সাতসতেরো

কুকুরপ্রেমে রতন টাটার ফোনে মিলল স্বপ্নের চাকরি

মুম্বাইয়ের শান্তনু নায়ডু প্রমাণ করেছেন, ভালোবাসা এবং সদয় আচরণ কীভাবে জীবনকে পরিবর্তন করতে পারে। পথের অসহায় কুকুরদের জন্য অনন্য একটি উদ্যোগ নেয়ায় ভারতের প্রভাবশালী শিল্পপতি রতন টাটা স্বয়ং শান্তনুকে ফোন করে তার সহকারী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। গত দেড় বছর টাটার এক্সিকিউটিভ পজিশনে অর্থাৎ সহকারী হিসেবে কাছ করছেন শান্তনু।

ফেসবুক পেজ ‘হিউম্যানস অব মুম্বাই’-এ এই তরুণ জানিয়েছেন কী করে এই স্বপ্নের চাকরি পেয়েছিলেন তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার এই গল্প এখন ভাইরাল। ২০১৪ সালে গ্রাজুয়েট শেষ করে টাটা গ্রুপে কর্মজীবন শুরু করেন শান্তনু। একদিন অফিস থেকে ফেরার পথে দেখতে পান রাস্তার মাঝখানে গাড়ি চাপায় একটি কুকুর মৃত পড়ে রয়েছে। বিষয়টি তাকে ভীষণ নাড়া দেয়। কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে এবিষয়ে আলোচনা করেন। এরপর কুকুরদের এ ধরনের মৃত্যু ঠেকাতে এমন একটি গলার বেল্ট তৈরি করেন, যাতে রিফ্লেক্টর রয়েছে। ফলে দূর থেকে গাড়ি চালকরা কুকুরটিকে দেখতে পায়। তার এই উদ্যোগ সেসময় টাটা গ্রুপ অব কোম্পানিজের সংবাদপত্র ‘নিউজলেটার’-এ প্রকাশিত হয়।

এরপরই শান্তনুর বাবা ছেলেকে পরামর্শ দেন, রতন টাটাকে চিঠি লিখতে। কেননা রতন টাটা নিজেও সারমেয়প্রেমী। প্রথমে দ্বিধায় থাকলেও পরে শান্তনু সাহস করে চিঠি লিখেন রতন টাটাকে। মাসদুয়েক পর রতন টাটা নিজে সেই চিঠির উত্তরে জানান, শান্তনুর সঙ্গে বৈঠকে বসতে চান। এরপর রতন টাটার অফিসে তার মুখোমুখি হন শান্তনু। সে সময় এই নতুন প্রজেক্টটির বাস্তবায়ন ঘটাতে শান্তনুকে আর্থিকভাবে ও নানা পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করে রতন টাটা। শুধু তাই নয়, শান্তনুর এই মহৎ কাজে তিনি খুব প্রভাবিত হয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন। রতন টাটা শান্তনুকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে পোষ্য কুকুরগুলোর সঙ্গেও দেখা করিয়ে দেন। 

এরপর শান্তনু নিউ ইয়র্কের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ ডিগ্রির জন্য বিদেশ পাড়ি জমান। ডিগ্রি নিয়ে গত বছর দেশে ফেরার পর স্বয়ং রতন টাটা শান্তনুকে ফোন করে তার সঙ্গে কাজ করার প্রস্তাব দেন। সঙ্গে সঙ্গেই স্বপ্নের এই চাকরি গ্রহণ করেন শান্তনু। তার এই গল্পই এখন ঘুরছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। ঢাকা/ফিরোজ/তারা