সাতসতেরো

কালোমাথা বুলবুল

শামীম আলী চৌধুরী: কালোমাথা বুলবুল Pycononotidae পরিবারের বৃক্ষচারী পাখি। বিশ্বে প্রায় ৪০ প্রজাতির বুলবুল পাখি আছে। বাংলাদেশে ৯ প্রজাতির বুলবুল পাখির দেখা পাওয়া যায়। কালোমাথা বুলবুল হলদে-জলপাই রঙের ঝুটিহীন ১৮-২০ সে.মি. দৈর্ঘ্যের একটি পাখি। পূর্ণ বয়স্ক পাখির মাথা ও গলা কুচকুচে উজ্জ্বল কালো। ঘাড় অনেকটা জলপাই রঙের। লেজের শেষ ভাগে কালো দাগ আছে। ডানা গুটানো থাকলে ডানার দুই পাশেও কালো দাগ দেখা যায়। বুক, পেট ও লেজের নীচতলা হলুদ-ধূসর বর্ণের। ঠোঁট কালো, চোখ ফিকে নীল এবং পা হালকা খয়েরী রঙের। পুরুষ ও মেয়েপাখির চেহারা অভিন্ন। এরা সাধারণত চিরসবুজ বন ও বনপ্রান্ত এবং ঝোপে বিচরণ করে। প্রায় সময়ই জোড়ায় থাকতে পছন্দ করে। মাঝে মাঝে ছোট দল গঠনেও পারদর্শী। গাছের  এক ডাল থেকে অন্য ডালে লাফিয়ে চলে।  বৃক্ষতলের গুল্ম লতা ও ঝোঁপের ভিতর থেকে খাদ্য সংগ্রহ করতে অভ্যস্ত। এদের খাবার তালিকায় আছে পোকা ও রসালো ফল। মাঝে মাঝে গাছের চূড়ায় উঠে উড়তে দেখা যায়। উড়ন্ত পোকাও শিকার করে খাবার হিসেবে বেছে নেয়। এরা খাবারের জন্য যে জায়গা থেকে উড়ে শিকারের পর আবার সেই জায়গায় এসে বসে। খুব ভোরে ও সূর্যাস্তের সময় শিস দিয়ে গান গায়। এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত প্রজনন সময়। প্রজননের পর গাছের বিভক্ত ডালে কাঠি, ঘাস ও মরা পাতা দিয়ে বটির মতো করে বাসা বানায়। এরা নিজের বানানো বাসায় ডিম দেয়। এক সাথে ৩-৪টি ডিম পাড়ে। পুরুষ ও মেয়েপাখিকে পালাক্রমে ডিমে তা দিতে দেখা যায়। কালোমাথা বুলবুল আমাদের দেশে দুর্লভ আবাসিক পাখি। চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ বনে এদের দেখা যায়। এ ছাড়াও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ভারতের পূর্বাঞ্চল ও চীনের দক্ষিণাঞ্চলে এদের অবস্থান রয়েছে। বাংলা নাম: কালোমাথা বুলবুল ইংরেজী নাম: Black headed Bulbul বৈজ্ঞানিক নাম: Pycnonotus atriceps ছবি: লেখক রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ জুন ২০১৯/হাসনাত/তারা