সাতসতেরো

আজ হিরোশিমার সেই ভয়াল দিন

হাকিম মাহি : সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ। বিশ্বের একমাত্র সভ্য জীবও। তবে মানুষ যখন সভ্য হয়ে বসবাস করতে শেখে। তখন থেকেই মানুষে মানুষে, গোত্রে গোত্রে এমকি বর্ণে বর্ণে দ্বন্দ্ব দেখা যায়। বিশ্বে যুগে যুগে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যা মানবতাবোধ ও সভ্যতাকে কলঙ্কিত করেছে।

মানব ইতিহাসে ৬ আগস্ট তেমনই একটি দিন। ১৯৪৫ সালের এই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর জাপানের হিরোশিমা শহরের ওপর নিউক্লিয়ার বোমা ফেলে যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ প্রায় যখন শেষের দ্বারপ্রান্তে সে সময় ‘লিটয় বয়’ নামের ওই পারমাণবিক বোমায় নিমিষেই নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় প্রায় ১ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ। মাটির সঙ্গে মিশে যায় বেশিরভাগ স্থাপনা। তখন হিরোশিমার চেহারা এমন হয় যেন একটি মৃত্যুপুরী। পারমাণবিক বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় বছর শেষে মৃত্যু হয় আরও ৬০ হাজার মানুষের।

পরবর্তীতে এই বোমার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় সৃষ্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে সেখানে প্রায় ২ লাখ ৩৭ হাজার মানুষ হাসপাতালের বেডে, ঘরে-বাইরে এমকি পথে-প্রান্তরে অসহায় ভাবে মারা যান। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

আর হিরোশিমায় হামলার তিনদিন পরে জাপানের নাগাসাকিতে আবার ফ্যাটম্যান নামের নিউক্লিয়ার বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনী। এতে আরো প্রায় ২ লাখ ৯ হাজার সাধারণ মানুষ মারা যান। দুই শহরে ওই হামলার ঘটনায় পঙ্গুত্ব বরণ করেন অনেকেই।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপান আত্মসমর্পণ করে। আর আত্মসমর্পণের পেছনে এই বোমাবর্ষণের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হয় ১৯৪৫ সালের ২ সেপ্টেম্বর। তিনটি মহাদেশ ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকায় এ যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। সে সময়ের বিশ্বের সব পরাশক্তি এই যুদ্ধের অংশিদার হয়। এ সময় মিত্রশক্তি আর অক্ষশক্তি নামে দুটি বিপরীত সামরিক জোটের সৃষ্টি হয়। মিত্রপক্ষে ছিল ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও পোল্যান্ড। অক্ষ শক্তি ছিল জার্মানি, ইতালি ও জাপান।

ইতিহাসের সবচেয়ে বড় যুদ্ধ বলে ধরা হয় এই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে। এতে তিন মহাদেশের প্রায় ৩০ টি দেশ অংশ নেয় এবং প্রায় ১০ কোটির বেশি সামরিক সদস্য অংশগ্রহণ করে। হিটলার কর্তৃক ইহুদীদের ওপর চালানো গণহত্যা এবং মিত্রপক্ষের হিংস্র এ যুদ্ধে প্রায় ৫ কোটি থেকে সাড়ে ৮ কোটি মানুষ মৃত্যুবরণ করে।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৬ আগস্ট ২০১৯/হাকিম মাহি