রাখতে এই জমিদারদেরই উত্তরসূরী কালিপ্রশন্ন দাস ১৯৯০ সালে ১৬৫ শতক জমিতে প্রতিষ্ঠা করেন এই স্কুল। হবিগঞ্জ শহর থেকে নবীগঞ্জ যাবার পথে কালিয়ারভাঙ্গায় এখন দাঁড়িয়ে আছে জমিদার পত্নীদের নামাঙ্কিত এই স্কুল। স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা কালিপ্রশন্ন দাস জানান, কালিয়ারভাঙ্গায় জমিদার বাড়ি ছিল। এখানে জমিদারী পরিচালনা করেন তার পিতা ক্ষেত্রমোহন দাস। তার হাতে শুরু হয়। প্রজা শাসনের এক সময় তার হাতেই জমিদারী ইতিহাস সমাপ্ত হয়। ক্ষেত্রমোহনের ভাই শ্রীনাথ দাসও জমিদারিতে অংশ নেন। নবীগঞ্জের বদরদী, পাইকপাড়া, নোয়াগাও, দিরাই উপজেলার মকসিদপুর এলাকায় এই জমিদারী ছিল। জমিদারী চলে গেলে তিনি এক সময় পরলোকগমণ করেন। শ্রীনাথ দাশের পরিবার স্বাধীনতার পূর্বে ভারতে চলে যায়। তারা সেখানেই বসবাস করছে। কালী প্রশন্ন দাশের আপন ভাই গৌর প্রশন্ন দাস চট্রগ্রামের পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।

জমিদার ক্ষেত্রমোহন দাসের পুত্র কালিপ্রশন্ন দাস ও স্কুলপ্রাঙ্গণে জমিদারদের মঠের স্মৃতি চিহ্ন

কালিপ্রশন্ন দাস স্মৃতির মায়ায় হবিগঞ্জ শহরের চিড়াকান্দিতে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। গ্রামের বাড়িতে কেন বসবাস করছেন না- জানতে চাওয়া হলে কালিপ্রশন্ন জানান, সেখানে তেমন কোনো স্থাপনা না থাকায়  তিনি হবিগঞ্জ শহরে বসবাস করছেন। জমিদারের স্মৃতিকে জাগ্রত রাখতে কালিপ্রশন্ন তার পরিবারের সহযোগীতায়  প্রতিষ্ঠা করেছেন এই স্বপ্নের স্কুল। স্কুলটিতে প্রায় হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে বলে জানালেন প্রধান শিক্ষক শাহ মোশাহিদ আলী । কালিপ্রশন্ন বলেন, ‘স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে হচ্ছে। এ স্কুল যতদিন থাকবে আমাদের কথা লোকজন স্মরণ করবে।’ কালিপ্রশন্ন দাস বলেন, ‘স্কুলের শিক্ষকরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। এতে ভাল রেজাল্ট আসছে। এটা দেখে খুব আনন্দ পাচ্ছি ।’ রাইজিংবিডি/হবিগঞ্জ/১৫ জুলাই ২০১৭/মামুন চৌধুরী/টিপু